ডক্টর মো. মাহমুদুল হাছান

বাংলাদেশ একটি জনসমৃদ্ধ দেশ। শিক্ষা-দীক্ষা ও জ্ঞান চর্চায় দেশটি বেশ ক্রম অগ্রসরমান। শিক্ষা বিস্তারে সরকারও অনেক তৎপর। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর থেকে স্বাধীনতা প্রাককাল পর্যন্ত বাংলাদেশে শিক্ষার তেমন কোন বিস্তার সাধিত না হলেও স্বাধীনতা পরবর্তিকাল থেকে শিক্ষার ক্রম উন্নয়নে নানবিধ পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়ে থাকে বং রাজধানী শহর ছেড়ে দেশের প্রতি শহর-বন্দর ও গ্রাম-গন্জে স্কুল, কলেজ ও  মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠিত হয়। সরকারের নানাবিধ উদ্যোগের পাশাপাশি শিক্ষা বিস্তারের লক্ষ্যে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় অনেক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছেন যা জ্ঞান বিজ্ঞান চর্চা ও গবেষণায় বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগে মুহূর্ত পর্যন্ত শেখে। শিক্ষা। যুগপত বিশ্লেষণে কালের সন্ধিক্ষণে মানুষের বয়সকাল , বসবাসের প্রকৃতি ও পরিবেশ এবং জীবন-যাপন প্রক্রিয়ার উপর ভিত্তি করে  শিক্ষা লাভের প্রক্রিয়া ও ধরন বিভিন্ন রকমের হয়ে থাকে। বাংলাদেশও এ ধারার ব্যতিক্রম নয়। আমাদের দেশে শিক্ষার তিনটি ধরন রয়েছে যেমন; আনুষ্ঠানিক শিক্ষা, অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা।

এ সম্পর্কে নিম্নে সংক্ষিপ্তভাবে আলোচনা করা হলো-

আনুষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর ও ধরন

আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এমন একটি কাঠামোগত পরিবেশে ঘটে থাকে যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান । সাধারণত, একটি স্কুলের পরিবেশে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা সঞ্চালিত হয় একাধিক শিক্ষার্থীদের জন্য একজন প্রশিক্ষিত এবং প্রত্যয়িত শিক্ষকের প্রয়োজন পড়ে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য । বেশিরভাগ স্কুলে একটি মানসম্মত আদর্শ ডিজাইন করা হয় যার মাধ্যমে সিস্টেমে সমস্ত শিক্ষাগত পছন্দগুলি নিয়ন্ত্রণ করা হয় । এই ধরনের পছন্দগুলি পাঠ্যক্রম, সাংগঠনিক মডেল, শারীরিক শিক্ষার স্থানগুলির (যেমন শ্রেণীকক্ষ) নকশা, ছাত্র-শিক্ষক মিথস্ক্রিয়া বা ইন্টারঅ্যাকশন, মূল্যায়ন পদ্ধতি, শ্রেণীর আকার, শিক্ষাগত কর্মকাণ্ড এবং আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করে। পঠন-পাঠনের স্তর ও ধরন অনুযায়ী আনু্ষ্ঠানিক শিক্ষাকে কয়েকটি স্তরে ভাগ করা হয়ে থাকে যেমন; প্রাকস্কুল শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষা, নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা ও উচ্চতর শিক্ষা। নিম্নে আনুষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর ও ধরন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

প্রাকস্কুলের স্তর ও ধরন

প্রাকস্কুল আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রথম ধরন। এ ধরনের শিক্ষা ধারায় আমাদের দেশে ছেলে-মেয়েদের স্কুলযাত্রা সাধারণত ছয় বছর বয়স থেকে শুরু হলেও বর্তমানে প্রাক প্রাথমিক স্কুলগুলিতে প্রাক প্রাথমিক ‍শাখা খুলে আরো অল্প বয়স থেকে ছেলে মেয়েরা স্কুলে যাওয়া আসা করে থাকে। সাধারণত প্রাক স্কুল গুলিতে আড়াই বছর বয়স থেকে সাত বছর বয়সের ছেলে মেয়েরা প্রি-প্লে, প্লে, নার্সারী, প্রি-কেজি ও কেজি শ্রেণিতে শিক্ষার ক্রম ধাপ শুরু করে থাকে। এই ধাপ সমুহের স্কুলগুলেকে নার্সারি স্কুল এবং কিন্ডারগার্টেন হিসাবেও পরিচিত । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে কিন্ডারগার্টেন শব্দটি প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত শব্দ । কিন্ডারগার্টেন তিন থেকে সাত বছরের জন্য একটি শিশু-কেন্দ্রিক প্রাক পাঠ্যক্রম প্রদান করে । এখানে মূলত শিশুদের শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিক প্রকৃতির উদ্ঘাটন করার জন্য চেষ্টা করা হয়।

