দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পান গতকাল দিনের প্রথম ভাগেই সর্বোচ্চ তীব্রতার একটি ‘সুপার সাইক্লোনে’পরিণত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতের আবহাওয়া বিভাগ। বঙ্গোপসাগরে এমন ঝড় এই শতাব্দীতে প্রথম বলে জানিয়েছে দেশটির আবহাওয়া বিভাগ। খবর: বিবিসি বাংলার।

ঘূর্ণিঝড়টি বুধবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা নাগাদ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে অবস্থিত দীঘা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের হাতিয়া দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রতটের কোনো একটি জায়গা দিয়ে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তীব্রতার মাপকাঠিতে ঘূর্ণিঝড়টি ইতোমধ্যে অনেক রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন।

দিল্লিতে ভারতের আবহাওয়া বিভাগের মহাপরিচালক মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র জানান, আম্পান নামে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া ঘূর্ণিঝড় থেকে ২০ মে বুধবার আমরা সবচেয়ে বড় বিপদের আশঙ্কা করছি। সেদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে কোনো একটা সময় এটা উপকূলে আছড়ে পড়বে। মঙ্গলবার থেকেই উপকূলীয় অঞ্চলে প্রবল বৃষ্টি শুরু হবে। বুধবার সকাল থেকে তার সঙ্গে যোগ হবে তীব্র ঝোড়ো বাতাস।

ঘূর্ণিঝড়টি এখন উত্তর-উত্তর পূর্ব অভিমুখে এগোচ্ছে, বুধবার এটি পশ্চিমবঙ্গের দীঘা আর বাংলাদেশের হাতিয়ার মাঝামাঝি কোনো একটা এলাকা দিয়ে সমুদ্রতট অতিক্রম করবে। আছড়ে পড়ার সময় বাতাসের বেগ ঘন্টায় ১৫৫ থেকে ১৬৫ কিলোমিটারের মতো হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ঠিক বছরখানেক আগেই ওড়িশাতে আছড়ে পড়েছিল সাইক্লোন ফণী, তবে এবার আম্পানের আঘাত থেকে ওই রাজ্যটি বেঁচে যেতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। কিন্তু আম্পানের তীব্রতায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ উপকূলের একটা বিস্তীর্ণ অংশ নিয়ে তেমন একটা আশাবাদী হওয়া যাচ্ছে না।

ভারতের বেসরকারি আবহাওয়া পূর্বাভাস সংস্থা স্কাইমেটের প্রধান মহেশ পালাওয়াট জানান, এই শতাব্দীতে প্রাক-মনসুন পর্বে বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া এটাই কিন্তু প্রথম সুপার সাইক্লোন। এর আগে ২০০৭ সালের জুনে আরব সাগরে সুপার সাইক্লোন ‘গোনু’তৈরি হয়েছিল- যেটা পরে ওমানের দিকে সরে যায়।

আম্পান এর মধ্যেই ঘণ্টায় দেড়শ’কিলোমিটারেরও বেশি গতিসম্পন্ন ঝোড়ো বাতাস সঙ্গে 'প্যাক' করে নিয়েছে। মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এটা একটা ঘূর্ণিঝড় থেকে অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে, সেটাও একটা রেকর্ড।

উপকূলের কাছাকাছি এলে এই ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা সামান্য কমবে, তবে তারপরেও এর বিধ্বংসী ক্ষমতাকে খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই বলে জানান পালাওয়াট।

তিনি বলেন, স্থলভূমি থেকে শুকনো বাতাস এসে সিস্টেমটাকে কিছুটা দুর্বল করে দেয়– এই আম্পানের ক্ষেত্রেও সেটাই ঘটবে। কিন্তু তারপরেও এটা একটা প্রচণ্ড ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড়- যার তাণ্ডব আর ক্ষয়ক্ষতি সাধনের ক্ষমতা মারাত্মক। ফলে সাবধানে থাকতে হবে উপকূলবাসীকে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১৯মে, ২০২০)