দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেধরা ও মাথাকাটার গুজব ছড়ানো কুচক্রী মহলের বড় ষড়যন্ত্রের অংশ বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম।

ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে সোমবার (২২ জুলাই) আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তিনি।

মাহবুব আলম বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেধরা গুজবকে ভিত্তি করে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্যাতন ও খুনের ঘটনা ঘটেছে। গুজব ছড়িয়ে এমন অপকর্মের নেপথ্যে একটি চক্র কাজ করতে পারে। তাদের বড় একটি ষড়যন্ত্রের অংশ এ ছেলেধরা গুজব। তারা গুজব রটিয়ে বিশেষ ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করছে।’

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিকে খারাপ করার জন্য এ অপচেষ্টা বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

কুচক্রী মহলকে রুখে দিতে পুলিশ সজাগ রয়েছে উল্লেখ করে ডিবির এ যুগ্ম কমিশনার বলেন, ‘সারাদেশে গুজব রটনা ও অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে পুলিশ কাজ করছে। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে তাদের গ্রেফতারও করা হচ্ছে।’

ছেলেধরা গুজবে রাজধানীর উত্তর বাড্ডায় এক নারীকে পিটিয়ে হত্যার বিষয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মাহবুব আলম বলেন, ‘উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা গুজবে নারীকে হত্যার ঘটনায় এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঘটনার ভিডিও ফুটেজ আমরা পেয়েছি। ভিডিও ফুটেজটি বিশ্লেষণ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে আমাদের তদন্ত চলমান।’

শনিবার (২০ জুলাই) সকালে উত্তর বাড্ডায় ছেলেধরা সন্দেহে তসলিমা বেগম রেনু নামে এক নারীকে পিটিয়ে আহত করে বিক্ষুব্ধ জনতা। গুরুতর আহতাবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

ঢামেক হাসপাতালে গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন তসলিমার ভাগিনা নাসির উদ্দিন ও বোন রেহানা।

তারা জানান, তসলিমা বেগমের ১১ বছরের ছেলে ও চার বছর বয়সী মেয়ে রয়েছে। আড়াই বছর আগে তসলিম উদ্দিনের সঙ্গে তার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। এরপর থেকে ছেলেমেয়েকে নিয়ে মহাখালী ওয়ারলেস এলাকায় একটি বাড়িতে থাকতেন তিনি।

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘খালা (তসলিমা) মানসিক রোগে ভুগছিলেন। চার বছর বয়সী মেয়েকে স্কুলে ভর্তি করানোর জন্য তিনি এক স্কুল থেকে আরেক স্কুলে ঘুরছিলেন। এ কারণেই হয়তো তিনি বাড্ডার ওই স্কুলে যান।’

এ ঘটনায় শনিবার বাড্ডা থানায় অজ্ঞাত ৪০০ থেকে ৫০০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন নাসির উদ্দিন। মামলায় বলা হয়েছে, অতর্কিতভাবে ওই নারীকে স্কুলের অভিভাবক, উৎসুক জনতাসহ অনেকে গণপিটুনি দেয়। এতে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে আনুমানিক ৪০০ থেকে ৫০০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তি জড়িত।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২২,২০১৯)