প্রাথমিক স্কুলের স্তর ও ধরন

প্রাথমিক স্কুল আনুষ্ঠানিক শিক্ষার দ্বিতীয় ধরন। প্রাথমিক শিক্ষা আনুষ্ঠানিক ও কাঠামোগত যা প্রথম পাঁচ থেকে সাত বছর নিয়ে গঠিত। সাধারণত, প্রাথমিক শিক্ষা পাঁচ থেকে ছয় বছর এবং ছয় থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা করানো হয়ে থাকে, যদিও এর মধ্যে, মাঝে মাঝে দেশ ভেদে ভিন্নতা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী, ছয় থেকে বারো বছর বয়সী প্রায় ৮৯% শিশু প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তি হয় এবং এই অনুপাত বেড়েই চলেছে। ইউনেস্কো দ্বারা চালিত "সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা"প্রগ্রামে বেশিরভাগ দেশই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে এটি বাস্তবায়নের জন্যএবং অনেক দেশে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । সম্পূর্ণ অবৈতনিক ও বিনামূল্যে বই বিতরণের মাধ্যমে বাংলাদেশে এ শিক্ষাকে বাধ্যতামূলোক করা হয়েছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মধ্যে বিভাজন কিছুটা আলাদা, তবে এটি সাধারণত প্রায় এগারো বা বারো বছর বয়সের মধ্যে ঘটে । কিছু শিক্ষা ব্যবস্থায় পৃথক মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে চৌদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে স্থানান্তর করা হয় । প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের স্কুলগুলি প্রাথমিকভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আবার শিশু এবং জুনিয়র স্কুলের মধ্যে বিভক্ত করা হয়।

নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুলের স্তর ও ধরন

নিম্নমাধ্যমিক ও মাধ্যমিক স্কুল আনুষ্ঠানিক শিক্ষার তৃতীয় ও চতুর্থ ধরন। বিশ্বের বেশিরভাগ সমসাময়িক শিক্ষা ব্যবস্থায়, মাধ্যমিক শিক্ষায় বয়ঃসন্ধির সময় আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রসার ঘটে। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত "মাধ্যমিক উত্তর" বা "উচ্চতর" শিক্ষা (যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়, বৃত্তিমূলক স্কুল) থেকে অপ্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য সাধারণত প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক । এই সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে এই সময়ের জন্য বিদ্যালয়গুলি বা এর একটি অংশকে জুনিয়র সেকেন্ডারি বা নিম্ন মাধ্যমিক ও সেকেন্ডারি বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় বলা যেতে পারে। নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মধ্যে শ্রেণি তারতম্যে একটু ব্যবধান রয়েছে । আমাদের দেশে ষষ্ঠ, সপ্তম ও অষ্টম শ্রেণি নিয়ে নিম্ন মাধ্যমিক শিক্ষা ধরন গঠিত হয় এবং নবম ও দশম শ্রেণি নিয়ে মাধ্যমিক শিক্ষার ধরন গঠিত হয়। নিম্ন মাধ্যমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হতে পারে সাধারণ জ্ঞান দান , উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করা, অথবা সরাসরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে পেশার জন্য। মাধ্যমিক স্তরে ছাত্র ছাত্রীরা তিনটি বিভাগের যে কোন একটি বিভাগকে নির্বাচন করতে পারে। বিভাগ তিনটি হলো; বিজ্ঞান, কলা বা মানবিক এবং বানিজ্য বিভাগ।

