ভোলা প্রতিনিধি: ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক যুবকের হ্যাক করা ফেসবুক আইডি থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট’ দেয়া কেন্দ্র পুলিশ-জনতা সংঘর্ষের ঘটনায় রবিবার দিনগত রাতে বোরহানউদ্দিন থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবিদ হোসেন বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে।

ভোলার সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) শেখ সাব্বির হোসেন জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় ৩০ পুলিশ আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১০ জন চিকিৎসাধীন। পুলিশ এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে আটক করেছে। সমাবেশস্থলসহ গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

বোরহানউদ্দিন থানার ওসি এনামুল হক বলেন, পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় এ মামলা করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।

এদিকে সোমবার সকালে ৬ দফা দাবি আদায়ে সমাবেশের ডাক দেয় ‘সর্বদলীয় ইসলামী ঐক্য পরিষদ’। তবে প্রশাসন অনুমতি দেয়নি বলে সে সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তাজউদ্দিন।

পুলিশের সঙ্গে রবিবার ‘তৌহিদি জনতা’র সংঘর্ষে ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলা সদর রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক যুবকের হ্যাক করা ফেসবুক আইডি থেকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে ‘ধর্ম নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট’ দেয়া কেন্দ্র করে দিনভর এ সংঘর্ষ হয়। এতে অন্তত দুজন ছাত্রসহ চারজন নিহত এবং ৩০ পুলিশ সদস্যসহ শতাধিক লোক আহত হয়েছেন। সকাল ১০টায় বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ঈদগাহ মাঠে সমাবেশ শেষে শুরু হওয়া এ সংঘর্ষে গুলি, টিয়ারশেল ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়।

সংঘর্ষে আহত ৪৫ জনকে ভোলা সদর ও ৩০ জনকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং বাকিদের বোরহানউদ্দিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। আহতদের বেশিরভাগই গুলিবিদ্ধ।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চার প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাবের টহল জোরদার করার পর বিকালেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এ ঘটনায় তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

নিহতরা হলেন- বোরহানউদ্দিন উপজেলার মহিউদ্দিন পাটওয়ারীর মাদ্রাসাছাত্র মাহবুব (১৪), উপজেলার কাচিয়া ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেনের কলেজপড়ুয়া ছেলে শাহিন (২৩), বোরহানউদ্দিন পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মাহফুজ (৪৫) এবং মনপুরা হাজিরহাট এলাকার বাসিন্দা মিজান (৪০)।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ২১,২০১৯)