ডেস্ক রিপোর্ট : বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা ব্যাটসম্যানের নাম জিজ্ঞেস করা হলে, যে কারো সংক্ষিপ্ত তালিকায় থাকবে ভারতের ব্যাটিং ঈশ্বর শচিন টেন্ডুলকারের নাম। টেস্ট ও ওয়ানডেতে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক, উভয় ফরম্যাটেই সর্বোচ্চ সেঞ্চুরি, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরির সেঞ্চুরিসহ অজস্র সব রেকর্ডে রয়েছে শচিনের দখলে।

অথচ এই শচিনকেই কি না নিজের পছন্দ মতো ব্যাটিং অর্ডার পেতে হাত জোর করে অনুরোধ করতে হয়েছিল ভারতের তৎকালীন কোচ-অধিনায়কের সামনে। সেদিন শচিনের কথায় রাজি হয়েছিলেন ভারতের অধিনায়ক মোহাম্মদ আজহারউদ্দিন এবং কোচ অজিত ওয়াদেকার। আর তাতেই ক্রিকেট বিশ্ব দেখেছে শচিন নামক তারকার অসাধারণ এক যাত্রা।

ততদিনে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পাঁচ বছর পার করে ফেলেছিলেন শচিন। মিডল অর্ডারে খেলে ৬৯ ম্যাচে মাত্র ৩১ গড়ে রান করতে পেরেছিলেন তিনি, ছিলো না কোনো সেঞ্চুরি। এমতাবস্থায় ১৯৯৪ সালে নিউজিল্যান্ড সফরে যায় ভারত, দলে ছিলেন শচিনও। সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ম্যাচের দিন সকালে তীব্র ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করেন তখনকার নিয়মিত ওপেনার নভজিত সিং সিধু। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে তাকে মাঠে নামানোই সম্ভব নয়,।

ফলে সিধুর বদলে কাকে নামানো যায় ওপেনিংয়ে- তা নিয়ে চিন্তা পড়ে যান আজহারউদ্দিন ও ওয়াদেকার। তাদের চিন্তামুক্ত করতে বেশ খানিকটা সাহস নিয়ে এগিয়ে যান শচিন। গিয়ে জানান ওপেনিং করার ইচ্ছার কথা। কিন্তু মাত্র ২১ বছর বয়সী কাউকে নিউজিল্যান্ডের মতো কন্ডিশনে হুট করে ওপেন করতে দেয়ার পক্ষে ছিলেন না কোচ-অধিনায়ক।

তখন নিজের পছন্দমতো ওপেনিং করতে নামার সুযোগ পাওয়ার জন্য রীতিমতো হাত জোড় করে অনুরোধ করেন শচিন। অনেক দ্বিধা-সংশয় মনে নিয়েই রাজি হন ভারতের কোচ ও অধিনায়ক। সুযোগ পেয়ে যান শচিন। সেদিন অজয় জাদেজার সঙ্গে ইনিংসের সূচনা করতে নেমে মাত্র ৪৯ বলে ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলেন ভারতের মাস্টার ব্লাস্টার।

প্রায় ২৫ বছর পর এ ঘটনা নিজের মুখেই বলেছেন শচিন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড দেয়া এক ভিডিও বার্তায় শচিন বলেন, ‘১৯৯৪ সালে আমি যখন ভারতের পক্ষে ইনিংস সূচনা করতে শুরু করি, তখন দলগুলোর পরিকল্পনা ছিলো যত সম্ভব উইকেট বাঁচিয়ে রেখে খেলা। আমি এই চিন্তার বাইরে গিয়ে কিছু করতে চেয়েছিলাম।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি তখন ভাবলাম, নিজেই ইনিংসের সূচনা করতে পারি এবং প্রতিপক্ষ বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে খেলতে পারি। কিন্তু সেই সুযোগটা পাওয়ার জন্য আমাকে হাত জোর করতে হয়েছিল। যদি আমি ব্যর্থ হই, তাহলে আর কখনোই সুযোগ পাবো না। সেই ম্যাচে আমি ৪৯ বলে ৮২ রান করেছিলাম। ফলে আমার আর জিজ্ঞেসও করতে হয়নি যে পরের ম্যাচে ইনিংস ওপেন করতে পারবো কি না। তারাই আমাকে ওপেনিংয়ে নামানোর জন্য আগ্রহী ছিলো। আমার বার্তা হলো ব্যর্থতার ভয় পেলে সাফল্য পাওয়া যাবে না।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/সেপ্টেম্বর ২৬,২০১৯)