দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী ৩ হাজার ৬৫ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ২৭৯ জন। বিপরীতে ৭৮৬ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বাতিল করা হয়েছে।

বৈধ প্রার্থীর মধ্যে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ১৬৫ জন, আর স্বতন্ত্র থেকে নির্বাচন করছেন এমন বৈধ প্রার্থী ১১৪ জন। নির্বাচন কমিশনের (ইসি) যুগ্ম সচিব ফরহাদ আহম্মেদ খান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ইসি সূত্র জানায়, এবার দেশের ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সবগুলোই আসন্ন সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছে। এসব দল থেকে ২ হাজার ৫৬৭ জন প্রার্থী অংশ নিলেও ৪০২জন প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিল হয়। ফলে বিভিন্ন দলের বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ১৬৫ জন। অন্যদিকে, স্বতন্ত্র থেকে ৪৯৮ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করলেও ৩৮৪ জন প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বাতিল হয়। ফলে স্বতন্ত্র থেকে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা দাঁড়ায় মাত্র ১১৪ জন।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২৬৪টি আসনে ২৮১ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকার বৈধ প্রার্থী ২৭৮ জন, বাতিল ৩ জন। বিএপির ২৯৫টি আসনে ধানের শীষে ৬৯৬ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যাা ৫৫৫ জন, বাতিল হয়েছে ১৪১ জন। জাতীয় পার্টি ২১০ আসনে ২৩৩ জন প্রার্থীর মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে বৈধ প্রার্থী ১৯৫ জন, বাতিল হয়েছে ৩৮ জন। চরমোনাই পীরের ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ- হাতপাখা প্রতীকে ২৯৯টি আসনে প্রার্থী দিলেও ২৮১ আসনে সমসংখ্যক প্রার্থী বৈধ, বাকি ১৮টি জনের মনোনয়ন বাতিল হয়েছে।

অন্যদিকে, বিভিন্ন নিবন্ধিত দলের বৈধ প্রার্থীর মধ্যে রয়েছে, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি (ছাতা) ১২ জন, বাতিল ৩ জন, জাতীয় পার্টি-জেপি (বাইসাইকেল)- ১৩ জন, বাতিল ৪ জন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল- (চাকা) ২ জন, বাতিল ১ জন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ (গামছা) ৩২ জন, বাতিল ৫ জন। বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি-সিপিবি (কাস্তে) ৬৯ জন, বাতিল ৮ জন, গণতন্ত্রী পার্টি (কবুতর) ৮ জন, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (কুঁড়ে ঘড়) ১১ জন, বাতিল ৩ জন। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (হাতুড়ি) ৩২ জন, বাতিল ১ জন, বিকল্পধারা বাংলাদেশ (কুলা) ২৪ জন, বাতিল ১৩ জন, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ (মশাল)- ৩৯ জন, বাতিল ১৪।

অন্যদিকে, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি (তারা) ৪৪ জন, বাতিল ৭ জন, জাকের পার্টি (গোলাপ ফুল) ৭৩ জন, বাতিল ৩৫ জন, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ (মই)-৪৩ জন, বাতিল ৬ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি (গরুর গাড়ি) ৬ জন, বাতিল ৫ জন, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন (ফুলের মালা) ২০ জন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন (বটগাছ) ২২ জন, বাতিল ৪ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ (হারিকেন) ৪০ জন, বাতিল ৯ জন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (আম) ৭৩ জন, বাতিল ১৭ জন।

এছাড়াও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ (খেঁজুর গাছ) ১৪ জন, বাতিল ১ জন, গণফোরাম (উদীয়মান সূর্য) ৪৪ জন, বাতিল ১৭ জন, গণফ্রন্টের (মাছ) ১৪ জন, বাতিল হয়েছে ২ জন, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দল-পিডিপি (বাঘ) ১৪টি, বাতিল ২টি; বাংলাদেশ ন্যাপ (গাভী)-৫ জন, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (কাঁঠাল)-১১ জন, বাতিল ২ জন; ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ (চেয়ার) ২৩ জন, বাতিল ৫ জন; বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি (হাতঘড়ি) ৫ জন, ইসলামী ঐক্যজোট (মিনার) ২৩ জন, বাতিল ৯ জন; বাংলাদেশ খেলাফত মজলিম (রিকশা) ৯ জন, বাতিল ৩ জন।

বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট (মোমবাতি) ২১ জন, বাতিল ১ জন; জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা (হুক্কা) ৪জন, বাতিল ২ জন; বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি (কোদাল) ২৭ জন, বাতিল ৩ জন। খেলাফত মজলিশ (দেয়ালঘড়ি) ১৩ জন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল (হাতপাঞ্জা) ৬ জন, বাতিল ১১ জন; বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (ছড়ি) ৩ জন ও বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ (টেলিভিশন) ৫৬ জন, বাতিল ১৫ জন।

এদিকে মনোনয়ন বাতিল হওয়া প্রার্থীদের ৩ ডিসেম্বর থেকে আপিল গ্রহণ শুরু হয়েছে, চলবে ৫ ডিসেম্বরের বুধবার পর্যন্ত। প্রথমদিন সোমবার ৮৪ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছেন। মঙ্গলবার ও বুধবার (৪ ও ৫ ডিসেম্বর) আপিল গ্রহণ করা হবে।

ইসি প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিলের অভিযোগ আমলে নিয়ে ৬, ৭ ও ৮ ডিসেম্বর শুনানি করে সিদ্ধান্ত দেবেন। এক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনই আপিল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা পালন করবেন। ৯ ডিসেম্বর প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন। ১০ ডিসেম্বর প্রতীক বরাদ্দ এবং ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ০৪, ২০১৮)