দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : কক্সবাজারে বসবাসরত প্রায় ২৪ হাজার রোহিঙ্গাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা ইউএনএইচসিআর। চলতি বর্ষা মৌসুমে কক্সবাজার এলাকায় কয়েক বছরের মধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে তাদের সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।

শুক্রবার (১০ আগস্ট) জেনেভায় অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র উইলিয়াম স্পিন্ডলার বলেন, গত ১১ মে থেকে এ পর্যন্ত আনুমানিক ৪৯ হাজার শরণার্থী বিরূপ আবহাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদের মধ্যে ২৫ হাজারের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রবল বাতাস ও ঝড়ে। ১৫ হাজারেরও বেশি ভূমিধসে, ৫ হাজার ৪০০ বন্যায়। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা ও অগ্নিকাণ্ডে তিন হাজারের বেশি রোহিঙ্গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

স্পিন্ডলার বলেন, প্রতিদিন দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে বেশকিছু প্রাণঘাতী ও অন্যান্য ঘটনা এড়ানো হয়। ইউএনএইচসিআর ও সহযোগীদের বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে চালিত প্রচেষ্টার সহায়তায় কাজ করছে। বিরূপ আবহাওয়াকবলিত হাজার হাজার রোহিঙ্গা পরিবারের সহায়তায় জরুরি ভিত্তিতে সংঘটিত সহায়তা টিম পাঠানো হচ্ছে।

ইউএনএইচসিআর মুখপাত্র বলেন, ‘কমিউনিটি আউটরিচ মেম্বার, সেফটি ইউনিট ভলান্টিয়ার ও কমিউনিটি স্বাস্থ্যকর্মীসহ কয়েকশ’ প্রশিক্ষিত রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবকদের সংগঠিত করা হয়েছে এবং সহায়তা দেয়া হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, গত কয়েক মাস ধরে এসব রোহিঙ্গা স্বেচ্ছাসেবককে যে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে তা গত কয়েক সপ্তাহে পুরোপুরি কাজে লাগানো হয়েছে। তারা বেশ সংগঠিত ও সমন্বিতভাবে নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করেছে। এর পাশাপাশি এই বিশাল শরণার্থী বসতির মানুষগুলো যাতে বিরূপ আবহাওয়া মোকাবেলা করতে পারে তার জন্য নিবিড় প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আর এই বিশাল বসতির কারণে খুবই বড় পরিসরে কাজ করতে হচ্ছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কুতুপালং রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবির প্রায় ১৩ কিলোমিটার জুড়ে বিস্তৃত। বর্তমানে এটিই বিশ্বে এ ধরনের সবচেয়ে বড় বসতি। এখানে ৬ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করছে।

ইউএনএইচসিআর জানায়, এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী নির্মিত কুতুপালং সাইটে প্রায় ৩২ কিলোমিটার রাস্তা, ৪৫ কিলোমিটার ধাপ, ৬৩ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল ও কাঠামো এবং ৯৪ কিলোমিটার ড্রেনের কাজ সম্পন্ন বা মেরামত করা হয়েছে। ২ হাজার ৩২৪ মিটার ব্রিজ করা হয়েছে। জরুরি ত্রাণ হিসেবে ১১৬টি স্টোরেজ কন্টেইনার স্থাপন করা হয়েছে এবং স্থানীয়দের ২০টি সামাজিক ভবন বা স্থাপনা উন্নয়ন করা হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/আগস্ট ১১, ২০১৮)