ইংরেজি মাধ্যম যা ব্রিটিশ কারিকুলামে পরিচালিত নিম্ন মাধ্যমিক স্তরকে পি এল এস সি (PLSC) বলে থাকে। ইংরেজি মাধ্যমের এ কারিকুলামে পি এল এস সি (PLSC) বলতে গ্রেড ৫ ও গ্রেড ৮ এর পরীক্ষা পদ্ধতিকে বোঝানো হয়। আবার মাধ্যমিক স্তরকে ও লেভেল (O Level) হিসাবে আখ্যায়িত করা হয়। এ স্তরে শিক্ষার্থীরা এডেক্সেল বা ক্যাম্ব্রীজ কারিকুলামে পড়া শুনা করে থাকে।

উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার স্তর ও ধরন

উচ্চমাধ্যমিক স্কুলআনুষ্ঠানিক শিক্ষার পন্চম স্তর ও ধরন। এ শিক্ষা স্তর একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণি নিয়ে গঠিত হয় এবং পরীক্ষাকে বলা হয় এইচ এস সি পরীক্ষা। বাংলাদেশে ছাত্র ছাত্রীরা মাধ্যমিক স্তর সফলতার সাথে অতিক্রম করার পর এ শিক্ষা স্তরে প্রবেশ করে থাকে। মাধ্যমিকের ন্যায় তারা বিজ্ঞান, কলা বা মানবিক ও বানিজ্য বিভাগের যে কোন একটিতে পড়া শোনা করতে পারে। উচ্চ শিক্ষার প্রস্তুতি গ্রহন ও বিষয় ভিত্তিক বিশেষ জ্ঞান অর্জন করার ক্ষেত্রে এ স্তরটি শিক্ষার্থীদের জন্য বেশ গুরুত্বপূর্ণ। এ স্তর শেষ করে তারা স্নাতক শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে পেশাগত শিক্ষা যেমন; ডাক্তার, ইন্জিনিয়ার, বিজ্ঞানী, ব্যবসায়িক, সাহিত্যিক, সাংবাদিক অর্থনীতিবীদ ও রাজনীতিবীদসহ যে কোন বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান অর্জন করে পেশাগত জিবনে প্রবেশ করে থাকে।

ইংরেজি মাধ্যম যা ব্রিটিশ কারিকুলামে পরিচালিত উচ্চ মাধ্যমিক স্তরকে (A Level) বলা হয়ে থাকে, যা গ্রেড ৯ ও গ্রেড ১০ নিয়ে গঠিত হয়। এ স্তরে শিক্ষার্থীরা এডেক্সেল বা ক্যাম্ব্রীজ কারিকুলামে পড়া শুনা করে থাকে এবং চল্লিশটিরও বেশি অনেকগুলি বিষয়ের মধ্যথেকে তাদের পছন্দ অনুযায়ি বিষয় নির্বাচন করতে পারে।

উচ্চতর স্তর ও ধরন

উচ্চশিক্ষা হল আনুষ্ঠানিক শিক্ষার ষষ্ঠ স্তর, বা পোষ্ট হাইয়ার সেকন্ডারি শিক্ষা, এটি একটি অ-বাধ্যতামূলক শিক্ষাগত স্তর যা উচ্চ বিদ্যালয় বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেমন স্কুল সমাপ্তি অনুসরণ করে । তৃতীয়তঃ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা সহ বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ কে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানত উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে। সমষ্টিগতভাবে এইগুলি উচ্চ বিভাগ হিসাবে পরিচিত। উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা ব্যক্তি সাধারণত সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, বা একাডেমিক ডিগ্রী প্রাপ্ত হয়ে থাকে ।

উচ্চ শিক্ষা সাধারণত একটি ডিগ্রী-স্তর বা ডিগ্রী যোগ্যতা জড়িত থাকে। অধিকাংশ উন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যা (৫০% পর্যন্ত) এখন তাদের জীবনের কোন একটা সময় উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে। জাতীয় অর্থনীতির জন্য উচ্চশিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, উভয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয় এবং বাকি প্রশিক্ষিত এবং শিক্ষিত কর্মীরা অর্থনীতির উৎস হিসাবে গণ্য ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শিক্ষাদান, গবেষণা এবং সামাজিক সেবা কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং এটি স্নাতক পর্যায়ে উভয়ই অন্তর্ভুক্ত (কখনও কখনও উচ্চতর বিভাগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়) এবং স্নাতক (বা স্নাতকোত্তর) স্তর (কখনও কখনও স্নাতক স্কুল হিসাবে পরিচিত)।

