দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ‘বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ প্রবল গতি সঞ্চার করে সুন্দরবন উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে। মঙ্গলবার শেষ রাত থেকে বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূল অতিক্রম করতে পারে।’

সোমবার (১৮ মে) খুলনা জেলা সহকারী আবহাওয়াবিদ আমিরুল আলম এ কথাগুলো বলেন।

তিনি জানান, সোমবার দুপুর ১২টার বুলেটিন অনুযায়ী বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ১০২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৮৫ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ২১০ কিলোমিটার যা দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার আকারে ২২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এদিকে, দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর মোংলায় বর্তমানে ১১টি পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। জাহাজগুলোতে স্বাভাবিকভাবে মালামাল ওঠানামা করছে। তবে, সব ধরনের সতর্কতামূলক অবস্থায় রয়েছেন বন্দর কর্তৃপক্ষ।

অপরদিকে, ঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে উপকূলীয় এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে খুলে দেওয়া হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ২ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০ জনকে নেওয়ার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।

খুলনা জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. আজিজুল হক জোয়ার্দার জানান, সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে খুলনার ৩৬১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এরমধ্যে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় উপজেলা দাকোপের ১০৮টি, কয়রার ১১৬টি, পাইকগাছার ৪৫টি ও বটিয়াঘাটার ২৩টিসহ ২৯২টি আশ্রয়কেন্দ্রকে আগেভাগেই প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্ফান ৮০০ কিলোমিটারের মধ্যে এলেই জনসাধারণকে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হবে। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতি এড়াতে কয়রা, পাইকগাছা, দাকোপ ও বটিয়াঘাটাসহ বিভিন্ন উপজেলায় রেডক্রিসেন্ট, সিপিপিসহ দুই হাজার ৪৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক কাজ করছেন।

এছাড়া বেসরকারি সংস্থার (এনজিও) আরো এক হাজার ১০০ জন স্বেচ্ছাসেবক রয়েছেন। পরিস্থিতি দেখে প্রয়োজনে উপকূলবাসীকে দ্রুত আশ্রয়কেন্দ্রে আনতে স্বেচ্ছাসেবক কর্মীরা কাজ করছেন।

মোংলা বন্দরের হারবার মাস্টার কমান্ডার শেখ ফখর উদ্দিন জানান, মোংলা বন্দরে বর্তমানে ১১টি পণ্যবাহী বাণিজ্যিক জাহাজ অবস্থান করছে। বর্তমানে জাহাজগুলোতে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় মালামাল খালাস ও বোঝাই হচ্ছে। তবে, বন্দর কর্তৃপক্ষ সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের সম্ভাব্য সব ধরনের সতর্কতামূলক অবস্থানে রয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘পরবর্তীতে সিগন্যাল ও আবহাওয়ার গতি-প্রকৃতি দেখে জাহাজগুলোকে নিরাপদে সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হবে।’

খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেন বলেন, ‘করোনার মধ্যে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে আশ্রয় কেন্দ্রের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজে লাগানো হচ্ছে। উপজেলা প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৮মে, ২০২০)