বাগেরহাট প্রতিনিধি:  বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলায় ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট উদ্যোক্তাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। ব্রডব্যান্ড নেটওয়ার্ক সম্প্রসারের উন্নয়ন ঠেকাতে তার ওপর হামলা করা হয় বলে অভিযোগ করেন আহতের স্বজনরা। আহত যুবকের নাম হাসিবুর রহমান হাসিব (২৭)।

গত রোববার বিকালে উপজেলার বাখরগঞ্জ বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

হাসিবুর রহমান একই এলাকার অধ্যক্ষ চিতলমারী পুলিশিং কমিটির সভাপতি ও উপজেলা ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির আহ্বায়ক মহসীন রেজার ছেলে। তার মা হেলেনা পারভীন মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও মহিলা পরিষদ সভানেত্রী। হাসিবুর পেশায় আইনজীবীও।

জানা যায়, আধুনিক উদ্যোক্তা হিসেবে নিজের উপজেলাসহ বাগেরহাট সদরের পরেই যেসব এলাকা এখনো ইন্টারনেট নেটওয়ার্কের বাইরে, সেসব এলাকা নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে ব্রডব্যান্ড ব্যবসা হাতে নেন হাসিবুর।

চিতলমারীর বাখরগঞ্জ এলাকায় একটি গ্রুপ সনাতন পদ্ধতিতে ডিশ ক্যাবলের ব্যবসা করতে। ইন্টারনেট ক্যাবল আসলে তাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে, এমন আশঙ্কায় কয়েক দিন আগে এলাকার ওই গ্রুপের সুমন, সুজন হাওলাদার ও সাথীসহ ১০-১২ জন হাসিবুরকে হুমকি দেয়। এ সময় তারা বিশাল অঙ্কের চাঁদাও দাবি করেন।

চাঁদা দিতে অস্বীকার করে ব্যবসা কার্যক্রম অব্যাহত রাখেন হাসিবুর। এতে ক্ষীপ্ত হয়ে তারা গত রোববার বিকালে বাখরগঞ্জ বাজারে কানেকশনের কাজ চলাকালীন হাসিবুর রহমান ও তার সহকর্মী অশক মণ্ডলের ওপর হামলা চালায়। এতে সহকর্মী পালিয়ে গেলেও হাসিবুর রহমানকে সন্ত্রাসীরা রড দিয়ে পেটায় এবং রামদা দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।

এ সময় তার সঙ্গে থাকা নগদ ২৮ হাজার টাকা, গলার একটি সোনার চেইন ও তিনটি মোবাইল নিয়ে সটকে পড়েন তারা।

হাসিবুরের মা চিতলমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী হেলেনা বেগমের অভিযোগ, সন্ত্রাসীরা হামলার সময় হাসিব যখন বাখরগঞ্জ বাজারে লোকজনের কাছে চিৎকার করে সাহায্যের আকুতি করেন, কেউ এগিয়ে আসেনি; বরং খুনিরা আবার তাকে ধরে পিটায়। একসময় মারা গেছে ভেবে রাস্তায় ফেলে রেখে চলে যায়।

পরে কয়েকজন পথচারী তাকে চিনতে পেরে উদ্ধার করে চিতলমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায় এবং পরিবারকে সংবাদ দেয়। হাসিবুরের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

সদর থানার ওসি মাহতাব উদ্দিন জানান, এ ঘটনায় রোববার রাতে থানার সুমন গ্রুপ নামে খ্যাত সুমন, সুজন হাওলাদার, সাথী এবং অজ্ঞাতনামা তার গ্রুপের আরও কয়েকজনের বিরুদ্ধে বাগেরহাট সদর থানায় মামলা করেন হাসিবুরের মা।

ওসি জানান, ভিকটিম চিতলমারী এলাকার হলেও বাখরগঞ্জের ম্যাপ অনুযায়ী উপজেলাটি বাগেরহাট সদরের সীমানায় পড়ে। এ ছাড়া বাগেরহাট সদরের ভোটার হাসিবুর। তাই বাগেরহাট থানায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ১,২০১৯)