দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরকে দ্বিখণ্ডিত করে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখ নামে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গঠন করার সিদ্ধান্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকর হবে আগামী ৩১ অক্টোবর।

দিনটি সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মদিন হওয়ায় একে বেছে নিয়েছে মোদি সরকার। এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় চলমান ১৪৪ ধারা আংশিকভাবে উঠিয়ে নেয়া হয়েছে। রাজ্যজুড়ে বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ ও হতাহতের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বিলোপ ও দুই ভাগ করার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারতের সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছে কাশ্মীরের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহর দল ন্যাশনাল কনফারেন্স (এনসি)।

আগামী ৩১ অক্টোবর ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা বল্লভভাই প্যাটেলের ১৪৪তম জন্মবার্ষিকী। ওই দিনই কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে জম্মু-কাশ্মীর ও লাদাখের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হবে বলে শনিবার জানিয়েছে এনডিটিভি। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হওয়ার পর আপাতত দুই জায়গায় দুজন লেফটেন্যান্ট গভর্নর কেন্দ্র সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবেন। জম্মু-কাশ্মীরে আইনসভা থাকবে, লাদাখে থাকবে না।

দুই অঞ্চলের মানবসম্পদ বিভাজনের জন্য একটি কমিটি গঠন করতে যাচ্ছে মোদি সরকার। এর মধ্যে থাকবেন পুলিশ সদস্য ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা। এক সরকারি কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেন, ‘ক্যাডারদের (আধিকারিক) বণ্টনে বড় ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

বেশিরভাগ কর্মকর্তারাই চাচ্ছেন জম্মু-কাশ্মীরে থাকতে। কয়েকজন ক্যাডার লাদাখকে বেছেছেন।’ দুর্গমতার কারণেই মূলত তারা লাদাখে যেতে চাইছেন না। তিনি বলেন, বদলির সিদ্ধান্ত নেবেন লেফটেন্যান্ট গভর্নর।

এদিকে টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, শনিবার জম্মুর পাঁচ জেলায় কারফিউ প্রত্যাহার করা হয়েছে। এগুলো হল- জম্মু, কাঠুয়া, সাম্বা, উধমপুর ও রেইসি। সকাল থেকেই স্কুল-কলেজের পাশাপাশি খুলেছে বাজার। তবে সরকারি দফতরগুলোতে উপস্থিতির হার তুলনামূলক কম।

এছাড়া ডোডা ও কিস্তওয়ারে নিয়ন্ত্রণ কিছুটা শিথিল করা হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের জেলা উন্নয়ন কমিশনার আংরেজ সিং রানা বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় শুক্রবার থেকে পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নিয়ন্ত্রণ শিথিল করা হচ্ছে।

বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন এলাকায় বিক্ষিপ্তভাবে বিক্ষোভ হচ্ছে। গত তিন দিনে নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনীর ছোড়া ছররা বুলেটের আঘাত নিয়ে অন্তত ৪০ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।

সেখানকার ফোন, ইন্টারনেট সেবা আংশিক খুললেও এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ওই অঞ্চলের ১৭৪টি পত্রিকার মধ্যে মাত্র পাঁচটির প্রিন্ট ছোট আকারে বেরুচ্ছে। সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রেও সেন্সরশিপ রয়েছে। এ অবস্থায় কাশ্মীরজুড়ে ভারতবিরোধী বিক্ষোভ জোরালো হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার রাতে জম্মুর ১০ জেলায় কারফিউ জারি করা হয়। এদিকে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা অবলুপ্তি ও রাজ্যটিকে দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ভাগ করার কেন্দ্রীয় পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সুপ্রিমকোর্টে পিটিশন দায়ের করেছেন ন্যাশনাল কনফারেন্সের দুই সংসদ সদস্য আকবর লোন ও হাসনাইন মাসুদি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ১, ২০১৯)