দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: যুবলীগের কথিত নেতা ঠিকাদার এসএম গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জিকে শামীম ও তার সাত দেহরক্ষীর বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলায় চার্জগঠন করে আগামী ২৬ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ঠিক করেছে আদালত। এর মধ্য দিয়ে মামলাটির বিচারকাজ শুরু হলো।

মঙ্গলবার ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রবিউল আলম এ আদেশ দিয়েছেন।

মামলাটিতে অপর সাত আসামি হলেন- মো. দেলোয়ার হোসেন (৩৯), মো. মুরাদ হোসেন (৫২), মো. জাহিদুল ইসালাম (৪১), মো. শহিদুল ইসলাম (৩৬), মো. কামাল হোসেন (৪৯), মো. সামসাদ হোসেন (৩৫) ও মো. আমিনুল ইসলাম (৩৪)।

মামলায় আসামিদের পক্ষে অ্যাডভোকেট ফারুক আহমেদ ও শওকত ওসমান অব্যাহতির আবেদন করলে আদালত তা নাকচ করে। একই সঙ্গে আসামিদের জামিনের আবেদন করলে আদালত তাও নাকচ করে।

ওই আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মোহাম্মাদ সালাহউদ্দিন হাওলাদার বলেন, আসামিদের মধ্যে আমিনুলের বিরুদ্ধে অবৈধ অস্ত্র রাখার অভিযোগে অস্ত্র আইনের ১৯ (ক) ধারায় এবং শামীমসহ অপর সাত জনের বিরুদ্ধে বৈধ অস্ত্র অবৈধ উপায়ে ব্যবহার এবং অস্ত্র ব্যবহারের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ এবং অস্ত্র আইনের বিধি ভঙ্গের অভিযোগে অস্ত্র আইনের ১৯(ঙ)/২১/২৩ ধারায় চার্জগঠন করা হয়েছে।

মামলার শুনানিকালে শামীমসহ আট আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির পর তাদের আবার কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।

এর আগে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা র‌্যাব-১ এর পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) শেখর চন্দ্র মল্লিক গত বছর ২৭ অক্টোবর আদালতে আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন।

মামলার চার্জশিটে বলা হয়, আসামি আমিনুল ইসলাম জামালপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে লাইসেন্স পেয়েছেন বলে ডকুমেন্ট দেখালেও তা যাচাইয়ে তার সঠিকতা খুঁজে পাওয়া যায়নি। তাই তার অস্ত্রটি অবৈধ। তিনি ওই অবৈধ অস্ত্রের নকল কাগজপত্র নিয়ে ২০১৭ সালে প্রথমে এস.এম বিল্ডার্স কোম্পানিতে যোগদান করেন। পরে ২০১৯ সালের মাঝামাঝি আসামি জিকে শামীমের দেহরক্ষী হিসেবে যোগদান করে কাজ করে আসছিলেন। তিনি মূলত অবৈধ অস্ত্রটি ৭০ হাজার টাকায় কিনে জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে কাগজপত্র তৈরি করেন। তাই তার বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ক)/২১/২৩ ধারার অভিযোগসহ প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। দণ্ডবিধির ৪২০/৪৬৮ ধারার তার বিরুদ্ধে পৃথক একটি চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য আসামিরা নিরাপত্তার অজুহাতে অস্ত্রের লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও তারা শর্ত ভঙ্গ করে অস্ত্র প্রকাশ্যে বহন, প্রদর্শন ও ব্যবহার করে লোকজনের মধ্যে ভয়ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজি, মাদক ও জুয়ার ব্যবসা করে স্বনামে-বেনামে বিপুল পরিমাণ অর্থ উপার্জন করেছেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনের ১৯(ঙ)/২১/২৩ ধারার অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে।

গত বছর ২০ সেপ্টেম্বর গুলশানের নিকেতনে জিকে শামীমের নিজ কার্যালয় একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতে একটি বিশেষ অভিযানে আসামিদের গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের সময় আসামি শামীমের ৩২ বোরের কাঠের বাটযুক্ত ৩৭ রাউন্ড গুলি ও তিনটি গুলির খোসা পাওয়া যায় এবং পাঁচ বোতল বিদেশি মাদ পাওয়া যায়। অপর আসামিদের প্রত্যেকের কাছ থেকে ১২ বোরের শর্টগান পাওয়া যায়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ২৮,২০২০)