দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে একাদশ জাতীয় সংসদের সদস্য হিসেবে শপথ নিয়েছেন গণফোরাম নেতা সুলতান মোহাম্মদ মনসুর।

বৃহস্পতিবার (৭ মার্চ) বেলা ১১টার পর সংসদ সচিবালয়ে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর কাছে শপথ নেন তিনি।

একই সময় গণফোরামের কেন্দ্রীয় নেতা মোকাব্বির খানের শপথ নেয়ার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি নেন নি।

৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তারা জয়ী হলেও জোটের সিদ্ধান্ত না থাকায় এতদিন শপথ নেননি। আজ দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে শপথ নিলেন সুলতান মনসুর।

জাতীয় সংসদের সিনিয়র সচিব ড. জাফর আহমেদ খান শপথ অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন। শপথ শেষে তার জন্য চা নাস্তার আয়োজন করে সংসদ সচিবালয়।

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন গণফোরামে নাম লিখিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ব্যানারে ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে মৌলভীবাজার-২ আসনে ভোট করে জয়ী হন সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ। আর দীর্ঘদিন ধরে লন্ডন প্রবাসী মোকাব্বির খান গণফোরামের দলীয় প্রতীক ‘উদীয়মান সূর্য’ নিয়ে সিলেট-২ আসন থেকে জয়ী হন। ওই আসনে ধানের শীষের প্রার্থী না থাকায় বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সমর্থন পেয়েছিলেন তিনি।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও গণফোরাম একাদশ নির্বাচনের ফল বর্জন করে শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড়। ধানের শীষ প্রতীকে নির্বাচিত অপর ৫ সদস্য শপথ না নিলেও একাদশ সংসদে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন সুলতান মনসুর ও মোকাব্বির।পরে অবশ্য শেষ মুহূর্তে সিদ্ধান্ত পাল্টান মোকাব্বির। দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে শপথ গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন।

মোকাব্বির শপথ না নিলেও শপথ নেয়ার সিদ্ধান্তে অনড় থাকেন সুলতান মনসুর। আজ তিনি শপথ নিয়েই নিলেন।

এদিকে সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমেদ শপথ নিলেই তার বিরুদ্ধে দলীয় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা দিয়ে রেখেছিল গণফোরাম। দলীয় সিদ্ধান্তের বিষয়টি স্পিকারকেও অবহিত করা হবে।

জানা গেছে, বুধবার বিকালে গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের মতিঝিলের চেম্বারে বৈঠক করেন গণফোরামের শীর্ষ নেতারা। এই বৈঠকে দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ শপথ নিলে তার বিরুদ্ধে দলীয় এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে বিষয়টি স্পিকারকে লিখিতভাবে অবহিত করার সিদ্ধান্ত হয়। দলের এই সিদ্ধান্তের পরপরই সুর বদলান মোকাব্বির খান। আপাতত শপথ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মোকাব্বির খান বুধবার গণমাধ্যমকে জানান, ‘আমি শুরু থেকেই দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে আসছি। দল শপথের বিষয়ে ইতিবাচক থাকায় আমি ৭ মার্চ শপথ নিতে চিঠি দিয়েছিলাম। এখন আমাদের দল গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা মহসিন মন্টুর নির্দেশে আমি শপথ নেয়া থেকে বিরত থাকছি’। তিনি আরও বলেন, ‘শপথ নেয়ার এখনও অনেক সময় বাকি আছে। পরে আবার বসে আমার শপথের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া যাবে’।

গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু বুধবার গণমাধ্যমকে জানা, ‘মোকাব্বির খান শপথ নিচ্ছেন না। দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কেউ শপথ নিলে আমরা অবশ্যই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব। দলীয় সিদ্ধান্ত এবং আইনগত সিদ্ধান্ত যা নেয়া দরকার, সেগুলো আমরা নেব’।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ০৭, ২০১৯)