দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন আগামী শনিবারের (১৬ মার্চ) মধ্যে বাতিলের দাবি জানিয়েছে নির্বাচন বর্জন করা পাঁচটি প্যানেল। পাশাপাশি পুনঃতফসিল ঘোষণার মাধ্যমে নতুন করে ভোটের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছে তারা।

বুধবার (১৩ মার্চ) দুপুর ২টার দিকে তারা উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামানের সঙ্গে দেখা করে এ দাবি জানান ভিপি নুরুল হক নুরের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দল।এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন ডাকসু নির্বাচন বর্জন করা ৫ টি প্যানেলের নেতারা। এসময় তারা ডাকসু নির্বাচন বাতিল ও পুনর্নির্বাচন দাবিতে উপাচার্যকে স্মারকলিপিও দেন।

এর আগে আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে এক বক্তৃতায় কোটা আন্দোলনের নেতা ও ডাকসুর ভিপি নুরুল হক নুর বলেন, ব্যাপক কারচুরির পরও ডাকসুর ২৫টি পদের মধ্যে দুটি পদে সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদকে হারাতে পারেনি ছাত্রলীগ। আপনাদের ভোটে আমি ভিপি নির্বাচিত হয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও ছাত্রলীগ মিলে আমার জয় আটকাতে পারেনি।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভোটে নির্বাচিত একজন প্রতিনিধি হিসেবে আমি বলছি, আমি সাধারণ শিক্ষার্থী ও নির্বাচন বর্জনকারীদের সঙ্গে একমত। আমি ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনঃনির্বাচন দাবি করছি।

এর আগে ডাকসু নির্বাচন বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবিতে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করে নির্বাচন বর্জন করা পাঁচ প্যানেল। পাঁচ প্যানেল হলো- ছাত্রদল, বামজোট, সাধারণ অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ, স্বতন্ত্র জোট।

বুধবার সকালে তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে যান। সেখানে গিয়ে অবস্থান ধর্মঘট কর্মসূচি পালন করেন। তিন দিনের মধ্যে পুনঃতফসিল দাবি করে স্মারকলিপি দেন তারা।

এ সময় তারা ডাকসু নির্বাচন বাতিল ও আবারও তফসিল ঘোষণার দাবিতে স্লোগান দেন।

এর আগে বুধবার সকাল থেকেই রাজু ভাস্কর্যে জড়ো হন আন্দোলনকারীরা। সেখানে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বামজোটের নেতা লিটন নন্দী বক্তৃতা করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করব। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন এলাকায় মিছিলটি প্রদক্ষিণ করে ভিসি কার্যালয় গিয়ে তার কাছে স্মারকলিপি দেব।

কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্লাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক ও এজিএস পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী ফারুক বলেন, আগামী শনিবারের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনকে বাতিল করতে হবে এবং তিন দিনের মধ্যে ডাকসু নির্বাচনের পুনঃতফসিল ঘোষণা করতে হবে। নির্বাচনের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে বাদ দিয়ে সৎ ও নিরপেক্ষ শিক্ষকদের নির্বাচনের দায়িত্ব দিতে হবে। দাবি না মানলে তারা রোববার থেকে ক্যাম্পাসে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আর পরিষদের আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ বলেন, ডাকসুতে ইতিহাসের কলঙ্কিত নির্বাচন হয়েছে। আমরা পুনরায় নির্বাচন চাই।

পরে তারা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের কার্যালয়ের দিকে যান। সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। পরে পাঁচ জোটের ১১ প্রতিনিধি পুনঃতফসিলের দাবিতে ভিসিকে স্মারকলিপি দিতে যান।

দীর্ঘ ২৮ বছর পর ১১ মার্চ অনুষ্ঠিত ডাকসু নির্বাচনে ২৫টি পদের মধ্যে দুটি ছাড়া সব পদে জয় পায় ছাত্রলীগ। ভোটের দিনই নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ তুলে ভোট বর্জন করে ছাত্রলীগ ছাড়া সব প্যানেল। এরা হলো- ছাত্রদল, বামজোট, ইসলামী আন্দোলন, স্বতন্ত্র প্রার্থীদের জোট ও সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ। এর পর থেকে তারা পুনর্নির্বাচন দাবিতে বিক্ষোভ করছে।

কর্মসূচিতে অংশ নেন লিটন নন্দী, উম্মে হাবিবা বেনজীর, অরণি সেমন্তি খানসহ শতাধিক শিক্ষার্থী।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মার্চ ১৩, ২০১৯)