দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যেসব আসনে একাধিক প্রার্থী দেওয়া হয়েছিল এবং যেসব আসনে জোটের শরিকদের সুযোগ দেওয়া হচ্ছে সেসব আসনের চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া শুরু করেছে আওয়ামী লীগ।

শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এই চিঠি বিতরণ শুরু করেন।

জানা গেছে, রংপুর-৬ আসনে শিরীন শারমিন চৌধুরী, নড়াইল-১ আসনে বিএম কবিরুল হক, পটুয়াখালী-২ আসনে আ স ম ফিরোজ, টাঙ্গাইল-২ ছোট মনির, কিশোরগঞ্জ-১ আসনে সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, চাঁদপুর-১ আসনে ড. মহীউদ্দীন খান আলমগীর, চাঁদপুর-৪ আসনে মুহম্মদ শফিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে এ কে এম শাহজাহান কামালকে চূড়ান্ত মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে।

এর আগে বৃহস্পতিবার ওবায়দুল কাদের জানান, দল থেকে যারা মনোনয়ন পেয়েছেন শুক্রবারের মধ্যেই তারা চূড়ান্ত চিঠি পেয়ে যাবেন।

তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ অনেক দিন ধরে ক্ষমতায় আছে। দলের অনেক প্রার্থী, এর মধ্য থেকে যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার গত ৭ বছর ধরে সার্ভে রিপোর্ট এবং তা ৬ মাস পর পর হালনাগাদ করার জন্য দলের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করা সহজ হয়েছে। জরিপের ফলাফল মনোনয়নে মূল ভূমিকা পালন করেছে। প্রার্থী মনোনয়নে প্রার্থীর জনপ্রিয়তা ও জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্যতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। জরিপের বাইরেও বিভিন্নভাবে জনপ্রিয়তা ও গ্রহনযোগ্যতার বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।’

ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দলের এবং জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করা। আওয়ামী লীগ সভাপতি ও বঙ্গবন্ধুর কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সফলভাবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা শুধু আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের নয়, প্রতিপক্ষ বিএনপি ও অন্যান্য দলের প্রার্থীদেরও বিষয়েও জরিপ করেছি। আর এজন্যই আমরা শুধু আমাদের নয়, অন্যান্য দলের অবস্থান সম্পর্কেও আমরা জানতে পেরেছি। সব বিবেচনা করে দলের সংসদীয় বোর্ড দলীয় মনোনয়ন প্রদান করেছে।’

তিনি জানান, নির্বাচনকে সামনে রেখে যাদের মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে তাদের বেশির ভাগই রাজনীতিবিদ। ব্যবসায়ী মাত্র ১৬ থেকে ১৭ জন, ৩৭ থেকে ৩৮ জন মুক্তিযোদ্ধা এবং নতুন মুখ প্রায় ৫০ জন। যারা অতীতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতা ছিলেন।

এর আগে গত ২৫ নভেম্বর দলীয় মনোনয়নের চিঠি বিতরণ শুরু করে আওয়ামী লীগ। গত ৯ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে দলটি। ৩০০ আসনে ৪ হাজার ২৩ জন মনোনয়ন ফরম জমা দেন। ১২ নভেম্বর মনোনয়ন ফরম জমা নেওয়া শেষ হয়।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের ২৬৪টি আসনে ২৮১ জন প্রার্থীর মধ্যে নৌকার বৈধ প্রার্থী ২৭৮ জন, ৩ জনের আবেদন বাতিল হয়। বিএপির ২৯৫টি আসনে ধানের শীষে ৬৯৬ জন প্রার্থীর মধ্যে বৈধ প্রার্থীর সংখ্যা ৫৫৫ জন, বাতিল হয়েছে ১৪১ জনের মনোনয়নপত্র। ২১০ আসনে জাতীয় পার্টির ২৩৩ জন প্রার্থীর দাখিল করা মনোনয়নপত্রের মধ্যে লাঙ্গল প্রতীকে বৈধতা পেয়েছেন ১৯৫ জন, বাতিল হয়েছে ৩৮ জনের মনোনয়নপত্র।

৮ নভেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়। ওই তফসিল অনুযায়ী, ২৩ ডিসেম্বর ভোটের দিন নির্ধারিত হয়। পরে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আবেদনের ভিত্তিতে ২৩ ডিসেম্বরের পরিবর্তে এক সপ্তাহ পিছিয়ে ৩০ ডিসেম্বর ভোটের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। পুনঃতফসিল অনুযায়ী প্রার্থীর মনোনয়নপত্র জমার শেষ তারিখ ২৮ নভেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাই ২ ডিসেম্বর, মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ৯ ডিসেম্বর এবং ভোট গ্রহণ ৩০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/ডিসেম্বর ০৭, ২০১৮)