চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: ট্রেন থামানোর জন্য তুর্ণা-নিশিথার চালক যথেষ্ট জায়গা পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছে পূর্বাঞ্চল রেলের বিভাগীয় পর্যায়ে গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক মো. নাসির উদ্দিন।

তিনি বলেন, ‘আমরা যাকে ফুল ব্রেকিং ডিসট্যান্স বলি, সেটি হলো ৪৪০ গজ, প্রায় আধা মাইল। অর্থাৎ কোনও লকো মাস্টার (চালক) যখন ব্রেক অ্যাপ্লাই করেন, তখন ৪৪০ গজ গিয়ে ট্রেনটা থেমে যাবে। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, দুর্ঘটনা কবলিত তুর্ণা-নিশিথা ট্রেনটি বেশি জায়গা নিয়েছিল।’

বৃহস্পতিবার (১৪ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের বিভাগীয় ব্যবস্থাপকের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানান তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার দাখিল করার কথা ছিল। ওই প্রতিবেদন সস্পর্কে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন।

নাসির উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের তদন্তের কাজ ৯৯ শতাংশ শেষ করেছি। সংশ্লিষ্ট ১৭ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর সাক্ষাৎকার নিয়েছি। সব ডকুমেন্টস স্টাডি করেছি। ট্রেনের স্পিড কত ছিল, সিগন্যালিং অবস্থা কেমন ছিল, সব পরীক্ষা করেছি।’ তিনি বলেন,‘দুই প্রান্তের স্টেশন মাস্টারের কিছু গোপন নম্বর থাকে, যেগুলোর মাধ্যমে লাইন ক্লিয়ার দেয়। ওই নম্বরগুলো আমরা যাচাই করেছি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একটা-দুইটা বিষয়ে কিছুটা খটকা লেগেছে। এগুলো আরেকবার দেখা দরকার। ওই একটা-দুইটা বিষয় যদি না দেখে প্রতিবেদন দিই, তাহলে আমাদের ওপর যে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে, সেটি অন্যরকম হয়ে যেতে পারে। আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আরও একদিন সময় চেয়েছি। শুক্রবার কসবায় গিয়ে আমরা দেখবো। এরপর প্রতিবেদন দিয়ে দেবো।’

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, ‘৪৪০ গজের বিষয়টি পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। কারণ, যেসব ওয়াগন দিয়ে আমরা পরীক্ষা করবো, সেগুলো এখনও দুর্ঘটনা কবলিত স্থানে রয়েছে। তাই এটি পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। তবে অন্যান্য আলামতগুলো যেমন ইঞ্জিনটা আমরা নিয়ে এসেছি। তাতে মনে হয়েছে, ব্রেক করার মতো যথেষ্ট জায়গা ছিল।’

দুর্ঘটনায় রেলওয়ের ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘লোকোমোটিভ ক্ষতি হয়েছে ১৭ লাখ টাকার, কোচের ক্ষতি ২০ লাখ ও ট্র্যাকের (রেল লাইন) ক্ষতি হয়েছে ২০ হাজার টাকার।’

কনস্ট্রাকশন কাজের মালামালের কারণে সিগন্যালিংয়ে কোনও সমস্যা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ডবল লাইনের কাজ চলমান রয়েছে। একটা লাইনে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ট্রেন চলাচল করছে। অন্য একটি লাইনে কাজ চলছে। আখাউড়া থেকে লাকসাম পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে সব জায়গায় নির্মাণ কাজের মালামাল আছে। প্রকল্প পরিচালক আমাদের রেলের লোক। ঠিকাদারের লোক ও রেলের লোক মিলে সর্বোচ্চ সিকিউরিটি বজায় রেখে কাজগুলো করছে। কাজের কারণে এ রুটে যাতায়াতে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে। তবে এটি ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেনি।তদন্তে আমরা এমন কোনও বিষয় পাইনি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ১৫,২০১৯)