দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বাংলা চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেতা নায়করাজ রাজ্জাকের ৭৯তম জন্মদিন আজ। ১৯৪২ সালের এই দিনে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায় একটি সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি।

কলকাতার থিয়েটারের মাধ্যমে রাজ্জাক তার অভিনয় জীবন শুরু করেন। চলচ্চিত্রের সোনালী যুগ রাঙিয়েছেন তিনি। বাংলা চলচ্চিত্র বিষয়ক পত্রিকা চিত্রালীর সম্পাদক ‘আহমদ জামান চৌধুরী’ তাকে নায়করাজ উপাধি দিয়েছিলেন। তার পুরো নাম আব্দুর রাজ্জাক।

কলকাতার খানপুর হাইস্কুলে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় সরস্বতী পূজা চলাকালীন মঞ্চ নাটকে অভিনয়ের জন্য তার গেম টিচার রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী তাকে বেছে নেন কেন্দ্রীয় চরিত্রে। নাটক ‘বিদ্রোহী’তে গ্রামীণ কিশোর চরিত্রে অভিনয়ের মধ্য দিয়েই নায়করাজের অভিনয় জীবন শুরু।

কলেজ জীবনে ‘রতন লাল বাঙালি’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে বড় পর্দায় অভিষেক ঘটে রাজ্জাকের। ১৯৬৪ সালে হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গার সময় পরিবারের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন তিনি। এরপর ‘১৩ নম্বর ফেকু ওস্তাগার লেন’ দিয়ে বাংলাদেশী চলচ্চিত্রে অভিষেক ঘটে তার।

নায়ক হিসেবে তার আত্মপ্রকাশ হয় জহির রায়হানের ‘বেহুলা’ চলচ্চিত্রে। এতে তার নায়িকা ছিলেন সুচন্দা। তারপর থেকে একাধারে অভিনয়, প্রযোজনা ও পরিচালনার মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গণ দাপিয়ে বেড়িয়েছেন এই কিংবদন্তি।

সেরা অভিনেতা হিসেবে পাঁচবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছেন। শিল্প-সংস্কৃতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখার স্বীকৃতি হিসেবে নায়করাজ ২০১৫ সালে স্বাধীনতা পদক পুরস্কারে ভূষিত হন। ২০১৪ সালে ‘কার্তুজ’ চলচ্চিত্রে রাজ্জাককে শেষবার দেখা যায়।

তিনি ১৯৬২ সালে খায়রুন নেসার সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির ঘরে জন্ম নেন রেজাউল করিম বাপ্পারাজ, খালিদ হোসেইন সম্রাট, নাসরিন পাশা শম্পা, রওশন হোসেন বাপ্পি, আফরিন আলম ময়না।

২০১৭ সালের ২১ আগস্ট সবাইকে কাঁদিয়ে মহানায়ক পৃথিবী থেকে বিদায় নেন। চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের মতে, রাজ্জাকের মৃত্যুতে বাংলা চলচ্চিত্রের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটে।

তার অভিনীত জননন্দিত ছবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘নীল আকাশের নিচে, ময়নামতি, মধু মিলন, পীচ ঢালা পথ, যে আগুনে পুড়ি, জীবন থেকে নেয়া, কী যে করি, অবুঝ মন, রংবাজ, বেঈমান, আলোর মিছিল, অশিক্ষিত, অনন্ত প্রেম, বাদী থেকে বেগম ইত্যাদি।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ২৩,২০২০)