দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: কাতার। এশিয়ান কাপ চ্যাম্পিয়ন। ২০২২ বিশ্বকাপের আয়োজক। বাছাইপর্বের শুরুটা করেছিল আফগানিস্তানের বিপক্ষে গোল উৎসবের মাধ্যমে। পরের ম্যাচে ভারতের মাটিতে করেছে ড্র। অপর দিকে বাংলাদেশ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে হেরেছে আফগানিস্তানের বিপক্ষে। দ্বিতীয় ম্যাচে ঘরের মাঠে আথিতেয়তা দিচ্ছে শক্তিশালী কাতারকে।  

অর্থের ছড়াছড়ি আর বংশোদ্ভূত খেলোয়াড়দের সংমিশ্রণ। কাতার দল সর্বশেষ কপা আমেরিকাতে খেলেছে আর্জেন্টিনা-কলম্বিয়ার এবং প্যারাগুয়ের মতো দলের সাথে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে ২ গোল এবং কলম্বিয়ার বিপখে মাত্র ১-০ গোলে হারলেও ড্র করেছে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে।

মাঠের সাথে ডাগআউটেও চমক কাতারের। কোচ হিসেবে দায়িত্বে রয়েছেন সেই ১৯৯৬ সাল থেকে টানা এগারো বছর বার্সেলোনার যুবদলের কোচের দায়িত্ও পালন করা ফেলিক্স সানচেজ। নিজের চোখের সামনে গড়ে উঠতে দেখেছেন মেসি, জাভি, ইনিয়েস্তা, পুয়োল, পিকে, ভালদেস, ফ্যাব্রিগাসদের। কাজ করেছেন রোনালদিনহো ও রিভালদোর মতো তারকাদের সঙ্গে।

কাতার অনূর্ধ্ব-২৩ দলকে গত বছরই জাকার্তা এশিয়ান গেমসে ১-০ গোলে হারিয়েছিল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-২৩ দল। সে দলটির অনেকেই বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে কাল মাঠে নামবেন। সে হিসাব অবশ্যই আলাদা। কাতারের জাতীয় দল অবশ্যই জাকার্তা এশিয়ান গেমসের দলটির সমকক্ষ নয়। এই কাতার অনেক অনেক শক্তিশালী। এটি জাতীয় দল।

১৯৭৯ সালে ঢাকায় এশিয়ান কাপ বাছাইয়ে কাতারের সঙ্গে গোলশূন্য ড্র করেছিল বাংলাদেশ। উল্লেখ্য, সেবারই ইতিহাসে প্রথম ও এখনো পর্যন্ত একমাত্র বারের মতো এশিয়ান কাপের চূড়ান্তপর্বে খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছিল বাংলাদেশ।

এরপর আরও দুবার কাতারের সঙ্গে লড়েছে বাংলাদেশ। ২০০৬ সালে এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ঢাকায় কাতারের বিপক্ষে বাংলাদেশ হেরেছিল ৪-১ গোলে। দোহাতেও পরের লেগে বাংলাদেশ হেরে যায় ৩-০ গোলে।

তবে এতকিছুর পরেও আশার বানী হচ্ছে খেলার মাঠ, আবহাওয়া এবং কাতারের সবশেষ ম্যাচ। অনুকূল পরিবেশ, প্রতিপক্ষের আক্রমণ ঠেকান এবং সুযোগ কাজে লাগাতে পারলে ভালো ফলাফলের আশা করা যেতেই পারে। আর কাতারের সবশেষ ম্যাচ ছিল ভারতের বিপক্ষে। ভারতের গোলপোস্টে নেয়া ২৯ টি শট প্রতিহত করেই ভারত পরাজয় এড়ায় এশিয়ান চ্যাম্পিয়নদের বিপক্ষে।

দলের খবর

বাংলাদেশ
বাংলাদেশ নামবে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড় ছাড়াই। ডিফেন্ডার সুশান্ত ত্রিপুরা ভুটানের বিপক্ষে ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছেড়েছিলেন। তার খেলা হচ্ছে না। টুটুল হোসেন বাদশাকে স্কোয়াডে আছেন। তার খেলার সম্ভাবনা উড়িয়ে না দিলেও কোচের কথা-বার্তায় বোঝা গেছে একাদশে থাকার সম্ভবনা কমই বাদশার।

কাতার
দলটির নাম কাতার হলেও একদম শত ভাগ কাতারি বংশোদ্ভূত খেলোয়াড় আছেন খুব কম। মূল একাদশের অনেক খেলোয়াড়ের মধ্যে বইছে অন্যান্য দেশের রক্ত। তাদের ফুটবল খেলার ধরনের মধ্যেও এই বিভিন্ন জাতির প্রভাব ও বৈচিত্র্য বিদ্যমান।

দলের প্রায় প্রত্যেক খেলোয়াড়ই একাধিক পজিশনে খেলে অভ্যস্ত। ফলে কোচ ফেলিক্স সানচেজকে কোনো নির্দিষ্ট ছকে আটকে থাকা লাগে না। প্রতিপক্ষের শক্তিমত্তা ও নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী কাতার একেক ম্যাচে একেক ছক ও কৌশল নিয়ে খেলে। ফলে তাদের মূল একাদশ ও কৌশল একটু হলেও অননুমেয়।

তাঁরা যা বললেন…

বাংলাদেশের ইংলিশ কোচ জেমি ডে,
‘অবশ্যই এটা আমার জন্য সবচেয়ে বড় ম্যাচ। শুধু আমার জন্য নয় খেলোয়াড়দের জন্যও। কাতার বিশ্বকাপ আয়োজক, ওরা বিশ্বকাপে খেলবে। ওদের বিপক্ষে খেলতে পারা বড় একটা ব্যাপার। এ ধরনের ম্যাচে খেলোয়াড়রা উন্নতি করতে পারলে সেটা আমাকে আরও বড় কোচ বানাবে।’

বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া,
‘আমরা কঠিন একটি ম্যাচের অপক্ষোয় আছি। তারা (কাতার) এশিয়ার এক নম্বর দল। তবে আসন্ন ম্যাচে আমাদেরও ভাল করার সুযোগ রয়েছে। সুযোগ পেলেই আমাদেরকে সেটিকে গোলে পরিণত করতে হবে। অন্যথায় তারা আমাদের শায়েস্তা করবে।’

কাতারের স্প্যানিশ কোচ ফেলিক্স সানচেজ,
‘আমাদের ফুটবলাররা পেশাদার। যেখানে খেলা হবে সেখানেই তারা সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করবে। বৃষ্টি হলে হয়ত মাঠ আমাদের মনমতো হবে না। তবে এটা নিয়ে ভেবেও লাভ নেই, কারণ এটা তো আমাদের হাতে নেই।’

কাতার দলের শীর্ষ তারকা আলী হাসান,
‘এই গ্রুপে কোন ছোট দল নেই। প্রতিটি দলই নিজেদের শক্তি ও সামর্থ্য প্রমান করেই এই লড়াইয়ে সামিল হয়েছে। অবশ্য ভারতীয়দের বিপক্ষে ফলাফল নিয়ে মাথা ঘামাতে চাননা জানিয়ে এই ফুটবল তারকা বলেন, আমাদের সর্বাত্মক চেষ্টা থকবে বাংলাদেশের বিপক্ষে ভাল ফলাফল করার।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ১০,২০১৯)