দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রাজধানীর মিরপুরে দুই নারীকে শ্বাসরোধে হত্যার নেপথ্য কারণ উদঘাটন করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। জানা গেছে, দুই নারীকে হত্যার নেপথ্যে ছিল অনৈতিক কর্মকাণ্ড। এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সন্দেহে রমজান ও ইউসুফ নামে দুই তরুণকে গ্রেপ্তারের পর তারা ডিবি-কে এ তথ্য জানিয়েছে। গতকাল বুধবার (৪ ডিসেম্বর) রাতে রাজধানীর সদরঘাট এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় তাদের।

ডিবি জানিয়েছে, গ্রেপ্তার হওয়া দুই তরুণ পেশায় নির্মাণ শ্রমিক। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করেছে। হত্যাকাণ্ডের শিকার নারী ও তার গৃহকর্মী অনৈতিক কাজে জড়িত ছিল। রমজান ও ইউসুফ রাতে ওই বাসায় গিয়েছিল। সেখানে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের বিষয়ে আর্থিক চুক্তি হয়। পরে টাকা কম দেওয়ায় তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে দুই নারীকে গলাটিপে হত্যার পর পালিয়ে যায় ওই দুই তরুণ।

উল্লেখ্য, গত মঙ্গলবার মিরপুরের ২ নম্বর সেকশনের এ ব্লকের ২ নম্বর রোডের ১১ নম্বর প্লটের আবুল কাশেমের বাসার চারতলার একটি ফ্ল্যাট থেকে রহিমা ওরফে সাহেদা বেগম (৬০) ও সুমির (২০) লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনার পরপরই পুলিশ সাহেদা বেগমের পালিত পুত্র সোহেলকে আটক করে।

পুলিশ জানায়, নিহত সাহেদা বাসা ভাড়া নিয়ে দুই রুমের একটি বাসা ভাড়া নিয়ে ‘অনৈতিক ব্যবসা’ পরিচালনা করতেন। লাশ উদ্ধারের পর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে গিয়ে পুলিশ নিহতের ফ্ল্যাটের একটি রুমের বিছানাপত্র এলোমেলো দেখতে পায়। কিছু আলামত সংগ্রহ করা হয়। স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়, ওই ফ্ল্যাটে কিছু বহিরাগত লোকজনের আনাগোনা ছিল।

রমজান ও ইউসুফ সাহেদার সঙ্গে যোগাযোগ করে সোমবার রাত নয়টার দিকে ওই বাসায় যায়। রাতে তারা ওই বাসায় অবস্থান করে। চুক্তি অনুযায়ী সকালে ৬ হাজার টাকা পরিশোধ না করে রমজান ও ইউসুফ সাড়ে তিন হাজার টাকা দিতে চায়। এ নিয়ে সাহেদা বেগম ও সুমির সঙ্গে দুই তরুণের তর্কাতর্কি হয়। একপর্যায়ে তারা প্রথমে সুমিকে ও পরে সাহেদাকে গলাটিপে হত্যা করে। হত্যাকাণ্ডের পর রমজান ও ইউসুফ ওই বাসা থেকে ভিকটিমের ব্যবহৃত একটি মোবাইল ফোন ও ১৫ হাজার টাকা নিয়ে যায়। সকালে তারা ওই বাসা থেকে বের হয়ে প্রথমে মগবাজারে এক আত্মীয়ের বাসায় যায়। সেখানে এক রাত থাকার পর বুধবার তারা সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে যায়। সেখান থেকে তাদের ভোলায় গ্রামের বাড়িতে চলে যাওয়ার কথা ছিল। তথ্য-প্রযুক্তির সহায়তায় তাদের অবস্থান শনাক্ত করে ডিবি পশ্চিমের একটি দল তাদের সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ তাদের কাছ থেকে ভিকটিমের মোবাইল ফোন এবং ওই বাসা নেওয়া ১৪ হাজার টাকা উদ্ধার করেছে।

উল্লেখ্য যে, বুধবার সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহত দুই নারীর ময়নাতদন্ত শেষে রহিমা ওরফে সাহেদা বেগমের লাশ নিয়ে গেছে তার স্বজনেরা। নিহত সাহিদা বেগমের মেয়ে রাশিদা জানিয়েছেন, তাদের বাবা কুদ্দুছ মিয়া থাকেন যশোরে। তিনি থাকেন নারায়ণগঞ্জে। তার মা একাই ওই মিরপুরের বাসায় থাকতো। মায়ের পালিত ছেলে সোহেল তাকে দেখাশোনা করতো।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ০৫,২০১৯)