দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : বিশ্বের সবচেয়ে বড় ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট সর্বাধুনিক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (২৪ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢামেক সংলগ্ন চাঁনখারপুল এলাকায় ‘শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট’ উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

এর ফলে আগুনে পোড়াসহ বিভিন্নভাবে দগ্ধদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়েছে।

বার্ন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সেনাবাহিনীর সার্বিক তত্ত্বাবধানে দুই একর জমির উপর ৯১২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত বিশ্বের সর্ববৃহৎ অত্যাধুনিক এ বার্ন হাসপাতালটি উদ্বোধনের ফলে হাজার হাজার পোড়া রোগীর সুচিকিৎসার নবদিগন্ত উ্ন্মোচিত হলো। শুধু রোগীরা নন, তাদের পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে এ প্রতিষ্ঠান।

২০১৫ সালের ২৪ নভেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় এ ইনস্টিটিউট নির্মাণের অনুমোদন পায়। ২০১৬ সালের ৬ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চাঁনখারপুলে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ২৭ এপ্রিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোর নির্মাণ কাজ শুরু করে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ১৮তলা বিশিষ্ট এ ইনস্টিটিউটটির মাটির নিচে তিনতলা বেজমেন্ট। সেখানে গাড়ি পার্কিং ও রেডিওলজিসহ আরও কয়েকটি পরীক্ষা-নিরীক্ষার বিভাগ রাখা হচ্ছে। ইনস্টিটিউটটিতে ৫০০টি শয্যা, ৫০টি ইনসেনসিভ কেয়ার ইউনিট, ১২টি অপারেশন থিয়েটার ও অত্যাধুনিক পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ড থাকবে।

আকাশছোঁয়া এ ভবনটি তিনটি ব্লকে ভাগ করা হয়েছে। একদিকে থাকবে বার্ন ইউনিট, অন্যদিকে প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিট আর অন্য ব্লকটিতে করা হবে অ্যাকাডেমিক ভবন। দেশে প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি হাসপাতালে হেলিপ্যাড সুবিধা রাখা হচ্ছে।

১৯৮৬ সালে ছয়টি শয্যা নিয়ে দেশে প্রথম বার্ন ইউনিট চালু হয় ঢাকা মেডিকেলে। এটি ৫০ শয্যা করা হয় ১৯৯৬ সালে। আরও ৫০ শয্যা বাড়াতে সময় লাগে ২০০৩ সাল পর্যন্ত। ২০১৩ সালে সরকার ইউনিটটিকে ইনস্টিটিউট করে ৩০০ শয্যা করার উদ্যোগ নেয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ইউনিটের জনবল ১০০ শয্যার, ওষুধপথ্যের জোগানও ১০০ জনের হিসাবে। বাকিটুকু চলছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুদান নিয়ে।

একপর্যায়ে সরকারের নির্দেশনায় রাজধানীর মিটফোর্ড হাসপাতাল, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল, কুমিল্লা, সিলেট, চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ফরিদপুর, রাজশাহী, দিনাজপুর, বগুড়া ও ময়মনসিংহ হাসপাতালে বার্ন ইউনিট চালু হয়।

জন্মগত ঠোঁটকাটা-তালুকাটা, আঙুল জোড়া লাগানো, পায়ের ত্রুটি, ক্যান্সার, দুর্ঘটনা, ট্রমা, হাত-পা সার্জারি রোগীদের একটা বড় অংশ ঢামেক বার্ন ইউনিটে আসে। দেশে প্লাস্টিক সার্জন দরকার ন্যূনতম ৪০০ জনের মতো। কিন্তু বাংলাদেশে এখন প্লাস্টিক সার্জন রয়েছেন ৬৫ জন। ৫০০ শয্যার ইনস্টিটিউটটি উদ্বোধনের খবরে পোড়া রোগী ও তাদের অভিভাবকদের মনে আশা জেগেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/অক্টোবর ২৪, ২০১৮)