দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানায় পুড়ে যাওয়া কর্মীদের ভয়াবহ অবস্থায় চিকিৎসকরাও আঁতকে উঠেছেন। পুড়ে যাওয়ার ভয়াবহতা বোঝাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের প্রধান সন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন বলেন, দেশে এখন পর্যন্ত যত আগুনে দগ্ধ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে, তার মধ্যে সর্বোচ্চ বা বেশি মাত্রায় পোড়া রোগী এসেছে কেরানীগঞ্জের প্লাস্টিক কারখানার অগ্নিকাণ্ডের পর। ৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় এত ভয়াবহ বার্ন দেখিনি।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) সকালে দগ্ধ রোগীদের অবস্থা বিষয়ে জানাতে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।

সামন্ত লাল বলেন, শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে আগুনে পোড়া এমন রোগীও আছে, যাদের মুখ চেনা যায় না, শ্বাসনালি খুব বাজেভাবে পুড়ে গেছে। ওখানে চিকিৎসাধীন ১০ জন রোগীর সবার ৬০ থেকে ৮০ ভাগ পুড়ে গেছে। আব্দুর রাজ্জাক নামের একজনের দেহের শতভাগ পুড়ে গেছে।

তিনি আরও বলেন, ঢামেকের বার্ন ইউনিটে যারা ভর্তি আছেন তারা সম্পূর্ণ শঙ্কামুক্ত। তাদের শরীরে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ পোড়া আছে। আর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এখন ১০ জন রোগীর কেউই শঙ্কামুক্ত নন। প্রত্যেকেই আছেন লাইফ সাপোর্টে। পুড়ে যাওয়ার অবস্থা এমন যে ৪০ বছরের অভিজ্ঞতায় আমি এত ভয়াবহ বার্ন দেখিনি। গতকাল (বৃহস্পতিবার) মারা যাওয়া এক রোগীর স্ত্রী পর্যন্ত তাকে চিনতে পারেনি। পরে হাতের কাটা দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়।

শতভাগ পুড়ে যাওয়া রোগীর অবস্থা ভালো নয় জানিয়ে তিনি বলেন, একজন আছেন আব্দুর রাজ্জাক, যার শরীরের শতভাগ পুড়ে গেছে। যেকোনও সময় তার অবস্থার অবনতি হতে পারে। বিশ্বের কোথাও শতভাগ বার্ন বাঁচানো সাধারণত সম্ভব হয় না।

বাকি যারা আছে তাদেরও শরীরের ৬০ থেকে ৮০ ভাগ পোড়া রয়েছে। প্রত্যেকেরই মুখমন্ডল ও শ্বাসনালি এমনভাবে পুড়েছে, যে সেটা রিকভার করা অত্যন্ত দুরূহ বিষয়। আমরা রোগীর স্বজনদের সবকিছুর আপডেট দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে চিকিৎসা যেন সঠিকভাবে হয় এবং ব্যয়ভার যেন সরকার বহন করে, সেভাবেই সব চলছে বলে জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ডিসেম্বর ১৩,২০১৯)