দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সম্প্রতি দেশের বাজারে সব ধরনের চালের দাম বেড়েছে। সরকার অবশ্য বলছে, দাম বাড়েনি। যদি বেড়ে থাকে তা বেড়েছে খুচরা বাজারে। এ বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে। আর দাম বাড়লে তা বেড়েছে চিকন চালের। এতে সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে না। এজন্য সরকার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন নয়।

রাজধানীর একাধিক বাজার ঘুরে দেখা গেছে, গত এক মাসে চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৭ টাকার বেশি। কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, মিল মালিকরা চালের দাম বাড়িয়েছে। এ কারণেই পাইকারি ব্যবসায়ীদের বেশি দামে কিনতে হচ্ছে। তারই প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে।

বাজার বিশ্লেষণে করে দেখা গেছে, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে চিকন চাল বিশেষ করে মিনিকেটের কেজি ছিল ৪৫ টাকা। বর্তমানে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫২-৫৩ টাকা কেজিতে। এছাড়া সাধারণ মানের মিনিকেট ও নাজির শাইল চালের কেজি ছিল ৪৫ টাকা। বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকায়।

টেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসের ব্যবধানে চালের দাম বেড়েছে পাঁচ শতাংশ। ফলে বর্তমানে এক কেজি চিকন চালের দাম দাঁড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকা। অপরদিকে মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৩৩-৩৫ টাকা কেজিতে।

টিসিবি সূত্রে জানা গেছে, গত এক মাসে সাধারণ মানের মিনিকেট ও নাজিরশাইল চালের মূল্য বেড়েছে ১১.৫৮ শতাংশ। আর চিকন চালের দাম বেড়েছে প্রায় ৭ শতাংশ।

পাইকারি ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগামী ২-৩ মাসের মধ্যে চালের দাম কমবে। বর্তমানে মিনিকেট চালের ৫০ কেজির বস্তার দাম দুই হাজার ৩৫০ টাকা, যা একমাস আগেও বিক্রি হয়েছে দুই হাজার ১৫০ টাকায়। পাইকারি বাজারে মিনিকেট চাল ৪৮-৪৯ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এই চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৩-৫৪ টাকায়।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেন, ‘চালের দাম আসলে বাড়েনি। যদি বেড়েও থাকে চিকন চালের দাম কেজিতে ২-১ টাকা বেড়েছে। এতে নিম্নআয়ের মানুষের তো কোনও সমস্যা হচ্ছে না। তারা তো চিকন চাল খায় না, মোটা চাল খায়। মোটা চালের দাম তো বাড়েনি।’

অপর এক প্রশ্নের জবাবে খাদ্যমন্ত্রী জানান, বাজারে মনিটরিং চলছে। খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।

চালের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জয়পুরহাটের চাল ব্যবসায়ী মোসলেম উদ্দিন বলেন, ‘চিকন চালের দাম বেড়েছে। কারণ আমাদের বেশি দামে ধান কিনতে হচ্ছে। সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান কিনছি বলে এতে কৃষক লাভবান হচ্ছেন।’

রাজধানীর বাবুবাজার-বাদামতলী চাল আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিজামউদ্দিন জানিয়েছেন, পাইকারি ও খুচরা বাজারে চিকন চালের দাম সামান্য বেড়েছে। মিলাররা কিছুটা বেশি দাম দিয়ে ধান কিনছে বলে বেড়েছে চিকন চালের দাম। তবে মোটা চালের দাম বাড়েনি। চিকন চাল ধনী মানুষরা খায়। এতে সমস্যার কিছু নাই।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানিয়েছেন, নিত্যপণ্যের বাজার মনিটরিংয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কাজ করছেন। কোথাও অনিয়ম ধরা পড়লে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অযৌক্তিক মুনাফা আদায়ের সুযোগ নেই।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মনিটরিং টিম ছাড়াও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন এবং টিসিবি নিয়মিত বাজার মনিটরিং করছে। এরা শুধু চাল নয়, সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজারেই খোঁজখবর নিচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ২৮,২০২০)