উদার শিল্প শিক্ষা (liberal arts education) নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার একটি কোর্স আছে যাকে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যার মূল কাজ হল সাধারণ জ্ঞান প্রদান এবং একটি পেশাদার, বৃত্তিমূলক বা কারিগরি পাঠ্যক্রমের বিপরীতে সাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষাদান করা । ইউরোপে উদার শিল্প শিক্ষার ( liberal arts education) সূচনা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে liberal arts college শব্দটির সাথে যুক্ত।

বৃত্তিমূলক শিক্ষা

বৃত্তিমূলক শিক্ষা হচ্ছে সরাসরি এবং বাস্তব প্রশিক্ষণের উপর নিবদ্ধ শিক্ষার একটি ফর্ম । পেশাগত শিক্ষা একটি শিক্ষানবিশ বা ইন্টার্নশিপের পাশাপাশি চলতে পারে এমন একটি কাঠামো যেমন , কৃষি, প্রকৌশল, ঔষধ, স্থাপত্য এবং কলা এর অন্তর্ভুক্ত।

বিশেষ শিক্ষাঃ অতীতে যারা অক্ষম ছিল তারা প্রায়ই সরকারি শিক্ষার জন্য যোগ্য ছিল না । প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য শিক্ষা বার বার চিকিৎসক বা বিশেষ টিউটর দ্বারা অস্বীকৃত হত । এই প্রারম্ভিক চিকিৎসক (ইটারড, সেগোইন, হাউ, গালাদেডের মত মানুষ) আজকে বিশেষ শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করেছেন। তারা স্বতন্ত্র এবং কার্যকরী দক্ষতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন । তার প্রাথমিক বছরগুলিতে, বিশেষ শিক্ষা শুধুমাত্র গুরুতর অক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য প্রদান করা হয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি এটি সবার জন্য খোলা হয়েছে।

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা

ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) সংস্থা দ্বারা নির্ধারিত শিক্ষার তিনটি পদ্ধতির মধ্যে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা অন্যতম। অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা বিভিন্ন জায়গায় যেমন বাড়িতে, কাজের মধ্যে এবং দৈনিক ইন্টারঅ্যাকশন যা সমাজের সদস্যদের মধ্যে শেয়ারে মাধ্যমে পরিচালিত হয় । অনেক শিক্ষার্থীর জন্য ভাষা অধিগ্রহণ, সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং আচরণকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় । অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা একটি চলমান প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন জায়গায় , যেমন স্কুলের সময়ের বাহিরে , কমিউনিটি সেন্টারে এবং মিডিয়া ল্যাবগুলিতে পরিচালিত হয়ে থাকে।

অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাহিরে ঘটে থাকে যা নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমের অনুসরণ করে না । বিশেষ করে বাস্তবের পরিবর্তনের সাথে ব্যবহারিক প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে এর উৎপত্তি ঘটতে পারে । এটা অপরিহার্যভাবে তথাকথিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনুসরণ করেনা। শিক্ষণীয়ভাবে সচেতন, নিয়মানুবর্তিতা এবং বিষয় অনুযায়ী, কিন্তু অজ্ঞানভাবে আনুষ্ঠানিক, holistically সমস্যা সম্পর্কিত, এবং পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা এবং জীবনের জন্য ফিটনেস সম্পর্কিত পরিকল্পনা করা হয় না। এটা মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের সরাসরি অভিজ্ঞতা থেকে অর্জন করে।

