দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সরকারি হিসেবে এ বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা এক লাখ ছাড়িয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম এই তথ্য জানিয়েছে।

তাদের তথ্য মতে, এ বছর সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন অগাস্ট মাসে, রোগীর সংখ্যা ছিল অর্ধ লক্ষাধিক।

মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে এবার অন্তত ২৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য পেয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। তাদের মধ্যে ১২৯ জনের ডেঙ্গুতে মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত হয়েছে তারা।

চলতি বছরে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা এ যাবত ইতিহাসে সর্বোচ্চ। ২০০০ সাল থেকে বছরওয়ারি আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা পর্যালোচনা করে দেখা যায়, এটা বেশ কয়েক গুণ বেশি।

ঢাকায় ডেঙ্গুর বাহক এডিস এজিপ্টি মশা। মশাবাহিত এই রোগ বাংলাদেশে প্রথম দেখা দেয় ২০০০ সালে, সে সময় এই রোগে মারা যান ৯৩ জন। তিন বছর পর থেকে ডেঙ্গুতে মৃত্যুর হার কমতে থাকে এবং কয়েক বছর এতে মৃত্যু শূন্যের কোটায় নেমে আসে।

তবে গত বছর আবার বড় পরিসরে দেখা দেয় ডেঙ্গু, ১০ হাজার মানুষ আক্রান্ত হওয়ার পাশাপাশি ২৬ জনের মৃত্যু হয় সরকারি হিসাবে।

এ বছর মে মাস থেকেই ঢাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ শুরু হয়, জুন ও জুলাইয়ে ক্রমশ বেড়েছে অগাস্টে তা মারাত্মক রূপ নেয়। তখন সমালোচনার মধ্যে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যাপক তৎপরতা নেয়। দুই বেলা ওষুধ ছিটানোর পাশাপাশি বাড়ি বাড়ি গিয়ে ডেঙ্গু মশার প্রজননস্থল ধ্বংস করা হয়।

এখন ডেঙ্গুর ঝুঁকি কমলেও সতর্কতা অবলম্বনের ওপর জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ডা. বোরহান উদ্দিন।

ডেঙ্গু রোগী: ২০১৯ সালের সর্বশেষ তথ্য

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল এর সহকারী পরিচালক ডা. আয়শা আক্তার জানান,

১ জানুয়ারি থেকে ২৯ নভেম্বর মোট ভর্তি রোগী ১,০০,০২১ জন।
ছাড়প্রাপ্ত রোগী ৯৯,৩০৬ জন।
বর্তমানে সারা দেশে ভর্তি রোগী ৪৫১ জন। এরমধ্যে ঢাকায় ২৫১ জন ও ঢাকার বাইরে ২০০ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগী ৭৩ জন। এর মধ্যে ঢাকায় ৩৭ জন ও বাইরে ৩৬ জন।

রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান- আইইডিসিআরে ডেঙ্গু সন্দেহে ২৬৪ জনের মৃত্যুর তথ্য এসেছে। এরমধ্যে পর্যালোচনা করে ১২৯ জনের ডেঙ্গুজনিত মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে।

সাল, আক্রান্ত ও মৃত্যের সংখ্যা- ২০০০: আক্রান্ত ৫ হাজার ৫৫১ জনের মধ্যে মৃত্যু ৯৩ জন, ২০০১: ২ হাজার ৪৩০ জনের মধ্যে ৪৪ জন, ২০০২: ৬ হাজার ২৩২ জনের মধ্যে ৫৮ জন, ২০০৩: ৪৮৬ জনের মধ্যে ১০ জন, ২০০৪: ৩ হাজার ৪৩৪ জনের মধ্যে ১৩ জন, ২০০৫: ১ হাজার ৪৮ জনের মধ্যে ৪ জন, ২০০৬: ২ হাজার ২০০ জনের মধ্যে ১১ জন, ২০০৭ থেকে ২০১০: শূন্য; ২০১১: ১ হাজার ৩৫৯ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০১২: ৬৭১ জনের মধ্যে ১ জন, ২০১৩: ১ হাজার ৭৪৯ জনের মধ্যে ২ জন, ২০১৪: শূন্য; ২০১৫: ৩ হাজার ১৬২ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০১৬: ৬ হাজার ৬০ জনের মধ্যে ১৪ জন, ২০১৭: ২ হাজার ৭৬৯ জনের মধ্যে ৮ জন এবং ২০১৮: ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জন।

২০১১: ১ হাজার ৩৫৯ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০১২: ৬৭১ জনের মধ্যে ১ জন, ২০১৩: ১ হাজার ৭৪৯ জনের মধ্যে ২ জন, ২০১৪: শূন্য; ২০১৫: ৩ হাজার ১৬২ জনের মধ্যে ৬ জন, ২০১৬: ৬ হাজার ৬০ জনের মধ্যে ১৪ জন, ২০১৭: ২ হাজার ৭৬৯ জনের মধ্যে ৮ জন এবং ২০১৮: ১০ হাজার ১৪৮ জনের মধ্যে ২৬ জন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ৩০,২০১৯)