বাগেরহাট প্রতিনিধি: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়া বাগেরহাট পৌরসভার হরিণখানা এলাকার গরিব মোধাবী যমজ দুই বোন সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়ার পড়াশুনার দায়িত্ব নিয়েছেন সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় ও জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ।

আজ শনিবার দুপুরে বাগেরহাট সার্কিটে হাউসে মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থী ও তাদের মায়ের সঙ্গে কথা বলে এই আশ্বাস দেন ডিসি। এ সময় বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান, মোহাম্মাদ শাহজাহান, মো. রাহাত উজ্জামান, শিক্ষার্থীদের মা শাহিদা বেগম, কাউন্সিলর মোল্লা নাসির উদ্দিনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেছেন, বর্তমান সমাজে মানুষের মানসিকতার পরিবর্তন হচ্ছে। দেশ যেমন এগিয়ে যাচ্ছে, মানুষ একে অপরকে সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে। তাই মেধাবী দুই শিক্ষার্থীর লেখাপড়ার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে সহযোগিতা করব। আশা করছি তারা পড়াশুনা করে ভালো মানুষ হবে।

এ সময় বাগেরহাট সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সরদার নাসির উদ্দিন মেধাবী ওই দুই শিক্ষার্থীকে দুটি মুঠোফোন প্রদান করেন। তিনি বলেছেন, বাগেরহাটে এরকম দুইজন মেধাবী শিক্ষার্থী রয়েছে বিষয়টি জানতে পেরে সকালেই তাদের বাড়িতে যাই। স্থানীয় সংসদ সদস্য শেখ তন্ময়কে বিষয়টি অবহিত করেছি। ওই দুই শিক্ষার্থী যাতে নির্বিঘ্নে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে বলেছেন সংসদ সদস্য।

এছাড়া বাগেরহাট পৌরসভার মেয়র খান হাবিবুর রহমানও এই মেধাবী দুই শিক্ষার্থীকে পড়াশুনার জন্য পঞ্চাশ হাজার টাকা দেওয়া কথা বলেছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বাগেরহাট পৌরসভার হরিণখানা এলাকার রাজমিস্ত্রি দিনমজুর বাবা মহিদুল হাওলাদারের যমজ দুই মেয়ে সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া ও নাদিরা ফারজানা সুমাইয়া। টাকার অভাবে টিউশনি করে পড়াশুনা চালিয়েছেন তারা। এরপরও মাধ্যমিকে বাণিজ্য বিভাগে সুরাইয়া ৪.৮৬, সুমাইয়া ৪.৯১ এবং উচ্চ মাধ্যমিকে দুই বোনই গোল্ডেন এ প্লাস পায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় গ-ইউনিটে ২০১৯-২০ বাণিজ্য অনুষদে সুমাইয়ার মেধাক্রম ৮৪৬ এবং সুরাইয়ার মেধাক্রম ১১৬৩। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের ভর্তির শেষ দিন ৩১ অক্টোবর।

যমজ দুই বোনের মা শাহিদা বেগম বলেছেন, টাকার অভাবেও মেয়েদের পড়াশুনা করিয়েছি। মেয়েরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাওয়ার পর অনেক চিন্তিত হয়ে পড়ছিলাম। সবাই যখন সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে। তাই এখন একটু ভারমুক্ত হয়েছি।

সাদিয়া আক্তার সুরাইয়া বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ার পরে এক ধরনের অনিশ্চয়তা কাজ করছিল মনের মধ্যে। আমাদের এমপি, জেলা প্রশাসক, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রসহ অনেকে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন সেজন্য আমরা কৃতজ্ঞ। সকলের কাছে দোয়া চাই। যাতে ভালো লেখাপড়া করে দেশের সেবা করতে পারি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ০৫,২০১৯)