দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল প্রত্যাখ্যান করে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) পদত্যাগ দাবি করেছে বিএনপি।

বুধবার (১৬ মে) বেলা ১২টার দিকে নয়াপল্টনে দলটির কেন্দ্রীয় কর্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী আহমেদ এ দাবি জানান।

রিজভী বলেন, ‘ভোট ডাকাতি, ভোট সন্ত্রাস, জাল ভোট, ভোট কেন্দ্র দখল, অবৈধ অস্ত্রের আস্ফালন ছাড়া আওয়ামী লীগের বিজয় নিশানে হাওয়া লাগে না। গতকালের ভোট নিরস্ত্র ভোটারদের ওপর অবৈধ সরকারের অবৈধ ক্ষমতা প্রদর্শন। আমি দলের পক্ষ থেকে গতকালের খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল প্রত্যাখান করছি এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনারের পদত্যাগ দাবি করছি। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশনের সদিচ্ছা নেই। তাদের সেই সামর্থ বা যোগ্যতাও নেই।’

রিজভী বলেন, “ভোট শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার লজ্জায় গণমাধ্যমের সামনে না আসলেও ইসি সচিব গণমাধ্যমকে বলেছেন খুলনায় চমৎকার ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে। উনি ঠিকই বলেছেন, উল্লিখিত ভোটের পরিবেশই হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা মার্কা’ নির্বাচন। যে নির্বাচনে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া ছেলে বাবার সঙ্গে ভোট দিতে পারে, কেন্দ্রে যাওয়ার আগেই ভোটারদের ভোট দেওয়া হয়ে যায়, পুলিশের সহায়তায় ভোটকেন্দ্র দখল করে ভোট ডাকাতির উৎসব চলে। কেন্দ্র দখল করে আধা ঘণ্টায় ১২শত ভোট দেওয়া হয়। ভোটকেন্দ্রের বাইরে মুখোশধারীরা বাছাই করে করে লোকজন কেন্দ্রে ঢুকিয়ে ভোট নেওয়ায়। কেন্দ্র দখল করে লাইন ধরে জালভোটের উৎসব চলে। সেরকম নির্বাচনকে তো চমৎকার বলবেনই নির্বাচন কমিশন।”

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন বলেছে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল ৬৫ শতাংশের ওপরে। মূলত সেখানে ভোটার উপস্থিতি ছিল ৩০ শতাংশেরও কম। সন্ত্রাসীদের বাধা ও সন্ত্রাসী হামলার মুখে খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটারদের অধিকাংশকেই কেন্দ্র থেকে ভোট দিতে না পেরে ফিরে যেতে হয়েছে।’

বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘গতকাল খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক নজীরবিহীন ভোট ডাকাতির দক্ষ যজ্ঞ জনগণ প্রত্যক্ষ করলো। সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোট দিতে গিয়ে ধানের শীষের ভোটার ও সমর্থকরা যেভাবে নিগৃহীত হয়েছেন তা কোনও সুস্থ নির্বাচন পদ্ধতিতে হতে পারে না। নৌকার প্রার্থীর লোকজনদের ছিল সীমাহীন আধিপত্য ও বেপরোয়া চলাফেরা। অনেক কেন্দ্রে প্রিসাইডিং অফিসাররা আওয়ামী ঝটিকা বাহিনীকে একচেটিয়া ভোট কাস্টিংয়ে সহায়তা করে। তারা কয়েক মিনিটের মধ্যে ব্যালট পেপারের বান্ডিলে সিল মেরে ব্যালট বাক্স ভর্তি করে। কোথাও কোথাও অবশ্য আওয়ামী সন্ত্রাসীরা প্রিসাইডিং অফিসার ও পোলিং অফিসারদের বল প্রয়োগ করে বের করে দেয় এবং মারধরও করে। পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেটরা এসব দেখেও না দেখার ভান করে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপাসনের উপেদষ্টা আব্দুস সালাম,ভাইস-চেয়ারম্যান ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন,সহ-দফতর সম্পাদক মুনির হোসেন,তাইফুল ইসলাম টিপু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ১৬, ২০১৮)