দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ইভিএম ব্যবহারের বিধান করে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন বিষয়ে অনুষ্ঠিত নির্বাচন কমিশনের বৈঠক বয়কট করেছেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। একইসঙ্গে তিনি আরপিও সংশোধনের এই সিদ্ধান্তে নোট অব ডিসেন্ট দিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টার দিকে বৈঠক শুরু হওয়ার পরই এ ঘটনা ঘটে।

ইভিএম ব্যবহারের আইনি বৈধতা দিতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধনের নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বৃহস্পতিবার। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী স্থানীয় সরকার নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের বিধান থাকলেও সংসদ নির্বাচনে তা ব্যবহারের বিধান নেই। ফলে আরপিও সংশোধনের উদ্যোগ নেয় কমিশন। এ নিয়ে আগেও একাধিকবার বৈঠক হয়েছে।

সূত্র জানায়, মাহবুব তালুকদার বৈঠক তার নোট অব ডিসেন্টে লিখেন, এই ইভিএম ব্যবহারের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করতে হবে। স্থানীয় নির্বাচনগুলোয় এরই মধ্যে ইভিএম ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে রাজনৈতিক দল ও ভোটারের কাছ থেকে মিশ্র প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে।

তিনি বলেন, এর আগে ৫০ কোটি টাকার ইভিএম ক্রয়ের নথিতে আমি ভিন্নমত পোষণ করেছিলাম। সম্প্রতি ইভিএমের জন্য যে প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে, তাতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা। কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের বিরোধিতার মুখে আগামী সংসদ নির্বাচনে ব্যবহার যেখানে অনিশ্চিত। সেখানে এ বিপুল পরিমাণ অর্থ ব্যয় করে ক্রয় করা কতটা যৌক্তিক।

সূত্র আরও জানায়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বড় পরিসরে ইভিএমে ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসি। বিএনপিসহ বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল আপত্তি করলেও ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা ব্যয়ে ইভিএম কেনার পরিকল্পনা করেছে ইসি। এ টাকায় দেড় লাখ ইউনিট ইভিএম কেনার পরিকল্পনা রয়েছে।

এর আগে ইসি সচিব হেলালুদ্দীন আহমদ বলেছেন, সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করার পরিকল্পনা রয়েছে। সেই লক্ষ্যে দেড় লাখ ইভিএম কেনার একটি প্রস্তাব মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। কমিশন অনুমোদন করলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

বৃহস্পতিবার বৈঠকে ইসি আরপিও সংশোধন অনুমোদন করে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা রয়েছে। মন্ত্রণালয়ে ভেটিং শেষে তা মন্ত্রীসভায় উঠবে। সেখানে পাস হলে তা সংসদ উত্থাপিত হবে এবং পাস করতে হবে। পরে তা কার্যকর হবে। তবে পাঁচ কমিশনারের তিনজন এ প্রকল্প সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে জানিয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন আরপিও সংশোধনের বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করে ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দিলেন বৃহস্পতিবার।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার সাংবাদিকদের বলেন, সংসদ নির্বাচনসহ বিভিন্ন নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে ৩ হাজার ৮২৯ কোটি টাকার নতুন যে প্রকল্প পাঠানো হয়েছে, সে বিষয়ে আমাকে কিছুই জানানো হয়নি। এ জন্য নোট অব ডিসেন্ট নিয়ে বৈঠক থেকে বের হয়ে এসেছি।

এর আগে নির্বাচন কমিশনার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, আমি ইভিএমের প্রকল্পর বিষয়ে কিছু জানি না। সচিব এবং প্রধান নির্বাচন কমিশনার জানেন। যখন এগুলো ব্যবহার করার জন্য কমিশন সভায় আলোচনা হবে, তখন বলবো। এর আগে বিষয়টি নিয়ে বলার কিছু নেই, আমি বলতেও চাই না।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/আগস্ট ৩০, ২০১৮)