দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ক্রোয়েশিয়া ২-১ গোলে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে পৌঁছে গেছে ফাইনালে। ১৯৯১ সালে যাদের আন্তর্জাতিক ফুটবলে আগমন তারা এবার ইংরেজদের স্বপ্ন খান খান করে দিল। একসময় ফুটবলের উৎপত্তি হয়েছিল যেখানে সেই তাদেরকেই কাঁদিয়ে ফ্রান্সের সামনে এখন ক্রোয়েটরা।

ম্যাচের পাঁচ মিনিটের মাথায় ত্রিপিয়ার গোলে ইংল্যান্ড এগিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধে ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান পেরিসিচ। জয়সূচক গোলটি করেন মারিও মানজুকিচ।

 

নির্ধারিত সময়ের খেলা ১-১ গোলে শেষ হলে অতিরিক্ত সময়ের খেলার প্রথম ১৫ মিনিটেও গোল আসেনি। মানজুকিচ গোল করেন ১০৯তম মিনিটে। ক্রোয়েশিয়ার প্রথম গোলদাতা পেরিসিচ বক্সের ভেতর তাকে বল দিলে রিসিভের অপেক্ষা না করেই বল জালে প্লেস করেন।

তিন মিনিটের সময় ক্রোয়েশিয়ার বক্সের একটু বাইরে ফ্রি-কিক পায় ইংল্যান্ড। ডেলে আলী বল নিয়ে ঢুকতে গেলে তাকে ফাউল করা হয়। শট নিতে আসেন কাইরান ত্রিপিয়ার। ডান পায়ের শটে সরাসরি বল জালে জড়িয়ে দেন।

রাশিয়া বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে দারুণ কিছু ফ্রি কিক দেখেছে ফুটবল বিশ্ব। ফ্রি কিক থেকে গোল করেছেন রোনালদো। আরও কিছু দারুণ গোল হয়েছে ফ্রি কিক থেকে। কিন্তু নকআউট পর্বে ফ্রি কিক থেকে আর গোল পায়নি কোন দল। শেষ সেমিফাইনালে সেই বাধা পেরুলেন ট্রিপার। চোখ ধাধানো এক গোল করলেন এই ইংলিশ ফুটবলার।

ত্রিপিয়ার যে জায়গা থেকে কিক নেন, এই সব জায়গায় কিক নিতে দক্ষ ছিলেন ডেভিড বেকহ্যাম। ত্রিপিয়ারের এই গোল আরেকটি জায়গায় বেকহ্যামের সঙ্গে সম্পর্কিত। ২০০৬ সালে ইকুয়েডরের বিপক্ষে সরাসরি ফ্রি-কিক থেকে গোলে করেছিলেন বেকহ্যাম। তারপর বিশ্বকাপে এই প্রথম কোনো ইংলিশ খেলোয়াড় ফ্রি-কিক থেকে সরাসরি গোল করলেন।

এক গোল দেয়ার পর দুইবার অফসাইডের কারণে হ্যারি কেনের দুটি সুযোগ নষ্ট হয়।

৩১তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার একটি সুযোগ মাটি করে দেন ইংলিশ গোলরক্ষক। ডান উইং থেকে বল নিয়ে ঢুকে গোলে জোরালো শট নেন অ্যান্টি রেবিচ। পিকফোর্ড সেটি ধরে ফেলেন।

দুই মিনিট বাদে ক্রোয়েশিয়ার আরেকটি সুযোগ নষ্ট হয়। ইভান পেরিসিচ দ্বিতীয় পোস্টে বিপজ্জনক ক্রস পাঠান। আগুয়ান রেবিচ আরেকটু আগে বলে যেতে পারলেই গোল হয়ে যায়। তার আগে ইয়ং কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন।

দ্বিতীয়ার্ধে ইংল্যান্ড অনুমিতভাবে সতর্ক ফুটবল খেলতে থাকে। রক্ষণে শক্তি বাড়িয়ে কাউন্টার অ্যাটাকে নজর দেয় দলটি। অন্যদিকে ক্রোয়েশিয়া ছোট ছোট পাসে খেলা গড়তে থাকে।

৬৫তম মিনিটে বক্সের ভেতর থেকে ক্রোয়েশিয়ার একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। পেরিসিচের জোরালো শট প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারের শরীরে লেগে ফিরে আসে।

৬৯তম মিনিটে ওই পেরিসিচ ক্রোয়েশিয়াকে সমতায় ফেরান। ডানদিক থেকে সিমে ভরসাল্জকো দারুণ একটি ক্রস পাঠান। গোললাইন থেকে কয়েক হাত দূরে ছিলেন পেরিসিচ। তার সামনে থেকে ইংলিশ ডিফেন্ডার কাইল ওয়াকার হেড করতে গেলে আগেই পা উঠিয়ে বল জালে পাঠিয়ে দেন তিনি। দুই মিনিট বাদে পেরিসিচের আরেকটি শট বারে লেগে ফিরে আসে।

৭৭তম ইংল্যান্ডের লিঙ্গার্ড একটি সুযোগ হাতছাড়া করেন। ডানদিক থেকে বক্সের ভেতর তাকে বল দেন হ্যারি কেন। লিঙ্গার্ড দ্বিতীয় পোস্টে বল প্লেস করতে গিয়ে বাইরে মারেন। শেষদিকে মানজুকিচের ওই গোলের পর আর ফেরা হয়নি তাদের।

১৯৯০ সালের পর এবার প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শেষ চারে পৌঁছায় ইংল্যান্ড। সেবার সেমি-ফাইনালে জার্মানির কাছে টাইব্রেকারে হেরেছিল তারা।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ১২,২০১৮)