দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বর্তমানে একটি অদৃশ্য ভাইরাসের থাবা মানুষকে নিঃসঙ্গ করে দিয়েছে, অসহায় করে দিয়েছে সমস্ত বুদ্ধিদীপ্ত অহংকার। কোনো বিশেষজ্ঞ এখনো এমন কোন তত্ত্ব উদ্ভাবন করতে পারেনি, যার প্রতিফলনে একটা বাস্তবমুখী কার্যকরী সমাধান পাওয়া যাবে। আতঙ্ক ঘিরে ধরেছে গোটা বিশ্বকে। যার প্রভাব পড়েছে শেয়ারবাজারেও। বাংলাদেশে করোনা ভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত ধরা পড়ার পর ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) পতনের রেকর্ড দেখা গেছে।

এমন অবস্থায় বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায়, বাজারকে পতনের কবল থেকে ফিরিয়ে আনতে গত (১৬ মার্চ) সংশ্লিষ্টদের সাথে বৈঠক করে অর্থমন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলারের ২০০ কোটি টাকার শেয়ার কিনে দেশের সব সরকারি বেসরকারি ব্যাংক বাজারে বিনিয়োগ করবে। কিন্তু এ ঘোষণার পর বাজারে উল্টো চিত্র দেখা যায়। পরে (১৮ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শেয়ার ও ইউনিটের দর পতনের সর্বনিম্ন সীমা বেধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপরেই গত ১৯ মার্চ বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) এ সংশ্লিষ্ট একটি নির্দেশনা জারি করে।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশক্রমে বিএসইসির সার্কুলারে বলা হয়, ১৯ মার্চ থেকে যেকোন কোম্পানির শেয়ার লেনদেন শুরু হবে সর্বশেষ ৫ কার্যদিবসের গড় ক্লোজিং দর দিয়ে। আর ওই দরের নিচে শেয়ারের দাম নামতে পারবে না। তবে দাম বাড়ার সীমার পূর্বের নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর এমন সিদ্ধান্তে বিনিয়োগকারীদের নতুন করে টাকা হারানোর সুযোগ নেই। বরং ওই নির্দেশনা দেওয়ার দিনই (১৯ মার্চ) বিনিয়োগকারীরা ফিরে পেয়েছে ২৩ হাজার ৩৫০ কোটি ৯২ লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা বা ৮.১৩ শতাংশ।

বিনিয়োগকারীরা বলছেন, করোনাভাইরাস নিয়ে বড় ধরনের আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। এ কারণে দেশি-বিদেশি সব ধরনের বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়িয়েছেন। যার ফলে শেয়ারবাজারে বড় দরপতন হচ্ছে। কিন্তু এই নতুন সার্কিট ব্রেকার আরোপের নির্দেশনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। ফলস্বরূপ করোনাভাইরাসে যে অস্বাভাবিক অবস্থা তৈরী হয়েছিল, তা এখন বন্ধ হবার আশা দেখা যাচ্ছে।

সার্কিট ব্রেকারের কারনে বাজার ভালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বিনিয়োগকারীরা ইলিয়াস হোসেন। তিনি বলেন, দর পতনের একটি সর্বনিম্ন সীমা নিয়ে সার্কিট ব্রেকার আরোপের মাধ্যমে খুব ভালো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। একারনে বিএসইসিকে সাধুবাদ জানাই। দীর্ঘদিন পরে বিনিয়োগকারীরা একটু স্বস্তির মুখ দেখেছে। এখন প্যানিক হয়ে শেয়ার বিক্রির মনোভাবটা আগের থেকে কমবে।

করোনার আতঙ্ক কাটলে ঊর্ধ্বমুখী শেয়ারবাজার দেখার আশা প্রতাশা করেবিনিয়োগকারী রাজিকুল হাই বলেন, এখন গোটা বিশ্বেই আতঙ্ক কাজ করছে। বেঁচে থাকা যাবে কিনা সেই আতঙ্ক। এমন পরিস্থিতিতে বাজার অবস্থা একটু খারাপ যাবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু বাজারের গতিশীলতা ফেরাতে সার্কিট ব্রেকার আরোপের নির্দেশনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। এটা একটা বিনিয়োগকারীবান্ধব সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া শেয়ারবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগের ঘোষণাও বিনিয়োগকারীদের মনে আশার জন্ম দিয়েছে। এখন অপেক্ষা করোনার আতঙ্ক কাটলে বাজারে এসব সিদ্ধান্তের কেমন প্রভাব পরে তা দেখার।

বিনিয়োগকারী জাফর ইকবাল বিজনেস আওয়ারকে বলেন, বিএসইসির সার্কিট ব্রেকার নিয়ে নতুন নির্দেশনাটি ভালো হয়েছে। এই নির্দেশনার ফলে বিনিয়োগকারীদের পানির দামে শেয়ার বিক্রি করা বন্ধ হয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৩মার্চ,২০২০)