দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সুপারিশ করেছে সরকার। এখন আইনি প্রক্রিয়াগুলো শেষ হলেই মুক্তি পাবেন খালেদা জিয়া। এরমধ্যে খালেদা জিয়ার মুক্তির সুপারিশের ফাইলটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পৌঁছেছে। তবে আইনি প্রক্রিয়াগুলো আজ শেষ না হলেও আগামীকাল দুপুরের মধ্যে তা শেষ হতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান। তিনি বলেন, আশা করি আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।

মঙ্গলবার (২৪ মার্চ) আইনমন্ত্রী আনিসুল হক তার নিজ বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, বিএনপির কারাবন্দি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রীর নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে খালেদা জিয়া ঢাকায় নিজ বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন। দেশের বাইরে যেতে পারবেন না। সরকার মানবিক কারণে সদয় হয়ে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ ধারা (উপধারা-১) অনুযায়ী তার মুক্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে।

খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপগুলো কী—জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহীদুজ্জামান মঙ্গলবার বিকালে বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, এরই মধ্যে আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তির ফাইল হাতে পেয়েছি। এখন আমরা এ বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপ তৈরি করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করবো। মন্ত্রীর অনুমোদনের পর সেই ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অনুমোদনের পর তাকে মুক্তি দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তা কারা কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। এরপরই তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পাবেন।

মঙ্গলবারের মধ্যেই খালেদা জিয়া মুক্তি পাচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে শহীদুজ্জামান বলেন, মুক্তির ফাইলের পুরো প্রক্রিয়া শেষ করা আজ সম্ভব হবে না। তবে আশা করি আগামীকালের (বুধবার) মধ্যেই সেই প্রক্রিয়া শেষ করা যাবে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, সরকারের নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যবস্থা করার বিষয়টি কারারক্ষীদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে তাকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।

প্রসঙ্গত, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে নাজিম উদ্দিন রোডের পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া। সেখানে তার সঙ্গে রয়েছেন গৃহকর্মী ফাতেমা। এরমধ্যে তাকে (খালেদা জিয়া) দুবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছিল। প্রথমবার কয়েক ঘণ্টা হাসপাতালে কাটানোর পর তাকে ফের কারাগারে নেওয়া হয়। তবে দ্বিতীয় দফায় বেশ কিছু দিন ধরে বিএসএমএমইউ-তে আছেন তিনি।

উল্লেখ্য, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রথমে পাঁচ বছরের এবং পরবর্তী সময়ে তা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন আদালত। অন্যদিকে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় ৭ বছরের কারাদণ্ড হয়েছে তার। এই দুই মামলায় খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মোট ১৭ বছরের কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪মার্চ,২০২০)