দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: জমকালো আয়োজনে আজ (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রথমবারের মতো ঢাকায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে টিএম ফিল্মস নিবেদিত ‘ভারত-বাংলাদেশ ফিল্ম অ্যাওয়ার্ডস (বিবিএফএ)’-এর প্রথম আসর।

এতে আজীবন সম্মাননায় সম্মানিত করা হয়েছে গুণী অভিনেত্রী আনোয়ারা বেগমকে। পাশাপাশি একই পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ওপার বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা রঞ্জিত মল্লিক। টিএম ফিল্মস নিবেদিত এ পুরস্কার উৎসবের উদ্যোক্তা ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়া ও বসুন্ধরা গ্রুপ।

সন্ধ্যায় শুরু হওয়া অনুষ্ঠানে পুরস্কার পর্ব শুরু হয় রাত সাড়ে নয়টায়। এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত আজীবন সম্মাননা গ্রহণ করেছেন এই দুই কিংবদন্তি শিল্পী।

পুরস্কারপ্রাপ্তির পর আনোয়ারা বেগম বলেন, ‘এত বড় একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ। দুই বাংলা মিলিয়ে এত এত তারকা থাকতে আমাকে আজীবন সম্মাননা দেওয়া হবে, এটা আমি কখনও ভাবিনি। সৃষ্টিকর্তার কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা।’

রঞ্জিত মল্লিক বলেন, ‘বাইশ কোটি মানুষ বাংলা ভাষায় কথা বলে। তাদেরই এ আয়োজন প্রথমবারের মতো অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ আয়োজন যেন ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে পারে। যৌথভাবে সিনেমা নির্মাণের যে প্রয়াস চলছে, তা যেন আরও বেগবান হয়। আরেকটা কথা না বললেই নয়, আমি পৃথিবীর বহু দেশে ঘুরেছি, কিন্তু বাংলাদেশে আসলে যে আতিথেয়তা পাই, তা পৃথিবীর আর কোথাও পাই না।’

এদিকে সন্ধ্যা হতেই মিলনায়তনে একে একে হাজির হতে থাকেন সব জনপ্রিয় অভিনেতা-অভিনেত্রীরা। আসেন পশ্চিমবঙ্গের তারকা প্রসেনজিৎ, ঋতুপর্ণা, জিৎ,আবির চ্যাটার্জি, তনুশ্রী দত্ত, পরমব্রত, পাওলি দাম, বাংলাদেশ থেকে মৌসুমী, ওমর সানী, জয়া আহসান, বিদ্যা সিনহা মিম, নুসরাত ফারিয়া, পরীমনি, ইমন, নিরব, তাসকিন রহমান, সিয়াম আহমেদ, পূজা চেরীসহ অনেকে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান টিএম ফিল্মসের চেয়ারপার্সন ফারজানা মুন্নী বলেন, ‘দুই বাংলার সেরা শিল্পীদের সম্মান জানাতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। দুই বাংলায় চলচ্চিত্রে এখন সঙ্কট চলছে, ঠিক এই সময়ে চলচ্চিত্রের পথে পা বাড়িয়েছে আমাদের টিএম ফিল্মস। নতুন সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলার প্রয়াসে আমরা প্রযোজনার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। স্বপ্ন দেখছি দেশের চলচ্চিত্রকে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পৌঁছে দেওয়ার।’

বাংলাদেশের তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা একই ভাষায় কথা বলি। আমরা একই পাখির কলতান শুনি। কিন্তু রাজনৈতিক সীমারেখা আমাদেরকে বিভক্ত করেছে।আমাদের ভাষা, সংস্কৃতি জলবায়ু ও কিন্তু একই। কিন্তু আমাদের মধ্যে এ ধরনের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান নিশ্চয় আমাদের সাংস্কৃতিক সম্পর্ক দৃঢ় করবে। এ কারণেই আজকের আয়োজন। এধরনের আয়োজন সংস্কৃতি চর্চা চলচ্চিত্র নির্মাণের চর্চার দিক থেকে আমাদের সংস্কৃতিকে আরও বেগবান করবে। চলচ্চিত্র জীবনের কথা বলে, মানুষকে কাঁদায়, হাসায়, চলচ্চিত্র চিন্তার দুয়ার খুলে দেয়। আমার বিশ্বাস এ আয়োজনের মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পর্ক আরেক নতুন এক মাত্রা উন্মোচন করবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্যে রাখেন তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বাংলাদেশ প্রতিদিনের সম্পাদক ও নিউজ ২৪-এর সিইও নঈম নিজাম, এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান ড.মাহফুজুর রহমান, ফিল্ম ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার সভাপতি ফিরদাউসুল হাসান ও বিবিএফএ-এর সমন্বয়ক তপন রায়।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দুই বাংলার জুরি বোর্ডের সদস্য বাংলাদেশের আলমগীর, কবরী, ইমদাদুল হক মিলন, খোরশেদ আলম খসরু ও হাসিবুর রেজা কল্লোল। অন্যদিকে, ভারত থেকে আছেন গৌতম ঘোষ, ব্রাত্য বসু, গৌতম ভট্টাচার্য, অঞ্জন বোস ও তনুশ্রী চক্রবর্তী। আয়োজনের সার্বিক সহযোগিতায় আছে ভারতের জি-বাংলা ও বাংলাদেশের ইস্টওয়েস্ট মিডিয়া গ্রুপ। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে আছে এটিএন বাংলা ও গানবাংলা টেলিভিশন। ইভেন্ট পার্টনার হিসেবে আছে ওয়ান মোর জিরো। অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেছেন কলকাতার মীর আফসার আলি, শাহরিয়ার নাজিম জয়, শান্তা জাহান ও গার্গি রায় চৌধুরী।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/অক্টোবর ২২,২০১৯)