উনবিংশ শতকে শৈশবের বিকাশে 'বিনোদন দ্বারা শিক্ষা' ধারণার প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ধারণাটি আরও বিস্তৃত করা হয়েছিল কিন্তু বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল শারীরিক কার্যকলাপের উপর । এল.পি জ্যাকস, জীবনযাত্রার শিক্ষার প্রথম প্রবর্তক, বিনোদন দ্বারা শিক্ষার বর্ণনা দিয়েছেন: "জীবন যাপনের শিল্পে একজন মাস্টার তার কাজের এবং খেলার মধ্যে, তার শ্রম এবং অবসরের মধ্যে , তার মন এবং শরীরের মধ্যে , তার শিক্ষা এবং বিনোদনের মধ্যে কোন পার্থক্য খোঁজেন না । তিনি জানেননা যে তিনি কী কাজ করছেন । এবং অন্য যে কোনও কাজ তিনি করেন বা খেলেন তা ছেড়ে দিয়ে তিনি নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দৃষ্টিভঙ্গি অনুধাবন করার জন্য চেষ্টা করেন। নিজের জন্য তিনি সবসময়ই উভয় কাজ করছেন বলে মনে করেন। যা করছেন তা নিজের জন্য ভাল । বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা একটি সুযোগ যেখানে জীবনের সমস্ত কর্মের মাধ্যমে মানুষ অনেক কিছু শিখতে পারে । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রদের এনাটমি শিক্ষা দেওয়ার জন্য ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর ইউনিভার্সিটি এই ধারণাটি পুনর্বিন্যস্ত করেছে।

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার স্তর ও ধরন

স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে পরিচালিত শিক্ষাদান কার্যক্রম। শিক্ষার্থীদের জন্য সুবিধাজনক কোনো জায়গায় এ কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা মূলত দরিদ্র জনমানুষের শিক্ষাদান কার্যক্রম। এতে যে কোনো বয়সের নিরক্ষর মানুষকে অক্ষর, লেখাপাঠ, গণনা, হিসাব, মনের ভাব লিখন প্রভৃতি মৌলিক বিষয় শেখানো হয়। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীকে সমাজ, পরিবেশ ও দৈনন্দিন বিজ্ঞান সম্পর্কে জ্ঞান দান করা হয়। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা শুধু বিদ্যালয়ের পাঠবঞ্চিতদের জন্য নয়, যারা দারিদ্র্য ও অন্যান্য কারণে বিদ্যালয় থেকে ‘ঝরে’ পড়ে বা বিদ্যালয় ছাড়তে বাধ্য হয় তাদের জন্যও উন্মুক্ত।

ব্রিটিশযুগে ১৯১৮ সালে নৈশ বিদ্যালয়ে বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম চালুর মাধ্যমে বাংলাদেশে উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রথম উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। ১৯২৬ সাল নাগাদ নৈশ বিদ্যালয়ের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে যায়। ১৯৩৫ সালে কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক সরকার এবং বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে পাড়া বা মহল্লাভিত্তিক সমিতি বয়স্ক শিক্ষা এবং সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা সম্প্রসারণের জন্য বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে। ১৯৩৯ সালে ফ্রাঙ্ক ল্যুবাক-এর ‘অন্তত একজনকে লেখাপড়া শেখাবো’ আন্দোলন ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করে।

বঙ্গীয় প্রাদেশিক সরকার বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার দায়িত্ব দেয় পল্লী উন্নয়ন অধিদপ্তরকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণে বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে য়। ১৯৪৭-এর পর বিচ্ছিন্নভাবে বেশ কয়েকজন ব্যক্তি এ কার্যক্রম চালু করেন। ১৯৫৬ সালে এইচ.জি.এস বিভার-এর উদ্যোগে ঢাকায় সাক্ষরতা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষার উপকরণ হিসেবে একটি প্রথম পাঠ ও কিছু চার্ট তৈরি করে। সাক্ষরতা কেন্দ্রের সূত্র ধরে গঠিত হয় পূর্ব পাকিস্তান বয়স্ক শিক্ষা সমবায় সমিতি। এটি বয়স্ক শিক্ষার জন্য ২৪টি বই রচনা ও প্রকাশ করে। এগুলোর মধ্যে ১২টি ছিল নব্য অক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের পড়ার জন্য। ১৯৬২ সালে বিভারের মৃত্যুর পর বয়স্ক শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। ১৯৬৩ সালে বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমী গণশিক্ষা পরিদপ্তরের পাইলট প্রকল্প হিসেবে একটি বয়স্ক শিক্ষা শাখা চালু করে। প্রকল্পটি বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও অব্যাহত ছিল।

