দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ইতিহাসের সাক্ষী হওয়ার দিন বৃহস্পতিবার (১০ মে)। মাহেন্দ্রক্ষণের অপেক্ষায় পুরো দেশ। এদিন যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডার স্থানীয় সময় ৪টা ১২ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় রাত ২টা ১২ মিনিট থেকে ৪টা ২২ মিনিট) মহাকাশের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করবে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১। এর মাধ্যমে বিশ্বের ৫৭তম দেশ হিসেবে নিজস্ব স্যাটেলাইটের মালিক হবে বাংলাদেশ।

কেনেডি স্পেস সেন্টারের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো স্পেসএক্সের ফ্যালকন-৯ রকেটের ব্লক ৫ সংস্করণ বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট নিয়ে জিওস্টেশনারি ট্রান্সফার কক্ষপথের পথে ছুটবে।

৩ হাজার ৫০০ কেজি ওজনের জিওস্টেশনারি কমিউনিকেশন স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ কক্ষপথের দিকে ছুটবে কেনেডি স্পেস সেন্টারের ঐতিহাসিক লঞ্চ কমপ্লেক্স ৩৯-এ থেকে। এই লঞ্চ কমপ্লেক্স থেকেই ১৯৬৯ সালে চন্দ্রাভিযানে রওনা হয়েছিল অ্যাপোলো-১১।

কেনেডির স্পেস সেন্টারের ৩৯এ প্যাডে থেকে ৩.৯ মাইল (৬.৭ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত অ্যাপোলো বা সাটার্ন ভি সেন্টার থেকে দেখা যাবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের দৃশ্য। এছাড়া ৭.৫০ মাইল (১২ কিলোমিটার) দূরে অবস্থিত মেইন ভিজিটর কমপ্লেক্স থেকেও দেখা যাবে।

বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) দেশের প্রথম স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় সরাসরি সম্প্রচার করবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটকে মহাকাশে ১১৯ দশমিক ১ পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত কক্ষপথ প্লটে স্থাপন করা হবে। ফ্রান্সের কান টুলুজ ফ্যাসিলিটিতে নির্মিত বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ ফ্রান্স থেকে বিশেষ ব্যবস্থায় কার্গো বিমানে করে উৎক্ষেপণস্থল ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোর ক্যাপ ক্যানাভেরালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বিশ্বের অন্যতম খ্যাতনামা স্যাটেলাইট নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়া স্পেস স্যাটেলাইটটি নির্মাণ করেছে।

১৫ বছর মেয়াদী বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট কক্ষপথে স্থাপনের ফলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক উভয় ভাবেই লাভবান হবে।

বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সুবিধা পাওয়া যাবে:

নিজস্ব স্যাটেলাইট তাই মহাকাশ সম্পর্কে বেশি জ্ঞান লাভ করা সম্ভব হবে। মহাকাশ গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

বাণিজ্যিক ভাবে বেশি লাভ হবে। এই স্যাটেলাইটে ৪০টি ট্রান্সপন্ডার রয়েছে। যার মধ্যে ২০টি দেশের কাজে ব্যবহৃত হবে আর ২০টি ভাড়া দেওয়া হবে। স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলে প্রচুর পরিমান টাকা বাইরের দেশে চলে যায়, যার পরিমান ২ লাখ ডলার। আমরা বর্তমানে সিঙ্গাপুরের স্যাটেলাইট ব্যবহার করি। আমরা এই স্যাটেলাইট ভাড়া দি্লে ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা সম্ভব হবে। এতে করে দেশের টাকা দেশে থাকবে আবার বাইরের দেশ থেকেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা সম্ভব হবে।

আবহাওয়া সম্পর্কে আরো ভালোভাবে জানা যাবে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা যাবে।

মিলিটারিদের জন্য খুব সুবিধা হবে। কারণ তারা স্যাটেলাইট ফোন ব্যবহার করে। স্যাটেলাইট ফোন হল যে ফোনো ট্রেস করা যায় না। এটি কোনো তারের মাধ্যমে চলে না।

সমুদ্র, বন নিয়ে রিসার্চ করা যাবে অনায়াসে।

ইন্টারনেট সহজলভ্য হবে। এটি আরো অনেক স্মুথ হয়ে আসবে। কমিউনিকেশন ডেভেলপ না করতে পারলে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব হবে না।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ১০, ২০১৮)