বরগুনা প্রতিনিধি: বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার বাদী ও তার বাবা দুলাল শরীফ ক্ষমতাবান ও বিত্তবানদের প্ররোচনায় প্রভাবিত হচ্ছেন বলে মন্তব্য করেছেন পুত্রবধূ ও এ মামলার প্রধান সাক্ষী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি।

রোববার দুপুরে বরগুনা পৌরসভার মাইঠা এলাকার বাবার বাসায় আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি।

লিখিত বক্তব্যে মিন্নি বলেন, বর্তমানে আমার শ্বশুর অসুস্থ এবং তিনি তার একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে আরও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি যখন যা বলেন তা কোনো কিছুই পরে মনে থাকে না। আসামিরা বিচারকে অন্যদিকে প্রভাবিত করার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্নভাবে আমাকে হয়রানির চেষ্টা করেছে। তারা আমার ছবি এডিট করে নয়ন বন্ডের সঙ্গে যুক্ত করে পোস্ট করেছে। ০০৭ নামের ম্যাসেঞ্জার গ্রুপটি যারা সৃষ্টি করেছে তারা খুবই ক্ষমতাবান এবং বিত্তবান। তারা এ বিচারের আওতা থেকে দূরে থাকার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ সৃষ্টি করে রিফাত হত্যার বিচারকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য আমার শ্বশুরকে সংবাদ সম্মেলন করাতে বাধ্য করেছেন। শনিবার রাতে সংবাদ সম্মেলনে আমার শ্বশুর আপনাদের কাছে আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তা সম্পূর্ণ মনগড়া ও বানোয়াট।

মিন্নি আরও বলেন, গত ২৬ জুলাই প্রকাশ্য দিবালোকে আমার স্বামীকে কুপিয়ে হত্যার পর থেকেই আমার স্বামীর হত্যার বিচারের দাবিতে সারাদেশে মানববন্ধনসহ নানামুখী কর্মসূচি হয়। ওই হত্যাকাণ্ডের ভিডিও প্রকাশিত হলে আমার স্বামীকে বাঁচানোর জন্য আমি যে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অস্ত্রের মুখে প্রতিবাদ করেছি, সেই ভিডিও দেখে দেশের মানুষ আমার সাহসের প্রশংসা করেছে। কিন্তু প্রভাবশালী ও বিত্তবানদের অব্যাহত চাপ এবং প্ররোচনায় আমার সাহসের স্বীকৃতি না দিয়ে উল্টো আমাকেই ওই হত্যা মামলায় গ্রেফতারের জন্য সংবাদ সম্মেলন এবং মানববন্ধন করা হচ্ছে। কিন্তু মামলার এজাহারে আমার নাম নেই এবং আমি ওই মামলার এক নম্বর সাক্ষী।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মিন্নি বলেন, ‘আমি আমার স্বামী রিফাত শরীফতে ছাড়া কখনও একা একা কলেজে যেতাম না। হত্যাকাণ্ডের দিন সকালেও আমি আমার স্বামীর সঙ্গে কলেজে যাই। কৌশলে আমার স্বামী আমাকে নিয়ে ঘুরতে বের হওয়ার কথা বলে কলেজ থেকে বাইরে নিয়ে আসে। কিন্তু আমি কলেজ থেকে বের হয়ে বুঝতে পেরে আমার স্বামীর সঙ্গে ঘুরতে না গিয়ে কলেজে কাজ শেষ না হওয়ায় আমি কলেজের ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করি। এসময় আমার স্বামী আমার গতিরোধ করতে চাইলেও আমি তা উপেক্ষা করে কলেজে প্রবেশ করি। এরপরই হামলাকারীরা আমার স্বামীকে মারতে মারতে কলেজ থেকে বাইরে নিয়ে যায়। এরপর তাকে কুপিয়ে যখম করে।’

মিন্নিকে নিয়ে রিফাত হত্যা মামলার প্রধান অভিযুক্ত বন্দুকযুদ্ধে নিহত নয়ন বন্ডের মায়ের বক্তব্য সম্পর্কে মিন্নি বলেন, নয়ন বন্ডের মা শাহিদা বেগম আমাকে মামলায় ফাঁসানোর জন্য মিথ্যাচার করছেন। তার বক্তব্য সম্পূর্ণ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।

রিফাত হত্যাকাণ্ডে সম্পৃক্ততার অভিযোগে মিন্নির গ্রেফতারের দাবি প্রসঙ্গে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেন, মিন্নির গ্রেফতারের দাবি সময়ই বলে দেবে। আমরা এ মামলার ন্যায়বিচারের স্বার্থে এবং তদন্তের স্বার্থে যা যা করা দরকার সবই করবো।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ১,২০১৯)