দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: নতুন সড়ক আইন কার্যকর করতে সচেতনতা বাড়াতে ডিসেম্বর থেকে শিক্ষার্থীদের নিয়ে মাঠে নামবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগ। পাশাপাশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও সচেতনা কার্যক্রম পরিচালিত হবে। ২২ অক্টোবর জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবসে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে এ সংক্রান্ত প্রস্তাব করা হয়েছে পুলিশ সদর দফতরের পক্ষ থেকে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র মতে, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উদ্যোগে নেওয়া এই কর্মসূচিতে ট্রাফিক বিভাগের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে সচেতনতামূলক এই কর্মসূচি চালু করার প্রস্তাব করা হয়েছে। কর্মসূচিতে যুক্ত করা হবে রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও বিএনসিসিসহ (বাংলাদেশ ন্যাশনাল ক্যাডেট কোর) বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে একটি সূত্র জানায়, বুধবার (১৩ নভেম্বর) সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সভাকক্ষে আয়োজিত ‘শিক্ষার্থীদের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে করণীয়’ শীর্ষক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে জানানো হয়, ‘নিরাপদ সড়ক পক্ষ’ আয়োজন করা হবে শিগগিরই। এতে রাজধানীর স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের সচেতন করার প্রস্তাব করা হয় ট্রাফিক বিভাগের পক্ষ থেকে।

জানতে চাইলে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার মফিজ উদ্দিন বলেন, ‘নতুন আইন কার্যকর করতে আমরা ১৫ দিনের জন্য ‘নিরাপদ সড়ক পক্ষ’ পালন করবো। শিগগিরই সেটা শুরু হবে।’ শিক্ষার্থীদের সচেতন করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সড়ককে নিরাপদ করতে আমরা মানুষকে সব সময় সচেতন করে যাচ্ছি। নতুন আইন হয়েছে, এখন আমরা আরও বেশি সচেতন করবো। এই সময় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা চলছে। শিক্ষার্থীদের সড়কে কতটা নামানো যাবে সেটি একটি বিষয়।’

জানতে চাইলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের উপসচিব ড. মো. মোকছেদ আলী বলেন, ‘জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের তালিকা চাওয়া হয়েছে। এই উদ্যোগে শিক্ষা মন্ত্রণালয় সার্বিক সহযোগিতা করবে। শিক্ষার্থীদের সচেতন করার বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দেবে মন্ত্রণালয়।’ বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের চলমান পরীক্ষা শেষ হতে সময় লাগবে। পরীক্ষা শেষ হলে তাদের যুক্ত করা হবে। আগামী ১৫ ডিসেম্বর থেকে এই কর্মসূচি পরিচালনার বিষয়টি উঠে আসে।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে বেপরোয়া বাসের চাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে দেশব্যাপী জোরালো হয় নিরাপদ সড়ক আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের ওই আন্দোলনে সরকার দ্রুত নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়। এর অংশ হিসেবে মহানগর পুলিশের ট্রফিক বিভাগ রোভার স্কাউট, গার্লস গাইড ও বিএনসিসিসহ বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সড়ক আইন মানতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেয়। রাজধানীর সড়ক পথে বেশ খানিকটা স্বস্তি ফিরে আসে। সরকার সড়ক নিরাপদ করতে ২০১৮ সালের সড়ক পরিবহন আইন কার্যকর করতে গেজেট প্রকাশ করে। গেজেট অনুযায়ী সড়ক পরিবহন আইনটি কার্যকর হয় ১ নভেম্বর থেকে। তবে আইন প্রয়োগে প্রযুক্তিগত সমস্যার এখনও সমাধান করা যায়নি। তা সমাধানে সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এই পরিস্থিতিতে জনসচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে ট্রাফিক বিভাগ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ১৫,২০১৯)