বগুড়া প্রতিনিধি: বগুড়ার গাবতলীতে দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে নববধূকে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই রিপন মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।

ঘটনাটি তদন্ত করতে নন্দীগ্রাম সার্কেলের এএসপিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এর আগে তাকে পুলিশ লাইন্সে প্রত্যাহার করা হয়। মঙ্গলবার বিকালে পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, বগুড়ার গাবতলী উপজেলার খুপি মধ্যপাড়া গ্রামের আবদুল খালেকের ছেলে এমরান হোসেন সুইট একই এলাকার জাহিদুল ইসলামের মেয়ে মনিরা আকতার কেমিকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। এ নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হলে কেমির মা মেরিনা গত ১৪ সেপ্টেম্বর সুইটের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা রিপন মিয়া পরদিন সুইটকে গ্রেফতার করেন।

দুই পরিবার মীমাংসা করে আদালতে কাগজপত্র জমা দিলে গত ৩১ অক্টোবর সুইটের জামিন হয়। ১ নভেম্বর পারিবারিকভাবে বিয়ে হলে সুইট তার নববধূ কেমিকে গাবতলীর খুপি মধ্যপাড়ার বাড়িতে নিয়ে যান।

সুইট অভিযোগ করেন, মামলা মীমাংসা ও কেমিকে বিয়ে করায় তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই রিপন মিয়া তাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। তিনি ১০ হাজার টাকা ঘুষ দাবি করেন। অন্যথায় তাকে হত্যা বা মাদক মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। ৩ নভেম্বর রাত ১০টার দিকে সাদা পোশাকে এসআই রিপন মিয়া ও ৪-৫ জন দরজা ভেঙে বাড়িতে ঢোকেন।

সুইট টের পেয়ে পালিয়ে গেলে পুলিশ কর্মকর্তা তার লোকজন নিয়ে ঘরে ঢোকে। তারা নববধূ কেমির কাছে তাকে না জানিয়ে কেন মামলা মীমাংসা ও বিয়ে করা হল সে ব্যাপারে কৈফিয়ত চান। ভীত-সন্ত্রস্ত কেমি উত্তর দিতে দেরি করায় এসআই রিপন লাঠি ও টর্চলাইট দিয়ে কেমির বাম হাতে আঘাত করেন। এ ছাড়া তার মাথা ও গালে কিল-ঘুষি এবং চড়-থাপ্পড় দেয়া হয়।

কেমির চিৎকারে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে পুলিশ কর্মকর্তা ও তার লোকজনকে ঘেরাও করেন। অবস্থা বেগতিক দেখে নিজেদের পুলিশ পরিচয় দিয়ে এসআই রিপন মিয়া ও তার সঙ্গে আসা পুলিশ এবং সোর্স নিয়ে সটকে পড়েন। রাত ১২টার দিকে আহত কেমিকে বগুড়া মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এদিকে সোমবার সকালে ঘটনাটি জানাজানি হলে সাংবাদিকরা হাসপাতালে গিয়ে কেমি ও তার স্বামী সুইটের সঙ্গে কথা বলে এর সত্যতা পান। দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তার এহেন কর্মকাণ্ডে পুরো জেলায় মানুষের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ০৬,২০১৯)