দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ফ্লাইট অপারেশনের ন্যূনতম কোনো কাজে না আসলেও বিভিন্ন আউট স্টেশনে অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে বসে আছেন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক জনবল।

তারপরও ঠিকই বাড়ি ভাড়া, গাড়ি ও উচ্চ বেতন-ভাতা পেয়ে যাচ্ছেন তারা। ফলে তাদের পেছনে প্রতি বছর অযথা লাখ লাখ টাকা গচ্চা যাচ্ছে বিমানের। খোদ অপারেশন শাখার পাইলটদের মতে, তাদের পেছনে লাখ লাখ ডলার ব্যয় করা হলেও কোনো কাজ করছেন না তারা। বিমানের টাকায় সপরিবারে বিদেশে বসবাস করছেন তারা। সংখ্যায় এরা ডজনখানেক হবে বলে জানা গেছে।

বিমানের একজন সিনিয়র পাইলট নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এই অপ্রয়োজনীয় ও আত্মঘাতী কাজটি ২০১০ সালে চালু করে গেছেন কয়েক দিনের জন্য বিমানের ভারপ্রাপ্ত এমডি হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত ক্যাপ্টেন নাসের। তার আমলে প্রথমে তিনটি স্টেশনে তিনজনকে অপারেশন ম্যানেজার হিসেবে পাঠানো হয়। স্টেশনগুলো ছিল রিয়াদ, কুয়ালালামপুর ও দিল্লি। এরপর আস্তে আস্তে মধ্যপ্রাচ্যসহ লন্ডন পর্যন্ত পাঠানো হয় কথিত ‘ম্যানেজার অপারেশন’।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট অপারেশন শাখা সূত্রে জানা যায়, পাইলটদের কাছে ‘জিপিসন ম্যানুয়াল’ নামে একটি পরিচিত প্রক্রিয়া আছে। এই প্রক্রিয়ায় এক গন্তব্য থেকে অন্য গন্তব্যে যাবার সময় একটি রুট ম্যাপ ব্যবহার ও সরবরাহ করা হয়। এটি অপারেশন ম্যানেজারের কাছে পাঠানো হয়। তবে বিমানের আরেক সিনিয়র পাইলট বললেন, ‘এ কাজ করার জন্য অপারেশন ম্যানেজারের দরকার আছে বলে আমি মনে করি না।’

তিনি জানান, তাদের বিমানের পক্ষ থেকে অতি উন্নত নোটপ্যাড দেয়া হয়েছে যাতে বিশেষায়িত কিছু অ্যাপস ইন্সটল করা থাকে। ওই নোটপ্যাডের কারণে বিশ্ব থাকে পাইটদের হাতের মুঠোয়। এমতাবস্থায় এমন এক ডিজিটাল যুগে বিমানের ব্যয় বাড়িয়ে বিদেশে অপারেশন ম্যানেজারদের বসিয়ে রাখা নিতান্তই বোকামি ছাড়া কিছু না।

আলাপচারিতায় জানা যায়, অধিকাংশ পাইলট অপারেশন ম্যানেজারদের বিদেশ থেকে ফেরত এনে পদটি বিলুপ্তির পক্ষে।

তারপরও কেন তাদের ঢাকায় নিয়ে আসা হচ্ছে না? এটি কি ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার অন্তরায় নয়- এমন প্রশ্নের উত্তর জানতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট অপারেশন পরিচালক ডিএফও ক্যাপ্টেন ফারহাত হাসান জামিলকে একাধিকবার ফোন দেয়া হলেও তিনি ধরেননি।

এসব জনবলকে কী কারণে দীর্ঘ নয় বছর আউট স্টেশনে বসিয়ে রেখে বিমানের লাখ লাখ ডলার অপচয় করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মন্ত্রণালয় কোনো ব্যবস্থা নেবে কিনা জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মহিবুল হক বলেন, ‘আমরা বিষয়টির খোঁজখবর নেব। যদি এমনটি হয় তবে আমরা ব্যবস্থা নিতে বলব।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ২৩, ২০১৯)