তীর্থযাত্রা ...


একটা স্বপ্ন। গেরুয়া রঙের জামা। মিষ্টি হাসি। বুকপকেটে জড়িয়ে যাওয়ার মতো কোনো রেশমী সুতো নেই। তবুও কোথাও না কোথাও উচ্চস্বরে কেউ গান গাইছে। পাখি নয়।  গুটিপোকা। পর্যাপ্ত জলের অভাব। শুকনো ধানক্ষেত। তারপর খুব বৃষ্টি হলো। বন্যাও। তবে কেউ স্পর্শ রেখে গেলো না, ঠিক যেভাবে চন্দনবোতাম।

বহুদিন। তুমি শত্রু জেনেও অগ্রাহ্য করি মহুয়াচাঁদ। সমর্থন করার মতো লাল সুতো পেয়ে গেলে খুব কি ক্ষতি হতো তোমাদের? কে চেয়েছে এই অনশন? রাত্রিবেলা এক একটি জাহাজ ছেড়ে গেলে এই মানবজন্ম নিয়ে সন্দেহ জাগে। যে ঢেউগুলো পড়ে থাকে বালিশে সেসব স্বপ্ন নিয়ে শোকার্ত নয় কোনো ভোরবেলা। যা কিছু উজ্জ্বল পড়ে থাকে পৌরাণিক ভঙ্গিতে। গুল্ম-লতা-পাতা সৌজন্য সব ধোঁয়া হয়ে নামছে অধর বেয়ে।
বহুদিন এমন কাঁপিয়ে কোনো স্বপ্ন নামেনি চোখের পাতায়।


একদা, যোগাযোগ ছিলো শঙ্খের সাথে। কবির সঙ্গেও খানিক। নদীর মতো সাবলীল নয় সেসব প্রণয়কাঠি। যেভাবে এক মানুষ অপর মানুষের সঙ্গে কুশল বিনিময় করে ততটুকুও নয়। প্রবেশের দ্বার বন্ধ ছিলো বলেই কি দেয়াল তুলেছি শ্বেত পাথরের? আহা, সমর্থনের আশায় আজও মসলিন বৃষ্টি নামেনি এ অঞ্চলে।


আমাদের অযোগাযোগব্যবস্থার ওপর গড়ে উঠতে পারে ছোট কাঠের সেতু। সেখানে দাঁড়িয়ে একপক্ষ আরেক পক্ষকে নির্দ্বিধায় প্রশ্ন করতে পারি, এদেশ কোথায় চলছে? কেন এ বছর শীত নামেনি গাঢ় হয়ে? কিংবা আর একটু সামনে এগিয়ে গেলে এক কাপ চা। এর বেশি কিছু কি সম্ভব? একটা পাহাড় ডিঙানো, ব্যক্তিগত কিছু উচ্চারণ, গোপনচারিতা। তুমি যেখানে দাঁড়িয়ে সুর্যাস্ত দেখ সেই কোলাহলের অংশীদার আমি নই।


আমি নিতে জানি ঘৃণার উচ্চ রক্তচাপ। ভুলভ্রান্তি। এই যে আড়াল থেকে বের হয়ে আসছে আর্য রক্তের সাপ, মিশিয়ে দিচ্ছে পথ, ঝরাপাতা, বিষয়বুদ্ধি--- কেউ কেউ এভাবেও আশ্রয় খুঁজে নেয় পাথরে। আমি চিহ্নগুলি তুলে রাখি সিন্দুকে। এর বেশি কোন উৎসব নেই ঘুমের ভেতর।



ভেবেছিলাম, নিভে গেছে উনুন। দেহলতায় জড়ানো এইসব দিনরাত্রিকে কী করে ঠাঁই দেই স্বদেশভূমে? পরবাসী নয়। হে অগ্নি, সঙ্গে চল। কতকিছু রয়েছে পোড়াবার। কত বিদ্বেষ। কত পতঙ্গ জড়িয়ে আছে আঁচলে। আষাঢ় নামলে ধুয়ে যায় না শত্রুর ক্ষত কিংবা ক্ষতি। চল একসঙ্গে পোড়াই, যারা সমুদ্রে অবগাহন করেনি কোনো কালে।