দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিশ্বের সর্ববৃহৎ অর্থনীতির ও জনসংখ্যার দেশ চীন। দেশটির প্রতিটি শহর-নগর বিশ্বের ব্যবসা-বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। চীনের দেড়শ কোটি জনগণ ছাড়াও বিশ্বের লাখ লাখ লোক বিভিন্ন কারণে চীনে যাতায়াত করেন। একারণে প্রচণ্ড ব্যস্ত থাকে চীনের প্রতিটি শহর। তবে সম্প্রতি করোনাভাইরাসের হানায় সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে দেশটির চিরাচরিত দৃশ্য।

যেসব শহর লাখ লাখ লোকে মুখর থাকে সেগুলো এখন ভুতুড়ে নগরীতে পরিণত হয়েছে। চারদিকে ব্যস্ততার বদলে শুনশান নীরবতা। লোকশূন্য হয়ে পড়েছে রাস্তা-ঘাট। খবর রয়টার্সের।

রবিবার পর্যন্ত চীনে করোনাভাইরাসে নিহত হয়েছেন ৮১২ জন। আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭ হাজার ছাড়িয়েছে। এছাড়া আরও ২৫ হাজারের বেশি মানুষকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। বিশেষ কোনো প্রয়োজন না হলে ঘর থেকে বের হতে সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।

রাজধানী বেইজিংসহ দেশজুড়ে কেউ ঘরের বাইরে বের হলে মাস্ক ও হার পরিস্কারকসহ যাবতীয় নিরাপত্তা নিতে হচ্ছে।

বেইজিংয়ে তুষারপাতের ঘটনা বিরল। বছরের এই সময়ে তুষারপাত হলে উৎসবে মাতেন চীনারা। সম্প্রতি দ্বিতীয় দিনের মতো বেইজিংয়ে তুষারপাত হয়েছে। কিন্তু অন্যান্যবারের মতো এবার আর উৎসবে মাতেনি চীন। বরং রাস্তাঘাটে দেখা গেছে ভৌতিক নীরবতা। পার্কগুলোতে শুধুমাত্র পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে।

এটা শুধুমাত্র বেইজিংয়ের অবস্থা নয়, বরং চীনের অর্থনৈতিক কেন্দ্র শাংহাইসহ অন্যান্য শহরেও একই অবস্থা বিরাজ করছে। সম্প্রতি নতুন বছরের ছুটি শেষ হলেও তা বাড়িয়ে দিয়েছে চীন সরকার।

১১ বছর বয়সি মেয়েকে নিয়ে বেইজিংয়ের তুষারপাতের দৃশ্য দেখতে আসা কাইয়ো বলেন, ‘আমরা জানি করোনাভাইরাস তীব্র আকার ধারণ করেছে। কিন্তু এখান থেকে ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল অনেক দূরে, এ কারণে এখানে সব ঠিক থাকা উচিত। এটি পরিবারের সঙ্গে তুষারপাতে কাটানোর জন্য সৃষ্টিকর্তার দেয়া সুযোগ।’

করোনাভাইরাসে হতাহতের দুই-তৃতীয়াংশ চীনের হুবেই প্রদেশের। এই প্রদেশের রাজধানী উহান থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি। হুবেই প্রদেশ থেকে বেইজিংয়ের দূরত্ব এক হাজার কিলোমিটার।

হুবেই প্রদেশে মহামারী আকার নিলেও পুরো চীনই আতঙ্কিত। খুব কম সংখ্যক লোক রয়েছেন যারা সাহস করে বাইরে বের হচ্ছেন। জিংসান পার্কের এক নিরাপত্তা প্রহরী জানান, দুর্লভ তুষারপাত হলেও এখানে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম পর্যটক আসছেন।

বেইজিংয়ের শহরতলির জনপ্রিয় শপিংয়ের এরিয়া ওয়াংফুজিং রাস্তার পাশে নিরপত্তাপ্রহরীরা জানান, ছুটির দিনগুলিতে সাধারণত এখানে এত ভিড় থাকে যে ঘুরে বেড়ানো খুব কঠিন হয়ে পড়ে। কিন্তু এখন এখানে বেশিরভাগ নিরাপত্তারক্ষী এবং পরিচ্ছন্নকর্মীরা রয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ০৯,২০২০)