দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : সিলেট টেস্ট বাঁচাতে লড়ছে বাংলাদেশ। রেকর্ড গড়ে জিততে হবে স্বাগতিকদের। বাংলাদেশে এত রান (৩২১) তাড়া করে জেতেনি কোনো দল। দ্বিতীয় ইনিংসে জিম্বাবুয়ে অলআউট হওয়ার আগে করেছে ১৮১ রান। তৃতীয় দিনে বিনা উইকেটে ২৬ রান তোলার পর চতুর্থ দিনের ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম সেশনে ১১১ রান তুলতেই ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। দ্বিতীয় সেশনে ব্যাট করতে নেমে এই রিপোর্ট লেখা অবধি উইকেটে অপরাজিত আরিফুল হক (২৪) এবং নাজমুল ইসলাম অপু (০)।

এর আগে স্বল্প আলোর কারণে নির্ধারিত সময়ের আগে শেষ হয় তৃতীয় দিন। ৩২১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বিনা উইকেটে ২৬ রান তোলে স্বাগতিকরা। অপরাজিত থেকে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামেন লিটন দাস (১৪) এবং ইমরুল কায়েস (১২)। দু’জন মিলে চতুর্থ দিনের শুরুটা ভালভাবেই করেছিলেন। তবে দলীয় ৫৬ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ২৩ রানে এলবির শিকার হয়ে ফেরেন লিটন।

দ্বিতীয় উইকেটে ইমরুল কায়েসের সঙ্গী হন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক। তবে দলীয় ৬৭ রানে কাইল জার্ভিসের বলে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৯ রানে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান। এরপর ইমরুলের সঙ্গে ব্যাটিংয়ে যোগ দেন মাহমুদউল্লাহ। তবে সিকান্দার রাজার বলে দলীয় ৮৩ রানে বোল্ড হয়ে ব্যক্তিগত ৪৩ রানে ফেরেন ইমরুল।

এরপর নাজমুল হোসেন শান্তকে সঙ্গী করে এগুচ্ছিলেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তবে তবে দলীয় ১০২ রানে সিকান্দার রাজার বলে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৬ রানে ফেরেন বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক।

এরপর দলীয় ১১১ রানে ফেরেন নাজমুল হোসেন শান্ত। মাভুতার বলে সিকান্দার রাজার হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ১৩ রানে ফেরেন বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান (১১১/৫)। তাতেই বিপর্যয়ে পড়ে বাংলাদেশ।

দ্বিতীয় সেশনে আরিফুল হককে সঙ্গে করে এগুচ্ছিলেন মুশফিক। তবে দলীয় ১৩২ রানে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন মুশফিক। আউট হয়ে ফেরার আগে ১৩ রান করেন বাংলাদেশ দলের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান (১৩২/৬)। এরপর দলীয় ১৫০ রানে উইকেটরক্ষকের হাতে ক্যাচ দিয়ে ব্যক্তিগত ৭ রানেই ফিরে যান মেহেদী হাসান মিরাজ (১৫০/৭)। এরপর রান যোগ করার আগেই ওয়েলিংটন মাসাকাদজার বলে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান তাইজুল ইসলাম (১৫১/৮)।

এর আগে ১৩৯ রানের বিশাল লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে বিনা উইকেটে ১ রান নিয়ে দ্বিতীয় দিন শেষ করে জিম্বাবুয়ে। হাতে ১০ উইকেট রেখে ১৪০ রানের লিড নিয়ে তৃতীয় দিন আবারো ব্যাট শুরু করে হ্যামিলটন মাসাকাদজার দল। তবে তাইজুল ইসলামের স্পিন ঘূর্নিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ১৮১ রানেই গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে।

এই টেস্টে প্রথমবারের মতো ১০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি অর্জন করলেন বাংলাদেশি স্পিনার তাইজুল ইসলাম। প্রথম ইনিংসেই তাইজুল নিয়েছিলেন ৬ উইকেট। টেস্টে এর আগে এক ইনিংসে ৮ উইকেটও পেয়েছেন, কিন্তু ম্যাচে ১০ উইকেট পাওয়া হয়নি কখনো। এবার জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ছয় উইকেটের দ্বিতীয় ইনিংসে সোমবার (৫ নভেম্বর) তুলে নিয়েছেন ৫ উইকেট। এই টেস্টে সবমিলিয়ে ১৭০ রান দিয়ে ম্যাচে পেয়েছেন ১১ উইকেট। টেস্টে এটি বাংলাদেশের হয়ে তৃতীয় সেরা বোলিং।

এর আগে প্রথম ইনিংসে ২৮২ রান তুলে অলআউট হয় সফরকারী জিম্বাবুয়ে। বাংলাদেশ তাদের প্রথম ইনিংসে ১৪৩ রানে গুটিয়ে যায়। জয়ের জন্য স্বাগতিকদের সামনে টার্গেট ৩২১ রান। সাদা পোশাকে এতো বড় লক্ষ্য তাড়া করে জিততে পারেনি বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ২১৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জয় পেয়েছিল বাংলাদেশ। ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে বাংলাদেশের বিপক্ষে ৩১৭ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল নিউজিল্যান্ড।

এই ম্যাচের মধ্যদিয়ে টেস্টে অভিষেক হয় মিডলঅর্ডার ব্যাটসম্যান আরিফুল হক এবং স্পিনার নাজমুল ইসলাম অপুর। এদিকে, অভিষেক হয়েছে জিম্বাবুয়ের বেন্ডন মাভুতার।

সবশেষ আইসিসির প্রকাশিত র‌্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ ৯ নম্বরে আর জিম্বাবুয়ে ১০ নম্বরে, বাংলাদেশের রেটিং ৬৭ আর জিম্বাবুয়ের ২। এই সিরিজের আগে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ে খেলেছে ১৪টি টেস্ট ম্যাচ। যেখানে জয়ের পাল্লায় এগিয়ে জিম্বাবুয়ে, বাংলাদেশের বিপক্ষে জিতেছে ৬টি ম্যাচ। আর জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বাংলাদেশ জিতেছে ৫টি ম্যাচ। বাকি তিনটি ম্যাচ ড্র হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ০৬, ২০১৮)