নাগরিক আলিঙ্গন

সেদিন ঘুম ভাঙা সকাল
চোখের জানালায় সে দাঁড়িয়ে ছিল
নৈশব্দের খালি পায়ে
হাত কাঁপা ছায়া ঠেলে অবসে দাঁড়ানো হেমন্ত কুয়াশা;
-আর রোমাঞ্চিত সংজ্ঞার দোতালা মন উড়ছিল
এক পা,দো-পা হাসির আলপিনে গাঁথা, দূরতম আলিঙ্গন।

গাছেদের বন্ধনী ভিড়,অশান্ত দৃষ্টির বৃত্ত রেখে
ঢেকে যাচ্ছিল অপেক্ষক প্রহর,সমুচ্চারণ ফুলের ঘ্রাণ
মাটির কপোতারি শেকড় ওড়া সবুজ সম্প্রচার
আঙুর ফলের মত টসটসে তাঁর কামরাঙ্গা ঠোঁট;
অস্থিমজ্জায় এক হাঁটু উঁচুনজর ফেলি
জানালার বৃদ্ধসিক,বাধাবিঘ্ন কার্টেইন খিল সরিয়ে
তারপর!পায়তারা পাতার ফাঁকে দেবীস্তন ফুল
স্নায়বিক ঠিকানায় নাগরিক প্রেমের নির্যাস ছড়ায়!

আদিখ্যেতার ঐশ্বর্য

এখানে পর্যায়ক্রমে ঘ্রাণ আসে
গহীন কেতাবের ভেতর থেকে-আদিখ্যেতার ঐশ্বর্য;
কবিতার কাছাকাছি।গদ্যের মত
সোনালি দিগন্তের পল্লবী,দোরখোলা আলোর পূর্বাশা;
নিরুত্তর দলবাঁধা পিঁপড়ার সারি-
বহুবছর আগে,বহুবছর পেছন ফেলে সম্মুখপান
অপহরণ করা বিন্দুসমষ্টি মগজের যোগফল :
............................................আমার শ্রেষ্ঠ কবিতা।

একটি পৃথিবী: আগামাথা সমান বিবরণ তাঁর
শব্দের কীটে ভরা শতফুলের বাগানবাড়ি,লাইব্রেরী
তারপর!নিঃসঙ্গ থেকে পরিবার-
সেখানে কেউ উচ্চৈঃবিলাসী-কেউ কবিতায় গৃহহারা-

সেদিন আশ্বিনে

ছনমনে আগুন উড়ে যাচ্ছিল
সেদিন আশ্বিনে,বিরাট খরা :

হাতের মুঠোতলে বাতাস চেপে ধরা উষ্ণকমল
মাটির উপর ফলে থাকা ফসলের গয়না
মাইলের পর মাইল-মৌমাছি-প্রজাপুঞ্জ,
আদিপর্ব,আধুনিক-অনাধুনিক;ঘাসের জামাগুলো
দুলছিল সুতোকাটা আকাশের উঠানে।পথের-
সরণি বেয়ে হেঁটে যাচ্ছিল সম্বন্ধ আঁকা একঝাঁক পাখি
দুপুর পাড়ার মেঘলা মেয়ে;দলেফেরা বৃষ্টি
তাঁত বোনা শাড়ির মত শাদা ঘন কাশবন
আগামীর খুশবো আতরে ওড়ে শরতের কাশফুল।

যতদূর গোধূলি

চোখের সম্মুখে প্রাচীর,উঁচু কালো পর্দার রাত্রি
মুখস্থ কথাগুলো একবারো
স্বেচ্ছায় প্রদীপশিখায় জ্বলে না-
মন খারাপ বন্ধু,সুযোগ পেলে
কব্জির করিডোরে পলাতক অতীত খুঁজি;
যতদূর গাঢ়তর গোধূলি-
গহীন সন্ধ্যে ঢাকা ধানগাছের সুনীল আকাশ
দীর্ঘ হেমন্তের পিতলা ঘাস
শীত-শীত কাঁচা শিশির পোহানো-
দেহের ভেতর হলুদ কমলা লেবুর গন্ধ,
যাদুকরী শব্দ চতুর্দিক।
বাইরে বুড়ো খাটাশ
রোম কুয়াশায় অবাধ্য বিচরণ তাঁর-
পোয়া রাত্রির চাঁদ-ভাঙা আলো,
চিৎ হওয়া পুরনো শুঁকনো পাতা
বিষাক্ত নখের আঙোশ থেকে ফের ডাকে আবডাল।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ডিসেম্বর ০৭,২০১৮)