দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইনের যথাযথ প্রয়োগ চান ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) পরিচালক রকিবুর রহমান। তিনি বলেছেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংক, ডিএসইসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যার যার অবস্থান থেকে কাজ করে যেতে হবে।

আজ শনিবার বিকালে অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শেয়ারবাজারে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলামের নেতৃত্বে একটি শক্তিশালী ও সৎ কমিশন গঠন করা হয়েছে। আমি বিশ্বাস করি এ কমিশনের মাধ্যমে শেয়ারবাজার এগিয়ে যাবে।

রকিবুর রহমান বলেন, শিবলী রুবাইয়াতের নেতৃত্বে কমিশন বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষায় কাজ করার জন্য দৃঢ়। তারা এরইমধ্যে ভালো ভালো কোম্পানি শেয়ারবাজারে আনার জন্য উদ্যোগ নিয়েছেন। এছাড়া বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে একটি কার্যকরি সভা করেছে এটি শেয়ারবাজারের জন্য ইতিবাচক। যেখানে তারল্য সংকট সমাধানে ব্যাংকগুলোকে বিনিয়োগে আনা ও ৩০ সেপ্টেম্বরের আগে লভ্যাংশ প্রদানে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনায় শিথীলতার সম্ভাবনা তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া এই কমিশন বন্ড মার্কেট উন্নয়নে উদ্যোগ নেওয়া শুরু করেছে।

তিনি বলেন, নবনিযুক্ত কমিশন শেয়ারবাজারে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জোড় দেবে। এই কমিশন কোন ধরনের অনিয়মকে ছাড় দেবে না। সে যত বড়ই ক্ষমতা হোক না কেনো। এছাড়া সম্মিলিতভাবে উদ্যোক্তা বা পরিচালকদের ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করা কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে অতি শিগগির অ্যাকশানে যাবে।

লেনদেন নিয়ে হতাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি বলেন, গত ৩ জুন অনেক কম লেনদেন হওয়া নিয়ে লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু এই কম লেনদেন হওয়ার পেছনে আবার লকডাউনের আতঙ্ক ও ফ্লোর প্রাইস কাজ করেছে। যদিও এখন শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ।

ডিএসইর এ পরিচালক বলেন, শেয়ারবাজারে গত কয়েকদিনের লেনদেনের ৮৭ শতাংশ অনলাইনে হয়েছে। ব্রোকারেজ হাউজগুলোতে এক-চতুর্থাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন। চাইলে এ বাজারে ব্রোকারেজ হাউজে না গিয়ে শতভাগ লেনদেন করা সম্ভব। তাই ভবিষ্যতে ব্যাংক খোলা রেখে শেয়ারবাজার বন্ধ রাখা ঠিক হবে না। অতিতে যেটা হয়েছে, সেটা খুবই দুঃখজনক।

তিনি বলেন, পৃথিবীর কোথাও নিয়ন্ত্রক সংস্থা সূচক ও লেনদেন উঠানামায় হস্তক্ষেপ করে না। তবে বিগত কমিশনের সময়ে সেটা করা হয়েছে। কিন্তু বর্তমান কমিশন এটা করবে না।

তিনি আরো বলেন, বীমা কোম্পানিগুলোর কাছে অনেক টাকা আছে। তাদের টাকাগুলো ফিক্সড ডিপোজিটে ও বন্ডে চলে যায়। অথচ সেখানে রিটার্ন অনেক কম। মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর অধিকাংশ টাকা এফডিআর। অথচ পৃথিবীব্যাপি মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে। আমাদের দেশে বিনিয়োগ করার মতো অনেক ভালো ভালো কোম্পানি আছে।

বিএসইসির চেয়ারম্যান এরইমধ্যে শেয়ারবাজারে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন বলে জানান রকিবুর রহমান। উনারা স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার প্লাটফর্ম তৈরী করার জন্য কাজ করছেন।

রকিবুর রহমান বলেন, এখন দীর্ঘমেয়াদে বিনিয়োগের সুযোগ। যারা ডে ট্রেডার, তাদের কোন সুযোগ নেই। যারা ১-২ বছরের জন্য বিনিয়োগ করবেন, তাদের জন্য সুযোগ। তাই সবাইকে বিনিয়োগে আসার এবং সক্রিয় হওয়ার জন্য আহবান করব। আপনারা যাচাই-বাছাই করে বিনিয়োগ করুন।

তিনি আরও বলেন, আমরা জানি ১০ শতাংশ টেক্সের সুযোগ দিয়ে অপ্রদর্শিত টাকাকে বিনিয়োগের সুযোগ দেওয়া হবে। করোনাভাইরাসের কারনে এই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। তবে ওই অর্থ বিনিয়োগের জন্য কোন সেক্টর নির্দিষ্ট করে দেওয়া ঠিক হবে না। সবাইকে সবার সুবিধা মতো সেক্টরে বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে। এতে করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ বাড়বে। যা শেয়ারবাজারকে গতিশীল করবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৬জুন, ২০২০)