মফিজুলইসলাম

পবিত্র রমজান মাস মহান আল্লাহর এক অফুরন্ত নিয়ামত। রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, রমজান মাস আসলে আসমানের (রহমতের) দরজা সমুহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমুহ বন্ধ করে দেয়া হয়, আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করা হয়। (বুখারীশরীফ )অর্থাৎ এমাসে শয়তানকে আটকে রাখা হয়। এ জন্য শয়তান কর্তৃক মন্দকাজ করতে মানুষ যেমন উৎসাহ পায় না, তেমনি ভাল কাজ করতে বাঁধাপ্রাপ্ত হয় না। দাওয়াতের মাধ্যমে মানুষের সৎ পথের সন্ধান পাওয়া এবং ঈমান ও আমলের ত্রুটি দূর করতে, এ এক বিরাট সুযোগ।

আমাদের সমাজের অনেক মুসলিম আছেন, যাঁরা পর্যাপ্ত শিক্ষা পাওয়ার অভাবে ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান রাখেন না। বিশেষ করে নামাজের নিয়ম-কানুন, দোয়া ও কোরআনের সুরা ঠিক মতো জানেন না। এ ছাড়া তাঁরা সারা বছর নিয়মিত নামাজ পড়েন না, সেজন্য জানা বিষয় ও ভুলে যান। আবার লজ্জা পাওয়ার জন্য কাউকে বলতে পারেন না বা স্বীকার করেন না, যে তিনি জানেন না। এ শ্রেণীর মুসলিম সারা বছর পাঁচওয়াক্ত নামাজ না পড়লেও রমজান মাসে রোজা রাখেন এবং পাঁচওয়াক্ত নামাজ পড়ার চেষ্টা করেন। এঁরা যখন একা একা নামাজ পড়েন তখন তাঁদের দিকে খেয়াল করলে সহজেই বোঝা যায়, নামাজ সম্পর্কে অজ্ঞতা।

আমাদের আসে পাশে দৃষ্টি দিলে দেখতে পাই এ ধরণের মুসলিম রয়েছে। এঁদেরকে আপনি বুঝিয়ে বলুন, তাঁরা যেন তাঁদের না জানা ইসলামী বিধান, বিশেষ করে নামাজের নিয়ম-কানুন ও দোয়া জেনে নেন। এ ব্যাপারে মসজিদের ইমাম ও মুয়াজ্জিন সাহেবদের সাহায্য নিতে পারেন। জোহর বা আসর কিংবা যেকোন নামাজের পর এইসব ভাইদের নিয়ে মসজিদে বসে শেখানো যেতে পারে। জুমার খুতবায় বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে, এর গুরুত্ব বুঝিয়ে, এ শ্রেণীর মুসলিমদের কিভাবে স্বল্প সময়ে প্রয়োজনীয় বিষয়ে শিক্ষা দেওয়া যায়; সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া যেতে পারে।

রাসূলুল্লাহ (সা:) বলেছেন, “আমার পক্ষ থেকে যদি একটা আয়াতও যদি তোমরা জানো, তা অন্যদের কাছে পৌঁছে দাও”। পবিত্র রমজান মাসে আমরা অনেক সহজে এই দাওয়াতের কাজ করতে পারি। এ মাসে আমরা আমাদের ঈমান-আমল সম্পর্কে জানা বিষয়গুলো যাচাই করে ভুল ত্রুটি সংশোধন করতে পারি এবং আরো বেশি করে জানারচেষ্টা করতে পারি। সাথে সাথে যাঁরা নিজ থেকে শিখতে চান না, তাদেরকে শেখানোর মাধ্যমে দাওয়াতের কাজ করতে পারি। মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তাওফিক দান করুন, আমিন।

লেখক: প্রাবন্ধিক ও ব্যাংকার

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/ মে ১৮,২০১৯)