দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কোরবানির ঈদে ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়ার আশঙ্কা করছেন গবেষক, চিকিৎসকেরা। বর্ষাকাল, ৯ দিনের ঈদের ছুটি, সব মিলিয়ে পরিবেশ ডেঙ্গু বৃদ্ধির পক্ষেই যাচ্ছে। ঈদের ছুটিতে কী করলে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার বিস্তার রোধ করা যায়, তা জানিয়েছেন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মুহাম্মদ রাশেদুল ইসলাম।

রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমরা সবাই জানি, ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বিস্তার করে একটি মশার মাধ্যমে যার নাম এডিস ইজেপ্টাইল। ডেঙ্গু রোগের যদি বিস্তার রোধ করতে চাই, সেক্ষেত্রে এই মশার বিস্তার রোধ করতে হবে। ডেঙ্গু মশার জীবনচক্রে চারটি ধাপ আছে, এগ, লার্ভা, পিউপা ও অ্যাডাল্ট। চারটির মধ্যে প্রথম তিনটি তারা পানিতে সম্পন্ন করে থাকে। ফলে পরিত্যক্ত পাত্রে যেন পানি জমে না থাকে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।

ঈদের ছুটিটা এবার লম্বা। এই ছুটতে তাই লক্ষ্য রাখতে হবে যেন এডিস মশা জন্মাতে না পারে। এক্ষেত্রে ব্যবস্থাপনা তিন পর্যায়ে হতে পারে। যারা বাড়ি খালি রেখে গ্রামে যাবেন, তারা কীভাবে বাড়ি রেখে যাবেন। যারা ঢাকাতে থাকবেন এবং কোরবানি দিবেন তারা কীভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করবেন এবং পরিবহন ব্যবস্থাপনা এমন হতে হবে যেন ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গু ছড়িয়ে না পড়ে।

আমরা যখন শহর ত্যাগ করব, তখন এটা নিশ্চিত করে যেতে হবে, যেন বাড়িতে কোনো পাত্রে পানি না জমে থাকে। একান্ত যদি পানি ধরে রাখতে হয় তবে তা শক্ত কোনো ঢাকনা অথবা মশার জাল দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে যেন পানিতে মশা বসে ডিম পাড়তে না পারে। এছাড়াও যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে সেগুলোর বিষয়ে সতর্কতা থাকতে হবে।

যারা শহরে থাকবেন এবং কোরবানি করবেন তাদের লক্ষ্য রাখতে হবে কোরবানির পশুর বর্জ্য বা রক্তে যেন পানি চলাচল আটকে না পরে অথবা কোথাও পানি জমে না থাকে। কোরবানির সময় এমনিতেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ঠিকমতো না হওয়ায় পোকামাকড় রোগবালাই বৃদ্ধি পায়। নগরবাসী নিজ উদ্যোগে এই বিষয়গুলো সমাধান করতে পারলে মশার উপদ্রব অনেকখানিই প্রশমিত হবে।

যেকোনো অসুখ মানুষের মাধ্যমে এক অঞ্চল থেকে অন্য এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে। যেহেতু ঈদের মধ্যে কয়েক লাখ মানুষ নিজ নিজ জেলায় যাবে, তার সঙ্গে এবং পরিবহণের মাধ্যমেও ডেঙ্গু অন্যান্য জেলায় ছড়িয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে পরিবহণ কর্তৃপক্ষকে ভূমিকা পালন করতে হবে। প্রতিবার যাত্রী নামার পরে এবং নতুন যাত্রী উঠার আগে পরিবহণে কীটনাশক স্প্রে করতে হবে।

সবাই মিলে চেষ্টা করলে ঈদের ছুটিতে ডেঙ্গুর প্রকোপ বৃদ্ধি অনেকটাই প্রশমিত করা যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ০৮, ২০১৯)