দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মিয়ানমারের নাগরিকত্ব, বসতভিটা ফেরত ও চলাফেরার নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে রাখাইনে ফিরে না যাওয়ার কথা চীনা প্রতিনিধিদলকে জানিয়েছেন টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গারা।

সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে টেকনাফের ২৬ নম্বর শরণার্থী ক্যাম্প ইনচার্জের (সিআইসি) কার্যালয়ে রোহিঙ্গা নেতাদের সঙ্গে বৈঠককালে ঢাকায় নিযুক্ত চীনা রাষ্ট্রদূত লি জিমিংসহ প্রতিনিধি দলকে এসব কথা জানান রোহিঙ্গারা।

এ সময় রোহিঙ্গাদের কাছে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা মিয়ানমারে ফিরে যাওয়ার বাধার বিষয়ে জানতে চান। এমন প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা বলেছেন, মিয়ানমারে এখনও রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি হয়নি। এছাড়া সেখানে বিবাদমান গ্রুপের মধ্যে সংঘাত লেগে রয়েছে। এমনকি মিয়ানমারে যেসব রোহিঙ্গা রয়ে গেছে, তাদের ওপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে আমরা কীভাবে মিয়ানমার যাবো।

কী করলে মিয়ানমারে যাবেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে এ শিবিরের রোহিঙ্গা নেতা গুরা মিয়া ও মোহাম্মদ জসিম বলেন, আমাদের তিনটি দাবি পূরণ করলে কালই স্বেচ্ছায় নিজ দেশে চলে যাবো। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব ও কেড়ে নেওয়া জমি ফেরত দিতে হবে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে।

চীনা রাষ্ট্রদূত জানতে চান, বাংলাদেশ সরকারের সহায়তায় মিয়ানমারের পরিস্থিতি দেখতে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দল সেদেশে পাঠালে যাবেন কিনা। এই প্রশ্নের জবাবে রোহিঙ্গারা যাবেন বলে সম্মতি দেন।

চীনের রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের জন্য দুটি প্রস্তাব দেন। একটি হলো- রোহিঙ্গা প্রতিনিধি দলের সবাইকে জনপ্রতি দুটি করে মোবাইল সেট দেওয়া হবে। একটি নিজে সেদেশে যাওয়ার সময় নিয়ে যাবেন, অন্যটি এখানে পরিবারের কাছে রাখবেন। যদি মিয়ানমারে পরিস্থিতি ভালো হয়, মোবাইলে পরিবারকে সেদেশে ডেকে নিয়ে যাবেন। আরেকটি হলো- প্রতিনিধি দল মিয়ানমারে গিয়ে অবস্থা দেখে ঘুরে চলে আসবেন। যদি সেখানের অবস্থা ভালো দেখে আসেন তাহলে পরিবার নিয়ে মিয়ানমারে ফেরত যাবেন।

রোহিঙ্গাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে চীনা প্রতিনিধি দলের সদস্যরা শালবন শিবিরের তিনটি ঘরে যান। এ সময় শিবিরের শিশুদের জন্য কয়েকটি স্কুল ব্যাগ ও ফুটবল দেওয়া হয়।

এর আগে সকাল ১০টার দিকে চীনের রাষ্ট্রদূত টেকনাফের কেরুনতলী ট্রানজিট ঘাট পরির্দশন করেন। এ সময় চীনা প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কক্সবাজার অতিরিক্ত শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মো. শামসুদ্দৌজা নয়ন, নয়াপাড়া শরণার্থী রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ (সিআইসি) আব্দুল হান্নান, জাদিমুরা ও শালবাগান রোহিঙ্গা শিবিরের ইনচার্জ মোহাম্মদ খালিদ হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ১৬,২০১৯)