দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নিরাপদ সড়কের দাবিতে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের মিশন প্রধানরা।

মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে তারা সব পক্ষকে শান্ত থেকে সংযম প্রদর্শনের পাশাপাশি শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ জানানোর অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘বিক্ষোভকারী, সাংবাদিক ও অন্যদের বিরুদ্ধে বেআইনি ও অসম সহিংসতার ঘটনা বন্ধ করতে হবে। এ রকম যেসব ঘটনা ঘটেছে, তার তদন্ত করে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।’

২৯ জুলাই বিমানবন্দর সড়কে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যু হলে ছাত্রছাত্রীরা বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। রাজধানী থেকে তাদের আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশে।

নয় দফা দাবিতে এই আন্দোলনের মধ্যে শিক্ষার্থীরা রাজপথে পুলিশের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে চালকের লাইসেন্স ও যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করা শুরু করে। সেখানে দেখা যায়, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য ও আইন প্রণেতারাও অনেক ক্ষেত্রে আইন মানছেন না।

টানা নয় দিন ধরে তাদের এই আন্দোলনের মধ্যে জিগাতলা এলাকায় আওয়ামী লীগ অফিসের কাছে ইউনিফরম পরা শিক্ষার্থীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে সেখানে হেলমেট পরা যুবকদের তৎপরতা দেখা যায়, যাদের হাতে ছিল রড, লাঠি, কিরিচের মত অস্ত্র।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি কর্তব্যরত সাংবাদিকদেরও ধরে ধরে পেটায় হেলমেট পরা ওই যুবকরা। ওই হামলার ঘটনায় সরকার সমর্থক ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ জড়িত বলে অভিযোগ উঠলেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়।

এদিকে শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা সড়ক পরিবহন আইন প্রণয়নের বিষয়টি গতি পায়। কিছু ক্ষেত্রে শাস্তির মাত্রা বাড়িয়ে সোমবার মন্ত্রিসভায় ওই আইনের খসড়ায় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়। পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে আরও কিছু পদক্ষেপ নেয় কর্তৃপক্ষ।

সরকারের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে ইইউ রাষ্ট্রদূতদের বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সরকার এ সমস্যার সমাধানে অন্যান্য ক্ষেত্রেও দ্রুত পদক্ষেপ নেবে বলে আমরা আশা করি।’

ঢাকায় ব্রিটিশ হাই কমিশনার অ্যালিসন ব্লেক, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত মিকেল হেমনিটি ভিনটার, স্পেনের রাষ্ট্রদূত আলভারো দে সালাস হিমেনে দি আসকারাতে, ফ্রান্স দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জ্যঁ-পিয়েরে পঁশে, ইটালি দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স জুজেপ্পে সেমেনসা, জার্মান দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স মিশায়েল শুলথাস, সুইডেন দূতাবাসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স আন্দের্স ওরস্ট্রম, নেদারল্যান্ডসের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স ইয়েরোন স্টেগস এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ডেলিগেশনের শার্জ ডি অ্যাফেয়ার্স কন্সটানটিনোস ভারডাকিস এই যৌথ বিবৃতিতে সই করেছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/আগস্ট ০৭, ২০১৮)