দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দারিদ্রের হার ৪০ শতাংশ থেকে ২১ শতাংশে নামিয়ে আনাকে তার সরকারের বৃহৎ সাফল্য আখ্যায়িত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কাঙ্ক্ষিত উন্নয়ন অর্জন করতে হলে বাংলাদেশকে আরো অনেক দূর যেতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নের এধারাকে অব্যাহত রাখতে হবে এবং গ্রামীণ জনপদের ভাগ্যবঞ্চিত জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটাতে হবে।’

বৃহস্পতিবার গণভবন থেকে এলজিআরডি মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২০টি জেলার ৩৩টি উন্নয়ন প্রকল্পের একযোগে উদ্বোধনকালে একথা বলেন শেখ হাসিনা। তিনি এসময় ৫টি জেলার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত থেকে তাদের স্থানীয় জনগণের সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। খবর বাসসের

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের যে লক্ষ্য ছিল, দরিদ্র সীমাকে ২১ ভাগে নামিয়ে এনে আমরা দারিদ্র হ্রাসে সাফল্য অর্জন করেছি। বাংলাদেশের মানুষের আয় বৃদ্ধি পেয়েছে, আমরা সকলের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছি, সবদিক থেকে মানুষ যেন ভালভাবে বাঁচতে পারে তার ব্যবস্থা করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, দিন বদলের যাত্রা শুরু হয়েছে এবং তা এগিয়ে যাচ্ছে। ২৩ বছরের সংগ্রাম ও ৯ মানের মুক্তিযুদ্ধও বিজয়ের মাধ্যমে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন এবং সাড়ে ৩ বছরের মধ্যে তিনি একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ প্রদেশকে দেশ হিসেবে গড়ে তুলে দেশের উন্নয়নের যাত্রা শুরু করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতা বিরোধী চক্র যারা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মহান বিজয়কে মেনে নিতে পারেনি তাদের চক্রান্তে জাতির পিতাকে ’৭৫ এর ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় এবং বাঙালি জাতি তাদের জীবন মান উন্নত করার সকল সম্ভবনাকে হারিয়ে ফেলে। ২১ বছর পর ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ সবসময় চেষ্টা করেছে জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছিলেন সেই স্বপ্ন পূরণ করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলার মানুষকে একটি উন্নত জীবন দান করাই ছিল তাদের লক্ষ্য। যে লক্ষ্য বাস্তবায়নেই তার সরকার একের পর এক জনমুখী প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।

৩৩টি প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৭টি সেতু ও কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ জেটি, নারী ও শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৬ তলা বিশিষ্ট ৬টি নগর মাতৃসদন ভবন এবং ৩ তলা বিশিষ্ট ১০টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং ৯টি উপজেলা কমপ্লেক্স ভবন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে উন্নয়নের কাজগুলি আমরা সম্পন্ন করেছি সেগুলি রক্ষণারেক্ষণ করা এবং সঠিকভাবে যেস ব্যবহার হয় সেদিকে বিশেষভাবে আপনারা যত্নবান হবেন সেটাই আমি চাই।

এলজিআরডি এবং সমবায় মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দোকার মোশাররফ হোসেন এবং স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব ড. জাফর আহমেদ খান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন এবং মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ভিডিও কনফারেন্সটি সঞ্চালনা করেন।

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলায় টেকনাফ-মিয়ানমার ট্রানজিট ঘাটে ৫৫০ মিটার দীর্ঘ জেটি নির্মাণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে জেটি নির্মাণ হওয়ায় মানুষকে আর কাদা পানি মাড়িয়ে যেতে হবে না। সুন্দরভাবে জেটিতে নামতে পারবেন এবং ব্যবসা-বাণিজ্য পরিচালনা বা পর্যটকরাও যাতায়াত করতে পারবেন।

দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের প্রতি তার সরকারের দৃষ্টি রয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন, এখানেই তিনি প্রথমবারের মত তার আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ৭০টি পরিবারকে পুনর্বাসিত করেছিলেন।

৯টি উপজেলা কমপ্লেক্সের সম্প্রসারিত হল। সেগুলো হচ্ছে- নীলফামারি জেলার ডোমার, নওগাঁ জেলার আত্রাই ও রাণীনগর, নাটোর জেলার শিংড়া, সিরাজগঞ্জ জেলার তারাশ, যশোর জেলার শার্শা, মানিকগঞ্জ জেলার সাটুরিয়া, নোয়াখালী সদর উপজেলা এবং কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, তার সরকার নারী ও শিশুদের প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের লক্ষ্যে ৬ তলা বিশিষ্ট ৬টি নগর মাতৃসদন ভবন এবং ৩ তলা বিশিষ্ট ১০ নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তুলেছে।

যেগুলো হচ্ছে- গাজীপুর জেলা সদর একটি মাতৃসদন ও তিনতলা বিশিষ্ট নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কুষ্টিয়া জেলার পৌরসভা সদরে একটি ৬ তলা বিশিষ্ট মাতৃসদন ও তিনতলা বিশিষ্ট ২টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র, রংপুর সিটি কর্পোরেশন একটি ৬ তলা বিশিষ্ট নগর মাতৃসদন ও ৩ তলা বিশিষ্ট ২টি নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় ৩টি তিন তলা বিশিষ্ট নগর স্বাস্থ্যকেন্দ্র।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/অক্টোবর ১১, ২০১৮)