বাংলাদেশের সংবিধানে শিক্ষা মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃত। সর্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা রাষ্ট্রীয় মূলনীতি হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। এরপরও এদেশে নিরক্ষরতার হার কমেনি। সকল শ্রেণির মানুষকে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা প্রায় অসম্ভব। শিশুদের একটি বৃহৎ অংশ নানা কারণে স্কুলে ভর্তি হতে পারে না। যারা ভর্তি হয় তাদের মধ্যে অনেকেই ঝরে যায়, আর স্কুলে ফিরতে পারে না। এদের জন্যই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা প্রয়োজন। যারা স্কুলে পড়ার সুযোগ পায়নি, আনুষ্ঠানিক শিক্ষার অভাবে নিরক্ষর রয়ে গেছে তাদের জন্যও এটি আবশ্যক। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মাধ্যমে বয়স্কদের ব্যবহারিক শিক্ষা দেওয়া হয়। আনুষ্ঠানিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত শিশু, কিশোর ও বয়স্কদের জন্য বিকল্প শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করাই উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য। উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার স্তরে দুটি স্তর বিশেষ ভাবে সংশ্লিষ্ট যেমন; স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা ও উন্মুক্ত শিক্ষা ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি। নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা

অটোডাইডেকটিক্সিজম একটি চিত্তাকর্ষক গ্রহণ প্রক্রিয়া যেখানে "নিজে নিজে শেখা" বা "নিজের দ্বারা" বা স্ব-শিক্ষক হিসাবে ভূমিকা পালন করতে হয় । কিছু অটোডাইডেক্টস( স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত) প্রচুর সময় ব্যয় করে লাইব্রেরী ও শিক্ষাগত ওয়েবসাইটগুলির সম্পদগুলি পর্যালোচনা করার মাধ্যমে । একজন লোক তার জীবনের প্রায় যেকোনো সময় অটোডাইডেক্ট হতে পারে। যদিও কেউ কেউ একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এবং একটি প্রচলিত পদ্ধতিতে তারা নিজেদেরকে আনরিলেটেড বিষয় অবহিত করতে পারে । উল্লেখযোগ্য অটোডাইডেক্টসের( স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত) মধ্যে আব্রাহাম লিঙ্কন (ইউএস প্রেসিডেন্ট), শ্রীনিবাস রামানুজন (গণিতবিদ), মাইকেল ফ্যারাডে (রসায়নবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী), চার্লস ডারউইন (প্রফেসর), টমাস আলভা এডিসন (আবিষ্কারক), তাদো আন্ডো (স্থপতি), জর্জ বার্নার্ড শ (নাট্যকার), ফ্রাঙ্ক জাপ্পা (সুরকার, রেকর্ডিং প্রকৌশলী, চলচ্চিত্র পরিচালক) এবং লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি(প্রকৌশলী, গণিতবিদ) অন্যতম ।

উন্মুক্ত শিক্ষা ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তিগত শিক্ষা

২০১২ সালে ইলেকট্রনিক শিক্ষাগত প্রযুক্তি (ই-লার্নিং নামেও পরিচিত) এর আধুনিক ব্যবহারটি প্রথাগত শিক্ষার হার থেকে ১৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । ওপেন এডুকেশন ক্রমবর্ধমান শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে পরিণত হয়েছে । ঐতিহ্যগত শিক্ষা পদ্ধতির তুলনায় তার দক্ষতা এবং ফলাফলই তার মূল কারণ । শিক্ষার খরচ সমগ্র ইতিহাস জুড়ে একটি সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে এবং এটি এখন বেশিরভাগ দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক বিষয় । অনলাইন কোর্স প্রায়ই মুখোমুখি ক্লাসের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। ২০০৯সালে মোট ১৮২ টিরও বেশি কলেজের উপর জরিপ করে দেখা যায় যে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক লোকই বলেছে যে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার খরচ ক্যাম্পাস ভিত্তিক শিক্ষার চেয়ে উচ্চতর ছিল । অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানগুলি বর্তমানে হার্ভার্ড, এমআইটি এবং বার্কলে যেমন ফ্রি বা প্রায় বিনামূল্যে কোর্স অফার করছে EDX গঠন করার জন্য । উন্মুক্ত শিক্ষা প্রদানের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হল স্ট্যানফোর্ড, প্রিন্সটন, ডিউক, জনস হপকিন্স, এডিনবার্গ, ইউ. পেন, ইউ.মিশিগান, ইউ ভার্জিনিয়া, ইউ.ওয়াশিংটন, এবং ক্যালটেক । মুদ্রণযন্ত্র প্রকাশ হবার পর থেকে এই ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । কার্যকারিতার উপর অনুকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক মানুষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে ঐতিহ্যবাহী ক্যাম্পাসকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে নির্বাচন করতে চায়।

