দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় ও নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় পৃথক ‘বন্দুকযুদ্ধের’ ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার (১৭ এপ্রিল) ভোররাতে পৃথক এই বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

রাজবাড়ী প্রতিনিধি জানান, সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ফেরিঘাট এলাকায় গোয়েন্দা শাখার পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' সাইদুল (৩২) নামের এক চরমপন্থি নেতা নিহত হয়েছেন। নিহত সাইদুল পাবনা জেলা সদরের আটঘাটিয়া গ্রামের তেনুর ছেলে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি)কামাল ভূঁইয়া গণমাধ্যমকে জানান, 'বন্দুকযুদ্ধ' চলাকালে আহত হয়েছেন রাজবাড়ী অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাকিব খান, জেলা গোয়েন্দা শাখার পুলিশ পরিদর্শক জিয়ারুল ইসলাম ও পুলিশ কনস্টেবল পঙ্কজ মণ্ডল। আহতদের রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, একদল চরমপন্থি রাজবাড়ী সদর উপজেলার চন্দনী ইউনিয়নের জৌকুড়া ফেরিঘাট এলাকায় অবস্থান করছে এমন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার ভোররাতে সেখানে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চরমপন্থিরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করলে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়।

একপর্যায়ে মারাত্মক আহত অবস্থায় সাইদুলকে উদ্ধার করে রাজবাড়ী সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাস্থল থেকে বেশ কয়েকটি আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার করা হয়েছে।

এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় পুলিশের হাতে আটকের একদিন পর খোকন সূত্রধর (৩০) নামে এক যুবক ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন।

মঙ্গলবার ভোররাত তিনটার দিকে উপজেলার বাইপাস রেলগেইট এলাকায় এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। পুলিশের দাবি খোকন তার সহযোগীদের গুলিতে মারা গেছেন। তিনি জেলার বিজয়নগর উপজেলার সিঙ্গারবিল গ্রামের রমেশ সূত্রধরের ছেলে।

এ ঘটনায় আখাউড়া থানা পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) নুরুল ইসলাম, কামাল হোসেন ও কনস্টেবল শামীম আহত হয়েছেন। তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি পিস্তল ও দুই রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করেছে পুলিশ।

আখাউড়ার থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) মোশাররফ হোসেন তরফদার গণমাধ্যমকে জানান, সোমবার দুপুরে একটি বেসরকারি কোম্পানির প্রতিনিধিকে ছুরিকাঘাত করে সাড়ে ১৮ লাখ ছিনতাই করে নিয়ে যাওয়ার সময় স্থানীয় জনতা খোকনকে ধরে পুলিশে সোপর্দ করে। পরে তার দেওয়া তথ্য মতে মঙ্গলবার ভোর রাতে তাকে নিয়ে অস্ত্র উদ্ধারে গেলে বাইপাস রেলগেইট এলাকায় তার সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি নিক্ষেপ করে।

এ সময় আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি চালায়। এ ঘটনায় সহযোগীদের গুলিতে আহত হন খোকন। পরে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এছাড়া নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ মাকসুদুল ইসলাম লিখন (৩০) নামের এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোর পৌনে ৫টায় ফতুল্লার পাগলা নিশ্চন্তপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের গণমাধ্যমকে জানান, মাদক ও সন্ত্রাস বিরোধী বিশেষ অভিযানের অংশ হিসেবে মঙ্গলবার ভোরে পাগলা নিশ্চন্তপুর এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। এ সময় উপস্থিতি টের পেয়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে ৫ থেকে ৬ জনের এক দল সন্ত্রাসী। আত্মরক্ষার্থে পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে। এতে লিখন গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাদেরকে ধরতে গেলে ধস্তাধস্তিতে উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. আব্দুর সাফিউল আলম, সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) তাজুল ইসলাম তারেক ও কনস্টেবল রোকনুজ্জামান ওরফে রোমান আহত হন। এ সময় লিখনের অন্য সঙ্গীরা পালিয়ে যায়।

ঘটনাস্থল থেকে একটি দেশি রিভলবার ও ২ রাউন্ড গুলিসহ ৪২০ পিছ ইয়াবা ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয় বলেও জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/এপ্রিল ১৭, ২০১৮)