দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য আমদানি কয়লার প্রথম জাহাজ দেশের বন্দরে ভিড়বে এমাসের শেষের দিকে। আশা করা হচ্ছে, দিনটি হবে ৩০ আগস্ট। এই চালান আসার মধ্যদিয়ে প্রথম বৃহৎ পরিসরে কয়লা আমদানি শুরু হবে। বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল)-এর পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়া থেকে এই কয়লা আমদানি করা হচ্ছে।আগামী ডিসেম্বরে কেন্দ্রটির উৎপাদন শুরুর কথা রয়েছে। এজন্য আগে থেকেই কয়লার মজুত গড়ে তোলা হবে।

দেশে এখন শুধু বড়পুকুরিয়ায় কয়লাচালিত বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। তবে সেই কয়লা বড়পুকুরিয়া খনির। এবারই প্রথম দেশে আমদানি করা কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হবে। বলা হচ্ছে, এটি দেশের জন্য নতুন এক অভিজ্ঞতা। শুরুটা পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্র দিয়ে হলেও ধারাবাহিকভাবে উৎপাদনে আসার কথা রয়েছে রামপাল এবং মাতারবাড়ি বিদ্যুৎকেন্দ্রের

এব্যাপারে বিসিপিসিএল-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএম খোরশেদুল আলম বলেন, ‘৩০ আগস্ট পায়রাতে আমাদের প্রথম কয়লার জাহাজ আসবে, সেই কয়লা দিয়ে কেন্দ্রটি চালানো হবে।’

বিসিপিসিএল সূত্র বলছে, ডিসেম্বরে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদনে আসবে। তবে এর আগেই কেন্দ্রটি টেস্ট-রানে (পরীক্ষামূলকভাবে) চালানো হবে। কেন্দ্রটির নির্মাণ কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে বলেও জানিয়েছে বিসিপিসিএল।

গত ১৭ জুন ইন্দোনেশিয়ার পিটি বায়ান রিসোর্স টিবিকের সঙ্গে বাংলাদেশ-চায়না পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড (বিসিপিসিএল) ঢাকায় এ সংক্রান্ত চুক্তি করে।

চুক্তির আওতায় আগামী ১০ বছর পায়রা বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য কয়লা সরবরাহ করবে পিটি বায়ান। এছাড়া, বিদ্যুৎকেন্দ্রটির জন্য অষ্ট্রেলিয়া থেকেও কয়লা আমদানির কথা জানিয়েছে বিসিপিসিএল।

ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানি পিটি বায়ান রিসোর্স টিবিকে এই অঞ্চলে সব চেয়ে বড় কয়লা সরবরাহকারী কোম্পানির মধ্যে একটি। কয়লা উৎপাদনের সঙ্গে পিটি বায়ানের রয়েছে বন্দর অবকাঠামো।

বিদ্যুৎ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সরকার দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। ২০৪১ সালের মধ্যে দেশে ৬০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এজন্য বিপুল পরিমাণ কয়লা প্রয়োজন। তবে এখনও ওই কয়লার উৎস নির্বাচন করতে পারেনি সরকার।

তিনি জানান, এখন ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আমদানির ওপর সব চেয়ে বেশি জোর দেওয়া হচ্ছে। এজন্য ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে জ্বালানি সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ভবিষ্যতে দেশের কয়লাচলিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য ইন্দোনেশিয়াকেই প্রথম পছন্দের তালিকায় রেখেছে সরকার। কারণ হিসেবে দেশটি থেকে কয়লা আমদানির পরিবহন খরচ কম হওয়াকে বিবেচনায় রাখা হয়েছে।

পায়রা তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রের সূত্র বলছে,এখন পায়রা বন্দরের গভীরতা না থাকায় প্রথমেই বড় জাহাজে করে কয়লা আনা যাবে না। শুরুতে ৫০ থেকে ৬০ হাজার মেট্রিকটনের জাহাজে অর্ধেক ভরে ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা আনা হবে। এরপর একবছরের মধ্যে আন্দামানে কয়লার বড় জাহাজ এনে সেখান থেকে ছোট জাহাজে করে কয়লা আনা হবে দেশে।

কয়লা পরিবহনের দায়িত্ব থাকছে জার্মানির বিখ্যাত ওলডেন ড্রফ-এর ওপর। তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা এনে পায়রায় পৌঁছে দেবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ১৬, ২০১৯)