দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীতে এডিস মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গু ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। কয়েক মাস ধরে আলোচনা হলেও ঢাকার দুই সিটি কর্পোরেশন ও সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলো এখন পর্যন্ত সফলতা দেখাতে পারেনি। এ রকম পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের মনে আতঙ্ক এবং ভুক্তভোগীদের মাঝে ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আর্থিকভাবেও ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল গেলে এ প্রতিবেদকের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ও তাদের আত্মীয়-স্বজনেরা। তাদের একজন রাজধানীর মালিবাগ থেকে আসা মো. সানাউল্লাহ। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ষাটোর্ধ্ব এই ব্যক্তি মনে করেন, ‘সরকার ডেঙ্গুর ব্যাপক বিস্তার রোধে ব্যর্থ হয়েছে।’

সানাউল্লাহ বলেন, ‘সরকার এত কিছুতে সফলতা দেখাচ্ছে, অথচ মশার কাছে ব্যর্থ হয়ে গেল।’ গত পাঁচ দিন ধরে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এ হাসপাতালে ভর্তি আছেন সানাউল্লাহ। এই পাঁচদিনে তার চিকিৎসা খরচ ২৫ হাজার ছাড়িয়েছে বলে জানান তিনি।

সানাউল্লাহর দাবি, সরকারের উচিত, হাসপাতালগুলো ঘুরে ঘুরে দেখা। সেই সঙ্গে ভুক্তভোগীদের ভর্তুকি দেয়া। বেসরকারি এই মেডিকেল কলেজটিতে চলতি বছরের ১ মে থেকে মঙ্গলবার (২৩ জুলাই) দুপুর ১২টা পর্যন্ত মোট ৫৮৫ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছেন। বেসরকারি হাসপাতাল হওয়ায় রোগীদের টাকা-পয়সা খরচ বেশি।

ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনে আতিকুল ইসলাম এবং দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে সাঈদ খোকন মেয়র হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এই দুই মেয়রই ডেঙ্গু প্রতিরোধে ব্যর্থ বলেও মনে করেন ভুক্তভোগী সানাউল্লাহ। কয়েকদিন আগে দেখলাম ঢাকার এক মেয়র বলছেন, মানবদেহের ক্ষতি নয়, মশা মারার এমন ভালো ওষুধ আনার চেষ্টা করতেছি। চেষ্টা করতে করতে মশার আগে আমরাই শেষ।’

পাশেই বসেছিলেন সানাউল্লাহর সন্তান মো. মামুন। তিনি বলেন, ‘সরকারের পক্ষ থেকে মশা নিধনের তেমন কোনো পদক্ষেপ নেই।’ মামুনের এ বক্তব্য শুনে পাশ থেকে সায় দেন ডেঙ্গু আক্রান্ত অন্তর খানের মা জেসমিন খানম। তিনি বলেন, ‘ঠিকই কইছেন, কোনো পদক্ষেপ নেই।’

রাজধানীর ইস্কাটন গার্ডেন এলাকা থেকে এ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া আবির হোসেনের বাবা আনোয়ার হোসেন মনে করেন, ডেঙ্গু রোধে সরকারের পাশাপাশি নগরবাসীরও সচেতন হওয়া প্রয়োজন। ‘সিটি কর্পোরেশনকে ঠিকমতো কাজ করতে হবে। সেই সঙ্গে আমাদেরও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। চারপাশ অপরিষ্কার রাখলে চলবে না।’

কেউ কেউ একাধিকবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে এই হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এমন একজন ইমন সরকার বলে জানান জাহিদ নামে এক ব্যক্তি।

তিনি হাসপাতালেই আরেক রোগীর সঙ্গে ছিলেন। কথার একপর্যায়ে দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকনের সমালোচনা করেন।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জুলাই ২,২০১৯)