দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আর মাত্র ৫১ উপজেলায় বিদ্যুৎ পৌঁছালে দেশের সব উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে। গ্রিড রয়েছে এমন এলাকায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হবে আগামী জুনের মধ্যে। তবে অফগ্রিড এলাকায় সৌরবিদ্যুৎ সম্প্রসারণে আরও ৬ মাস লাগতে পারে। গ্রিড-অফগ্রিড সব এলাকা মিলিয়ে শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হবে চলতি বছরের ডিসেম্বরে।

শতভাগ বিদ্যুতায়নের এই যাত্রা শুরু হয়েছিল ২০১২ সালে। শুরুতে কিছুটা ঢিমেতালে চললেও উপজেলাভিত্তিক শতভাগ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দেওয়ার পর কাজে গতি আসে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৬ সাল থেকেই ধাপে ধাপে শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসা উপজেলাগুলো উদ্বোধন করতে শুরু করেন। এতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের এই কার্যক্রম আরও গতি পায়।

সারাদেশে মোট ৪৬১টি উপজেলার মধ্যে ইতোমধ্যে ৪১০টি উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় এসেছে। অফগ্রিডসহ সব এলাকায় বিদ্যুৎ দিতে ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। সে হিসেবে মুজিববর্ষের মধ্যেই দেশের সব উপজেলা শতভাগ বিদ্যুতায়নের আওতায় আসবে বলে আশা করছে আরইবি।

বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই বিদ্যুৎ বিভাগের পক্ষ থেকে সবগুলো উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। সেই ঘোষণার প্রেক্ষিতে শতভাগ বিদ্যুতায়নের পরিকল্পনা করে আরইবি। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেয় আরইবি। কিন্তু এখন বলা হচ্ছে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে তারা শতভাগ বিদ্যুতায়ন করতে পারবে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডের (আরইবি) সিস্টেম অপারেশন বিভাগের পরিচালক অঞ্জন কান্তি দাশ জানান, যে ৫১টি উপজেলায় এখন শতভাগ বিদ্যুতায়নের কাজ চলছে তারমধ্যে বেশিরভাগ উপজেলারও বিদ্যুতায়নের কাজ ৮০ থেকে ৯০ ভাগ শেষের পথে। চলতি বছরের জুনের মধ্যে এই কাজও শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু তারপরও পুরোপুরি শতভাগ এলাকা বিদ্যুতায়ন হয়েছে তা বলা যাবে না। কারণ আরইবির কিছু কিছু এলাকা আছে অফগ্রিড। সেই এলাকাগুলোতে বিদ্যুৎ দিতে আলাদা ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সাধারণত বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহ ‘বিদ্যুৎ সপ্তাহ’ হিসেবে পালন করা হয়। সে সময় প্রধানমন্ত্রী শতভাগ বিদ্যুতায়ন হয়েছে বলে ঘোষণা দেবেন বলে আশা বলে আশা করা হচ্ছে।

আরইবির অন্য একজন ঊর্ধ্বতন কমর্কর্তা জানান, আরইবির অধীনে প্রায় এক হাজার গ্রাম আছে অফগ্রিডে। এই গ্রামগুলোর বেশিরভাগই চর এলাকায় অবস্থিত। বিশেষ করে ভোলা, পটুয়াখালী , কুড়িগ্রামের দিকে এই চরগুলো অবস্থিত। ফলে সেখানে গ্রিডে বিদ্যুৎ দেওয়া যাবে না। তাই সেখানে বিকল্প উপায়ে বিদ্যুৎ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সৌরবিদ্যুতের মাধ্যমে গ্রামগুলোকে আমরা আলোকিত করবো। এই কাজ ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।

২০১৬ সালের আগস্ট মাসে প্রথম ৬টি উপজেলাকে শতভাগ বিদ্যুতায়ন করা হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন। সবমিলিয়ে এ পযন্ত মোট ২৫৭টি উপজেলার শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী।

আরইবি জানায়, ২০১৬ সালের পর ২০১৭ সালের মার্চ মাসে আরও ১০টি, একই বছর সেপ্টেম্বরে ১০ এবং ডিসেম্বরে আরও ১০টি, ২০১৮ সালের ১২ এপ্রিল ১৫, একই বছর ১৪ জুলাই ৭টি, আগস্টে ২১, অক্টোবরে ১টি, নভেম্বরে ১০২টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের ঘোষণা দেওয়া হয়। এরপর ২০১৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে ১২টি, মার্চে ৩টি, সেপ্টেম্বরে ১০টি, নভেম্বরে ২৩ এবং সর্বশেষ বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে ২৩টি উপজেলায় শতভাগ বিদ্যুতায়নের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ফেব্রুয়ারি ১৩,২০২০)