দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি কার্যকর না হলে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে বিশ্বে সাড়ে ৪ কোটি মানুষ মারা যেতে পারে বলে জানিয়েছেন চীনা প্রশাসনিক অঞ্চলের প্রধান জনস্বাস্থ্য চিকিৎসা কর্মকর্তা অধ্যাপক গ্যাবরিয়েল লুয়াং। সেইসঙ্গে ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হতে পারে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার অন্তত ৬০ শতাংশ।

হংকংয়ের শীর্ষ চিকিৎসা কর্মকর্তা এমন হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘মৃতের হার যদি এক শতাংশেও পৌঁছায়, তবে এই ভাইরাসের সম্ভাব্য বিস্তারে কয়েক হাজার লোক মারা যাওয়ার আভাস দিচ্ছে।

বর্তমানে বিশ্বের জনসংখ্যা ৭০০ কোটি। অধ্যাপক লুয়াংয়ের ভাষ্য সঠিক হলে এবং ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাব অব্যাহত বাড়তে থাকলে ৪০০ কোটির বেশি লোক এতে আক্রান্ত হবেন। যদিও আক্রান্ত লোকের এক শতাংশও মারা যান, তবে সেই সংখ্যাও সাড়ে চার কোটি হবে। ব্রিটেনের বিখ্যাত ট্যাবলয়েড ডেইলি মেইলের খবরে এমন তথ্য জানা গেছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সার্বিকভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকবে এবং দীর্ঘদিন হালকা করে দেখা হবে। কারণ এটি এখন পরিষ্কার যে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে সংক্রমণের লক্ষণ সামান্যই ধরা দেয়।

আশার কথা হচ্ছে, করোনাভাইরাসের রোগনির্ণয় পরীক্ষা ও জ্ঞান বিস্তৃত হচ্ছে। লোকজন দ্রুতই রোগটি নির্ণয় করতে পারছেন এবং বিস্তাররোধে নির্জনে চলে যাচ্ছেন। এতে নতুন করে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমছে।

ভাইরাসটিতে এ পর্যন্ত ৪৩ হাজার লোক আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন এক হাজার ১০০ জন। লন্ডন সফরের সময় গার্ডিয়ানকে অধ্যাপক লুয়াং বলেন, মহামারীর হিমশৈলের আকার ও গড়ন প্রতিষ্ঠাই এখন অগ্রাধিকার দেয়া উচিত।

অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মত, আক্রান্ত এক ব্যক্তি গড়ে আড়াইজনের শরীরে এই ভাইরাস ছড়িয়ে দিতে পারে। তাতে সংক্রমণের সংখ্যা ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ হওয়ার কথা। সে ক্ষেত্রে মৃত্যুর সংখ্যা খুবই কম বলেই ধরে নেয়া হচ্ছে।

হালকা লক্ষণ দেখা দেয়া যে এক শতাংশের রোগ এখনও নির্ণয় করা হয়নি, তাদেরও আমলে নিতে হবে বলে জানান অধ্যাপক লুয়াং। তিনি প্রশ্ন রাখেন– বিশ্বের ৬০ থেকে ৮০ শতাংশ লোক কি আক্রান্ত হতে যাচ্ছেন? হয়তো সেটি হবে না। হয়তো স্রোতের মতো ধেয়ে আসবে।

তিনি বলেন, ভাইরাসটি হয়তো তার প্রাণহানির সংখ্যা কমিয়ে দেবে। সে যদি তার গতিপথের সবাইকেই হত্যা করে, তবে সেটি তার জন্য সহায়ক হবে না। কারণ এতে সে নিজেও মারা যাবে।

মহামারীর আকার নির্ধারণের পর এটির নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতি কার্যকর কিনা অথবা সংক্রমণ বন্ধ হচ্ছে কিনা, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে বলে মন্তব্য করেন এ চিকিৎসক।

করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর উহান শহরটি অচল করে দিয়েছে চীন। মূলত ভাইরাসটির বিস্তার রোধে বেপরোয়া চেষ্টা থেকেই এমন উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।

জাপান উপকূলের ডাইমন্ড প্রিন্সেস ক্রুজ শিপটিতে করোনাভাইরাস দেখা দিলে, সেটিও বিচ্ছিন্ন করে রাখা হয়েছে। উহান ও চীনের বিভিন্ন এলাকা থেকে ফিরে যাওয়া নাগরিকদের কোয়ারিন্টিন করে রাখছে বহু দেশ।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ১২,২০২০)