উন্মুক্ত শিক্ষার ডিগ্রী প্রদান প্রচলিত মেধা-পদ্ধতির ডিগ্রী প্রদানের মতো সাধারণ নয় এমনকি এটি ক্যাম্পাস ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ও নয় । যদিও কিছু উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে ইউনাইটেড কিংডমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রচলিত ডিগ্রী প্রদান করে আসতেছে । বর্তমানে বেশিরভাগ উন্মুক্ত শিক্ষা উৎসগুলি তাদের নিজস্ব গঠনের সনদপত্র প্রদান করে। উন্মুক্ত শিক্ষার জনপ্রিয়তার কারণে, এই নতুন ধরনের একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলি ঐতিহ্যগত ডিগ্রির মতো আরও সম্মান এবং সমান "একাডেমিক মূল্য" অর্জন করছে। অনেক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের জন্য মান সংবলিত পরীক্ষা এবং ঐতিহ্যগত ডিগ্রী প্রদান করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে । বাংলাদেশে উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় নামে্ও একটি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে যে কোন বয়সের মানুষ এ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া-লেখা করতে পারে এবং মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক, স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রী লাভ করতে পারে।

উপর্যুক্ত আলোচনা দ্বারা আমরা একটি বিষয় নিশ্চিত হলাম যে, বাংলাদেশের সকল জনগোষ্ঠিকে শিক্ষিত হতে হবে এবং শিক্ষার আলো প্রত্যেক ঘরে জ্বালাতে হবে। শিক্ষা মানুষকে উন্নত করে এবং শিক্ষা আমাদেরকে সভ্য করে তোলে। শিক্ষার স্তরভেদে শিক্ষার প্রক্রিয়া ও ধরন যাই হোক না কেন আমাদেরকে শিক্ষার স্বাদ গ্রহন করতে হবে এবং শিক্ষার ফল আস্বাদন করে আমাদের জীবন-যাপন প্রনালী উন্নত করতে হবে। বাংলাদেশ সরকার আনুষ্ঠানিক, অনানুষ্ঠানিক ও উপানুষ্ঠানিক শিক্ষার বিভিন্ন স্তর বিন্যাস করে জাতিকে উন্নতির স্বর্ণশিখরে আরোহন করাতে নানাবিধ পদক্ষেপ গ্রহন করে চলেছে। প্রাক, প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাস্তর অতিক্রম করার পর শিক্ষার্থিরা যখন উচ্চতর শিক্ষাস্তরে পদার্পন করে, তখন পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধিসহ কারিগরি বা বৃত্তিমূলোক শিক্ষা গ্রহরে তারা আরো বহুধাপ এগিয়ে যায়। পরবর্তিতে কর্ম জীবনে ‍নিযুক্ত হয়ে তারা দেশ ও জাতির অর্থনৈতিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে থাকে। শিক্ষার স্তরভিত্তিক সকল ‍প্রক্রিয়া ও ধরন আমাদের দেশে আরো উন্নত ও সমৃদ্ধশালী হোক আমরা সরকারী ব্যবস্থাপনার সকল বিভাগের কাছে এ প্রত্যাশা করি।

লেখক: প্রিন্সিপাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা


(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/অক্টোবর ১৯.২০১৯)