দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : আন্তর্জাতিক ফিস্টুলা দিবস বুধবার (২৩ মে)। দেশে অপারেশনজনিত বা সার্জিক্যাল আঘাতজনিত কারণে ফিস্টুলার আক্রান্তের হার বাড়ছে। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পরিচালিত জরিপের ফলাফলে দেখা যায় বর্তমানে ফিস্টুলার চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মধ্যে ১০ থেকে ৫০ ভাগই সার্জিক্যাল আঘাতজনিত। গড়ে প্রতিবছর অন্তত দুই হাজার নারী ফিস্টুলায় নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছেন। সে হিসাবে দিনে ৫ জনের বেশি নারী ফিস্টুলায় আক্রান্ত হন।

সংশ্লিষ্টদের মতে, সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে মায়ের জীবন বাঁচাতে কখনও কখনও সিজারিয়ান অপারেশন আবশ্যক। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায়, অপ্রয়োজনে সিজারিয়ান অপারেশন করা হয়ে থাকে। একইভাবে ক্ষেত্রে বিশেষ নারীর জীবনের সুরক্ষা ও সুস্থতায় জরায়ু অপসারণজনিত অপারেশন করতে হয়। কিন্তু অনেক নারী প্ররোচিত হয়ে অদক্ষ, অযোগ্যদের হাতে জারায়ুর অপারেশন করিয়ে থাকেন। এসব কারণেই অপারেশনজনিত ফিস্টুলার হার বাড়ছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরিপমতে, বিশ্বব্যাপী প্রতিবছর আনুমানিক পঞ্চাশ হাজার থেকে এক লাখ নারী এতে আক্রান্ত হচ্ছে। বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়া ও উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এর মাত্রা বেশি। সর্বশেষ পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, দেশে প্রসবজনিত ফিস্টুলা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৭১ হাজার। বাংলাদেশে প্রতিবছর অন্তত দুই হাজার নারী ফিস্টুলায় নতুন করে আক্রান্ত হচ্ছে। প্রতি হাজার বিবাহিত নারীর মধ্যে ১ দশমিক ৭ জন ফিস্টুলায় আক্রান্ত।

২০১৪ সালের এক জরিপ অনুযায়ী, ফিস্টুলায় আক্রান্তদের ৭৬ শতাংশই প্রসবজনিত এবং ২৪ শতাংশ সার্জিক্যাল বা আঘাতজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্ত। দেশে প্রতি এক হাজার বিবাহিত নারীর মধ্যে প্রায় ১ দশমিক ৬৯ জনই প্রসবকালীন ফিস্টুলায় আক্রান্ত। প্রসবকালীন ফিস্টুলায় নারীদের যোনিপথ, মূত্রনালি ও পায়ুপথের মধ্যে ক্ষত সৃষ্টি হয়। এতে করে প্রসবের রাস্তা দিয়ে সবসময় প্রস্রাব বা পায়খানা বা উভয়ই ঝরতে থাকে।

ফিস্টুলা কেয়ার প্লাস প্রকল্প এনজেন্ডার হেলথ বাংলাদেশের তথ্য মতে, দেশে প্রতি বছর গড়ে ৯শ’ থেকে ১১শ’ ফিস্টুলায় আক্রান্ত রোগীর সফল অপারেশন করা হচ্ছে। দেশে বর্তমানে ২০ জন অভিজ্ঞ ও দক্ষ ফিস্টুলা সার্জন রয়েছেন। তবে ফিস্টুলা চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি নির্দেশনা রয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, একজন ফিস্টুলা সার্জনকে বছর অন্তত ১২০টি সার্জারি করতে হবে। দেশের সরকারি ও বেসরকারি ১৭টি হাসপাতাল ও সেবা কেন্দ্রে বিনামূল্যে প্রসবজনিত ফিস্টুলায় আক্রান্তদের চিকিৎসাসেবা দেয়া হয়। তবে চট্টগ্রাম ও সিলেট অঞ্চলে এ চিকিৎসাসেবা খুবই অপ্রতুল। এছাড়া রয়েছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্স সংকট।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ২৩, ২০১৮)